গণিতকে যদি বিরক্তিকর এবং প্রায়শই ভীতিকর মনে করে থাকেন তবে আপনি একজন স্বাভাবিক মানুষ। ছাত্র-ছাত্রীদের আমরা দুর্বল বা মেধাবী এই দুই পর্যায়ে রাখলেও তারা হয় কেবল ইচ্ছুক বা অনিচ্ছুক। অনিচ্ছুক বা ঘৃণা করার পিছনে কিছু শিক্ষক বা পাঠ্যক্রম নিজেই দায়ি হয়ে থাকে। অথচ আপনি কেবল সাধারণ কিছু কৌশল অবলম্বন করে ও গণিতকে জানার মাধ্যমে অনুশীলনের দ্বারা এতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন।
সচরাচর আমরা গণিতকে যেভাবে জানতে শিখি তাতে আমাদের এর প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কোনো কারণ থাকে না। কেননা আমাদের গণিত নিয়ে কৌতুহলবশত যতই প্রশ্ন থাকুক না কেন তার উত্তর খোঁজার উৎসাহ আশেপাশের পরিবেশ হতে পাই না। তাই একটি শিক্ষকের উচিত যেকোনো বিষয়ের আলোচনার শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের জানানো গণিতের কাঠামোগত ইতিহাস বা ভবিষ্যতে এর প্রয়োগ।
একজন শিক্ষকের কাজ শিক্ষার্থীর জ্ঞানের তৃষ্ণা অটুট রাখা, জগতকে আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরা, দৈনন্দিন কাজে বা ব্যক্তিগত জীবনে গণিত ও এর নীতিমালার প্রয়োগের অবদান উল্লেখ করা। উন্নত মানের বিদ্যালয় গড়ে তুলতে প্রযুক্তি ব্যবহারের কম-বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে না যদি তাতে একজন নিষ্ঠাবান শিক্ষক উপস্থিত থাকেন।
শিক্ষার্থীরা যেসব উপায় অবলম্বন করে গণিতের ভীতি দূর করতে সফল হবে তা হলো,
- প্রথমেই নিজের উপর আস্থা রাখা।
- গণিত বিষয়ক বিভিন্ন বিনোদোনমূলক এনিমেটেড ভিডিও অধ্যায় অনুযায়ী দেখা।
- সক্রিয়ভাবে গণিত অনুশীলন করা।
- স্মরণ ও পুনরাবৃত্তি করা।
- পছন্দের অথবা উন্নত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ক্লাসের ভিডিও দেখা।
- সমস্যা সনাক্ত করতে একই ধরনের বিভিন্ন প্রশ্ন সমাধান করার চেষ্টা করা।
- গণিতের বিভিন্ন বিভাগকে আলাদাভাবে নেওয়া এবং পরে একটার সাথে আরেকটির যোগাযোগ চিহ্নিত করা।
- নিয়মিত অনুশীলন করা।
- কম সময়ে বা পরীক্ষার সময় অনুযায়ী সমাধান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে নিজে পরীক্ষা নেওয়া।
গণিতের সমীকরণসমূহ নিয়ম অনুযায়ী চলার কারণেই এই বিষয়টি সহজ। কিন্তু সঠিক দিক-নির্দেশনা না পেয়ে তা হয়ে উঠে অসহনীয়। শৈশবে যখন আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ থাকে না তখন গণিতই একমাত্র চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অথচ এই বিষয়টির কাজই আনন্দ দেওয়া ও পাশাপাশি চিন্তার জগত সমৃদ্ধ করে অপ্রয়োজনীয় অধীরতা বা দুর্ভাবনা হতে বিরত রাখা।
গণিতকে সহজভাবে নিতে আকাঙ্ক্ষার সাথে প্রয়োজন নিজের উপর বিশ্বাস রাখা। নিজের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা থেকে একাগ্রতা আসে এবং মনোযোগী হওয়া যায়। তাছাড়া আশেপাশের পরিবেশ একজন শিক্ষার্থীর মানসিকতার উপর প্রভাব ফেলার কারণে সে কীভাবে এগিয়ে যাবে তা নির্ভর করে। ফলে একেক শিক্ষার্থীর পথ ভিন্নতর হয়।
তাদের এগিয়ে যাওয়ার গতির মধ্যে ভিন্নতা প্রকাশ পায়, যা সাধারন এবং এতে শিক্ষার্থীর মেধা যাচাই করা যায় না। অতএব ধৈর্য ও একাগ্রতার দ্বারা-ই সফলতা অর্জন করা সম্ভব।