আসসালামু আলাইকুম। সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ। আশা করি ভাল আছেন। আমরা সামাজিক জীব। সামাজিক জীব হিসেবে আমাদের জীবনে রয়েছে আশা- ভালোবাসা, চাওয়া- পাওয়া, ভালো-মন্দ। এই সবকিছু মিলেই হলো আমাদের জীবন। বাস্তব জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা শুধু অনুকূল দিকগুলোই প্রত্যাশা করি এবং প্রতিকূল দিক গুলোকে আমরা আমাদের জীবনে প্রত্যাশা করি না বা মেনে নিতে পারি না।কিন্তু বাস্তবতায় আমাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য করে।
জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিকূলতাকে মেনে নিয়েই প্রতিকূল পরিবেশ কে অনুকূল তৈরি করে নিতে হয়। আমি কয়েকটি উদাহরণ দিব যেমন আপনি এখন সুস্থ আছেন, তো পৃথিবীর সবকিছুই আপনার কাছে সুখময় মনে হচ্ছে। আবার এমন এক সময় আসবে আপনার সুখময় স্বচ্ছন্দময় শরীর অসুস্থ হয়ে যাবে আর শরীর অসুস্থ হয়ে গেলে আমরা আর ভালো থাকি না এবং অসুস্থতাকে থেকে মেনে নিতে আমাদের কষ্ট হয় কিন্তু বাস্তবতা আমাদের এটাই শিখায় যে সুস্থ থেকে অসুস্থ হতে সময় লাগে না। এই অসুস্থতা হলো আমাদের জীবনের একটা সীমাবদ্ধতা।
আবার অনেক সময় আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবনে যেটা ঘটে থাকে, যেমন একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে কিন্তু তার আন্তরিকতার ঘাটতি হোক বা লেখাপড়ায় অলসতা হোক যে কোন প্রক্রিয়ায় পরবর্তী বছরে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে, প্রথম স্থান ধরে রাখতে পারে নাই। এই প্রথম স্থান ধরে না রাখতে পারাটাই একটা সীমাবদ্ধতা। যেটা আমরা মেনে নিতে চায় না কিন্তু বাস্তবতা আমাদের মেনে নিতে বাধ্য করে। আরো কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি উপলব্ধ হবে কোন একজন শ্রমিক একদিন সে ৫০০ টাকা উপার্জন করল ঠিক তারপরের দিন সে আরো কম টাকা যেমন ১০০ টাকা বা ৭০ /৮০ টাকা উপার্জন করল। এই ৭০ বা ৮০ টাকা উপার্জন করার বিষয়টি তার মেনে নিতে কষ্ট হয় , কিন্তু বাস্তবতা আমাদের মেনে নিতে বাধ্য করে এটাই হল সীমাবদ্ধতা।
আবার মনের বিরুদ্ধে বা নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন এর বিরুদ্ধে কোন কিছু করতে যাওয়াই হলো সীমাবদ্ধতা যা অতিক্রম করার চেষ্টা করা প্রয়োজন । এখন আমরা বেঁচে আছি বা আমাদের প্রিয়জনরা বেঁচে আছে যখন আমাদের প্রিয়জনরা এই পৃথিবী থেকে চলে যায় এটা আমাদের মেনে নিতে কষ্ট হয়। এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত অপ্রত্যাশিত ঘটনা এটাই হলো সীমাবদ্ধতা।
জীবনের শুরু অনুকূলতা দিয়ে এবং জীবন শেষ হয় প্রতিকূলতা দিয়ে। এটাই হলো আমাদের জীবনের বাস্তবতা যেটাকে মেনে নিতে হয়। বাস্তবতাকে মেনে নিতে পারলে জীবন সুন্দর হয় অনুকুল বা প্রতিকুল জীবনব্যবস্থা সবারই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সবকিছু মেনে নিয়ে জীবনকে পরিচালনা করুন তাহলে দেখবেন সীমাবদ্ধতা দূর হয়ে নিজের অনুকূলে জীবন চলে আসবে।
পরম সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে ঠিক হয়ে যাবে আমরা নিরাশ হব না আশায় বুক বেঁধে জীবন অতিবাহিত করার চেষ্টা করব দেখবেন এক সময় নিরাশা দূর হয়ে আশার আলো আমার আপনার সামনে উঁকি দিচ্ছে।। সবার জীবনে সীমাবদ্ধ থাকে, যে শনাক্ত করতে পারে সেই আবদ্ধ জীবন থেকে বা শৃঙ্খলিত জীবন থেকে বের হয়ে মুক্ত জীবনে পদার্পণ করতে পারে।
এজন্য নিজের জীবনের সীমাবদ্ধতা আবিষ্কার করুন দেখবেন মূর্খতা দূর হয়ে নিজের ভেতর জ্ঞানের আলো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। মানুষ হিসেবে বা আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে আমাদের জীবনে সীমাবদ্ধতা আসবে কিন্তু সীমাবদ্ধতা আসলে ভয় পেলে চলবে না সীমাবদ্ধতাকে জয় করে নিজেকে সুশৃংখল জীবনে ফিরিয়ে আনতে হয়।
সে কাজটি আপনাকে কেউ করে দিবে না নিজেই সেই কাজটি সম্পন্ন করতে হয়। আপনার জীবনের সীমাবদ্ধতা এমনি এমনি যাবে না নিজের প্রচেষ্টা থাকা লাগবে। চেষ্টা হীন মানুষ জড় বস্তুর সমান। যে বা যারা চেষ্টা করবে না এমনিতেই ফল ভোগের প্রত্যাশা করে তারা নির্বোধ তারা জীব হয়ে জড়। এজন্য নিজ জীবনের সীমাবদ্ধতা আবিষ্কার করুন এবং ওই সীমাবদ্ধতার মোকাবেলা নিজেই করুন দেখবেন জীবন সুন্দর হয়ে যাবে।
মনে রাখবেন সীমাবদ্ধতার শৃংখল হতে নিজেকে মুক্ত রাখতে না পারলে জীবনে আরো অনেক সীমাবদ্ধতা এসে বাসা বাঁধবে। যদি এই সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়েই জীবন অতিবাহিত করেন তবে কোন একসময় আপনি হবেন চূড়ান্ত পর্যায়ের ব্যর্থ একজন মানুষ। সবার কাছে আপনি নির্বোধ বনে যাবেন।
সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ