আসসালামুআলাইকুম সবাইকে! কেমন আছেন সকলে? আশা রাখছি সবাই বেশ ভালো রয়েছে। আবারো চলে আসলাম আরো একটি নতুন আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে। চাকরি জীবন নিয়ে আত্মকাহিনী – চাকরি জীবন নিয়ে একটি ছেলের আত্মকাহিনী থাকছে আজকের আর্টিকেলে। আমরা প্রত্যেকে প্রচলিত ধারায় লেখাপড়া শেষ করে একটা ভালো চাকরির পেছনে দৌড়ে থাকি। আমাদের প্রত্যেকের কেবল একটি বিষয় টার্গেট থেকে, সেটা হচ্ছে লেখাপড়া শেষ করে একটি ভালো চাকরি খুঁজে নেওয়া।
শুধু আমাদের নয়, আমাদের প্রত্যেকের পিতা মাতার এই চিন্তা থাকে। তারা সবসময় এই চিন্তা করে যে তাদের সন্তান যাতে লেখাপড়া শেষ করে মাত্রই একটি ভালো চাকরি খুঁজে নিতে পারে। আমাদের এই চাকরির পেছনে ছোটা বা চাকরি জীবন নিয়ে বানিয়ে ফেলা যাবে একটি সুন্দর গল্প। যাহোক আজকে আমরা কোনো গল্প শুনবো না, আজকে এমন একটা ছেলে চাকরি জীবন এর আত্মকাহিনী শুনবো।
চাকরি জীবন নিয়ে আত্মকাহিনী
ছেলেটির নাম হচ্ছে সুমন। সুমন অত্যন্ত গরীব ঘরের ছেলে। তার বয়স যখন ৪, তখন তার বাবা এক জটিল রোগে মারা যায়। মা ততটা সুস্থ্য ছিলেন না যে কাজ করে সংসার চালাবেন। সুমন এবং তার মা, সুমনের বাবার রিকশা চালানো থেকে আয় হওয়া সামান্য কিছু টাকায় কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে চলতো। কিন্তু এখন তার বাবা মারা যাওয়াতে তারা আরো ভেঙে পড়লো।
তবে আর কি করার। তার মা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে আর সুমন লোকেদের সাহায্য করে কিছু টাকা উপার্জন করতে যেটা দিয়ে তাদের চলতে হতো অনেক কষ্ট। এভাবে তাদের সংসার চলতে লাগলো। সুমন লেখাপড়ায় ছিল ভীষন ভালো। প্রাইমারি স্কুলে সবচেয়ে বেশি নাম্বার পেয়ে প্রত্যেক পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতো সে।
সুমনকে তার মা সবসময় বলতো, কবে যে তুই একটা ভালো পজিশনে যাবি, কবে যে তোর সুখের জীবন শুরু হবে। জানিনা আমি মরার আগে তোর সুখ দেখে মরতে পারবো কিনা। তার মা তাকে এতটাই ভালোবাসতো যে সবসময় চিন্তা করতো তাকে নিয়ে। এভাবে সুমন পার্ট টাইম কাজ করে আর তার মা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে তাদের সংসার আর সুমনের লেখাপড়া চলতে লাগলো। সুমন এখন বড় হয়েছে, তার মায়ের ও অনেক বয়স হয়েছে।
আর তাই এখন একটা চাকরি খোঁজা অনেক দরকার। তবে সুমন অনেক ইন্টারভিউ দিয়েছে, কিন্তু শুধু টেলেন্ট দিয়ে আর আজকাল সব হয়। আর এর মধ্যেই তার মা মারা যান। এতে সুমন অনেকটাই ভেঙে পড়ে। জীবনে নিজের বলতে আর কেউ রইলো না সুমনের। তবে সুমন চিন্তা করে, তার মা তাকে সবসময় বলতো তার সুখ হলেই তার মায়ের শান্তি। তাই সে তার মায়ের আত্মার শান্তির জন্য এখন কাজ খুঁজতে বেশি মনোযোগী।
কারণ একটা ভালো চাকরি যদি পায়, তবে উপর থেকে অন্তত তার মা দেখে অনেকটাই শান্তি পাবে। একটি একটি ভালো কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে গেলো, সকালে গিয়েছিল। বসে থাকতে থাকতে সন্ধ্যে নামলো প্রায়। তাকে ডাকা হলো। অবশেষে তার চাকরি হয়ে গেলো। শুরুতে বেতন ৫০ হাজার। প্রতি বছরে ১০ হাজার করে বৃদ্ধি পাবে।
সুমন আজ খুশি হয়েও তার চোখের এক কোণে জল। একসময় তার কাছে তার মায়ের সুখ মেটানোর সাধ্য ছিলনা। কিন্তু আজ তার কাছে সাধ্য থাকলেও তার মা বেচেঁ নেই। এই ছিল একটি গরীব ছেলের চাকরি জীবন এর আত্মকাহিনী, আশা করছি ভালো লেগে থাকবে। ভালো লাগলে জানাবেন, আল্লাহ হাফেজ।