আসসালামু আলাইকুম। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও অনেক ভালো আছি। আজকে ” তুমি কি সত্যি আমার !! ” গল্পের দশম পর্ব দেওয়া হবে। যদি আপনি ” তুমি কি সত্যি আমার !! ” গল্পের আগের পর্ব গুলো পড়তে পারেন নাই অথবা পড়তে চান কিন্তূ খুঁজে পান নাই তাহলে এই ওয়েব সাইট এর সার্চ অপশনে গিয়ে ” তুমি কি সত্যি আমার !! ” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। চলুন দশম পর্বে যাওয়া যাক।
নবম পর্বের পর থেকে……..
আমি ঈতিশা কে ভালবাসি আর অন্য কেউ আমাকে দুলাভাই ডাকছে এটা আমার মোটেই ভালো লাগছে না। উফ্ অসয্য লাগছে!! কয়েক দিন পর আবার সেই রাতের শেষ প্রহর নামের Facebook account থেকে এস এম এস আসলো।
রাতের শেষ প্রহর: hi! দুলাভাই।
আমি: জি… বলেন।
রাতের শেষ প্রহর: কেমন আছেন দুলাভাই?
আমি: একটু আগেও ভালো ছিলাম, তবে এখন আর ভালো নাই। আপনি কেমন আছেন?
রাতের শেষ প্রহর: আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।কেন দুলাভাই?
আমি: এই যে আপনার দুলাভাই, দুলাভাই ডাক শুনে। আচ্ছা বলেন তো, আমি আপনার কোন জন্মের দুলাভাই হই?
রাতের শেষ প্রহর: কোন জন্মের না। আমি পূর্ণ জন্ম নিয়েছি কি-না তা জানি না। যদি পূর্ণ জন্ম নিয়ে থাকি তাহলে আগের জন্মের দুলাভাই হবেন।
তবে আপনি যদি চান, এ জন্মেও আপনাকে আমার দুলাভাই বানাতে রাজি আছি।
আমি: কি!! আপনি কি পাগল?
রাতের শেষ প্রহর: নাহ্! পাগল হতে যাব কেন? আমি তো মেয়ে মানুষ হলে পাগলি হব।
আমি: ও… ভালো। মাথায় তো অনেক ফ্যাজলামি বুদ্ধি আছে। আপনার এই সুন্দর বুদ্ধি নিয়ে আমার পিছনে লাগছেন কেন? জানতে পারি?
রাতের শেষ প্রহর: আমি আবার আপনার পিছনে লাগলাম কবে। আপনি আমার সাথে কথা বলতেছেন তাই আমিও আপনার সাথে কথা বলতেছি।
আমি: তা তো বলতেছেন। সাথে দুলাভাই নামক অসয্য শব্দ টাও ব্যবহার করতেছেন।
রাতের শেষ প্রহর: সব ছেলেরাই তাদের girl friend এর ছোট বোনের কাছে দুলাভাই ডাক শুনতে চায়। কিন্তূ আপনার শুনতে ভালো লাগে না?
একটু অদ্ভুত লাগছে।
আমি: আমাকে আপনি সবার সাথে তুলনা করতে পারেন না। আমি সবার মত না। আমি আমার মত। আর শোনেন? আমার girl friend কে? আপনি কি তাকে চেনেন?
রাতের শেষ প্রহর: না! আমি আপনার girl friend কে চিনি না।
আমি: আমার girl friend কে যদি নাই চেনেন। তাহলে আপনি আমার girl friend এর ছোট বোন হলেন কিভাবে?
রাতের শেষ প্রহর: বারে… আপনাকে দুলাভাই বলতে গেলে বুঝি আপনার girl friend কে চিনতে হবে? আপনার বর্তমান যে girl friend আছে আমি তার ছোট বোন হয়ে গেলাম। এখন তো দুলাভাই ডাকতে পারি?
আমি: না। আপনি আমাকে দুলাভাই ডাকতে পারেন না।
রাতের শেষ প্রহর: কেন? এখন আবার সমস্যা কোথায়?
আমি: সমস্যা আছে। কারন আমার কোন girl friend নাই।
রাতের শেষ প্রহর: নাই তো কি হইছে। ভবিষ্যৎ এ যে আপনার girl friend হবে আমি তার ছোট বোন হব।
আমি: আপনি থামবেন? আমার মনে হয় আপনার মাথায় সমস্যা আছে। আপনি অতি দ্রুত কোন মানসিক ডাক্তার এর কাছে যান। নইলে পাবনায় চলে যান।
রাতের শেষ প্রহর: আমার লাগবে না। আপনি মানসিক ডাক্তার এর কাছে যান।
আমি: হুম। আপনার কোথাও যেতে হবে না। আমিই পাবনা পাগল গারদে চলে যাচ্ছি। আর আপনি আমাকে এস এম এস দিবেন না।
[ হায়! খোদা! এ কোন পাগলের পাল্লায় পড়ছি। আমাকে এর থেকে মুক্তি দাও]
রাতের শেষ প্রহর: দুঃখিত ভাইয়া। আপনাকে এভাবে বিরক্ত করার জন্য। আর আপনাকে বিরক্ত করব না।
এরপর থেকে মেয়েটা আমাকে আর এসব এমন এসে দেয় নাই। আমিও দেই নাই। হঠাৎ একদিন দেখলাম, তাসকিন ” রাতের শেষ প্রহর ” এর Facebook friend লিস্ট এ আছে। এটা দেখে তাসকিন কে এসে এম এস দিলাম।
আমি: hi! তাসকিন। কেমন আছিস?
তাসকিন: আরে সিয়াম! এত দিন পর? আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুই কেমন আছিস?
আমি: আমিও ভালো আছি। হ্যাঁ অনেক পর।
তাসকিন: ঐ যে পরীক্ষার পর গেলি আর তো কলেজেই আসলি না। পড়াশোনা কি করবি না?
আমি: হুম। পড়াশোনা করব। তবে ঐ কলেজে না। অন্য কলেজে ভর্তি হয়ে পড়ব।
তাসকিন: তাহলে, অনন্তের মত তুইও চলে গেলি?
আমি: চলে যাই নাই। তবে যাব। আচ্ছা একটা কথা বলত?
তাসকিন: কি? বল।
আমি: ” রাতের শেষ প্রহর” এই Facebook account টা কার?
তাসকিন: কেন? কি হইছে?
আমি: আমাকে অনেক বিরক্ত করে। আমি চিনি না। কথা শুনে মনে হয়, আমাকে চেনে। তাছাড়া দেখলাম যে তোর Facebook friend হয় তাই জিজ্ঞাসা করলাম।
তাসকিন: ওও… এই ব্যাপার। ওটা আর কেউ নয় ওটা ঈতিশা। ওকে আমিই Facebook account খুলে দিয়েছি। আমি ছাড়া আর কেউ জানে না যে ঐ টা ঈতিশার Facebook account. তুইও কাউকে বলিস না, ঈতিশা বলতে নিষেধ করেছে। তবু ও তোকে বললাম।
আমি: অসংখ্য ধন্যবাদ দোস্ত। আমি কাউকেই বলব না ওটা ঈতিশার Facebook account.
আল্লাহ!! এখন কি হবে? ঈতিশাকে তো আমি যা তা বলে ফেলেছি। মনে হয় মন খারাপ করেছে। তাই আর এস এম এস ও দেয় নাই। আমার কি দোষ, আমি কি জানি নাকি যে ওটা ঈতিশা। জানলে কি আর ওভাবে কথা বলতাম? নিজে তো আমাকে চেনে, আমাকে বললেই তো হয় যে, আমি ঈতিশা। সেটা তো বলেই নাই, ওল্টা দুলাভাই বলছে। এটা শুনে রেগে যাওয়ারি কথা। ওনি নিজে থেকে তো মনে হয় এস এম এস দিবেন না তাই আমিই এস এম এস দেই।
আমি: হাই!
[ কোন reply নাই]
পাঁচ মিনিট পর reply আসলো।
রাতের শেষ প্রহর: জি বলেন।
আমি: কেমন আছেন?
রাতের শেষ প্রহর: আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন?
আমি: আমিও ভালো আছি। কি করছেন?
রাতের শেষ প্রহর: তেমন কিছু না। আজকে আমার সাথে কথা বলতে আপনার বিরক্ত লাগছে না?
আমি: ( বেশ রেগে আছে মনে হয়)। না।
রাতের শেষ প্রহর: কেন?
আমি: আজকে তো আর আপনি আমাকে দুলাভাই বলেন নাই তাই। আচ্ছা আপনার নাম কি?
রাতের শেষ প্রহর: আমার নাম জেনে আপনার কাজ কি?
আমি: ( ভাব দেখেন, নাম বলতেছে না, আমিও ছাড়তেছি না। আমাকে যেমন জ্বালাইছো আমিও তেমন জ্বালাবো।) না কোন কাজ নাই। আপনার সাথে দীর্ঘ দিন ধরে কথা হয় অথচ নাম টাই শুনা হয় নাই এখনো। তাই জিজ্ঞাসা করলাম। না বলেন নাই। আপনাকে আমি শালিকা বলেই ডাকব।
রাতের শেষ প্রহর: শালিকা কেন? আমি কারো শালী না।
আমি: ( এখন কেমন লাগে, যখন আমাকে বলেছিলে তখন তো খুব মজা নিছিলা)। কেন নও? আমি না তোমার দুলাভাই হই। দুলাভাই তো তার বউ এর ছোট বোন কে শালী বলে ডাকতেই পারে।
রাতের শেষ প্রহর: ও… আমার বড় বোন কে কবে বিয়ে করলেন?
আমি: এই তো যেদিন থেকে দুলাভাই বলে ডাকেন সেদিন থেকে।
রাতের শেষ প্রহর: এখন তো আর বলি না। অতএব আমি আপনার শালী ও না।
আমি: ও… শালিকা। তা বললে তো হয় না।
রাতের শেষ প্রহর: আপনি কি থামবেন?
আমি: হুম। থামব। যদি তোমার নাম বল।
রাতের শেষ প্রহর: বলতেছি। আমি ঈতিশা।
আমি: ও… তুমি!! আগে বলবে না। ( একটু না জানার ভান করলাম, যাতে ও বুঝতে না পারে আমি ওকে চিন্তায়।)
রাতের শেষ প্রহর: হ্যাঁ আমি। আমি তোমার সাথে মজা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তূ……
আমি: কিন্তূ কি….
ঈতিশা: কিছু না।
আমি: (কিন্তূ আমি মজা নিয়েছি। হা হা হা)। ও… আচ্ছা তোমার একটা ছবি দাও তো।
ঈতিশা: কেন?
আমি: তোমাকে তো অনেক দিন থেকে দেখি না। আগের থেকে মটু হইছো কি না সে জন্য।
( ওকে খুব দেখতে ইচ্ছে করতেছে, তাই এভাবে বললাম। যাতে ছবি দেয়।)
ঈতিশা: আমি মটু হই নাই। আগের মতই আছি।
আমি: যদি মটু নাই হও তাহলে ছবি দিচ্ছ না কেন?
ঈতিশা: ( একটা ছবি পাঠিয়ে দিয়ে বলল।) এই দেখ আমি মটু হই নাই।
আমি: হুম। জানি। তুমি মটু হও নাই।
আজকে এ পর্যন্ত। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সম্পুর্ন গল্পের পর্ব টা পড়ার জন্য। পরের পর্ব অতি দ্রুত দেব। যদি গল্পটা আপনার ভালো লাগে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। তাহলে আমি গল্প লেখায় আরো উৎসাহিত হব।