বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত নয় এমন কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বলা হয়ে থাকে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল সুখী হওয়ার প্রথম শর্ত হলো একটি সুস্থ সবল শরীর।
আর শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে হলে যত্ন নিতে হবে শরীরের যত্ন নেয়ার মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায়। অন্যথায় স্বাস্থ্য ভেঙ্গে খানখান হয়ে যেতে পারে! 🙂
আজকের পোস্টে পুরো স্বাস্থ্য নিয়ে বিশেষ কিছু বলবো না। শুধুমাত্র কিভাবে ফুসফুসের যত্ন নিবেন সেটাই বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক:
প্রতি মুহূর্তে আমরা যে অক্সিজেন গ্রহণ করি এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করি এর প্রসেসিং যে কারখানায় হয়ে থাকে তার নাম ফুসফুস। এটি আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ফুসফুসের কাজ হচ্ছে শ্বাস-প্রশ্বাস সম্বন্ধনীয়। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে অক্সিজেন প্রয়োজন হয় তা প্রতিনিয়ত আমরা বাতাস থেকে গ্রহণ করি। কিন্তু এই বাতাস সরাসরি আমাদের শরীরে কোন কাজে লাগতে পারে না যতক্ষণ না ফুসফুস তার কাজটি করে দেয়।
আমাদের গৃহীত এই অক্সিজেন ফুসফুসের মাধ্যমেই রক্ত প্রবাহে সঞ্চালিত হয় এবং রক্ত প্রবাহ হতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফুসফুসের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসে।
এই ফুসফুস খুবই পাতলা কোষ দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে এবং এতে লক্ষাধীক বায়ু থলি থাকে।
শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কাজ ছাড়াও ফুসফুস অন্যান্য যেসব কাজ করে থাকে সেগুলো হলোঃ
- এটি ধমনীতে প্রবাহিত ঔষধি উপাদানসমূহ কে প্রভাবিত করে।
- শিরায় তৈরি হওয়া রক্তপিণ্ড কে অপসারণ করে।
- ফুসফুস আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে তা হলো হৃদপিণ্ডকে আগলে রাখে। এটি হৃদপিন্ডে রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
যেভাবে সুস্থ রাখবেন ফুসফুসকেঃ
- নিশ্চিতভাবে আমাদের সবচেয়ে খারাপ অভ্যাস গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ধূমপান করা। ফুসফুস ভালো রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। ধুমপানে আমাদের ক্ষতি বৈ লাভ কিছু হয়না! ধূমপান আমাদের ফুসফুসের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। ধূমপানে থাকা নিকোটিন আমাদের ফুসফুসকে বিষাক্ত করে তোলে। তাই ফুসফুস ও শরীরের অন্যান্য অভন্ত্যরীণ অঙ্গসমুহ সুস্থ রাখতে। অবশ্যই ধূমপানের খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
- এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
- সম্ভব ফলে নিয়মিত ফ্লু ও নিউমোনিয়ার টিকা নিতে হবে। এটি ফুসফুস ভালো রাখার নিয়ামক। ফুসফুসের সংক্রমণ রোধ করে পুরুষকে আরো কার্যকরী ও শক্তিশালী হতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন রুটিন মেনে ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়ামের ফলে আপনার ফুসফুস রোগ মুক্ত থাকবে।
- ধুলোবালি এবং আপনার এলার্জি আছে এমন বস্তু এড়িয়ে চলুন। কারন ফুসফুস এগুলোর মাধ্যমে সহজেই সংক্রমিত হতে পারে।
- শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সমূহ সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখার জন্য যেমন স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রয়োজন। তেমনি ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ফুসফুস শরীরের একটি অঙ্গ। এটি সুস্থ-সবল ও নিরোগ রাখতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্প নেই।
- রান্নাঘরের ধোঁয়া ও কর্মস্থলে ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন। আপনার কাজের জায়গায় যদি ধোঁয়া থাকে তাহলে কর্মস্থল পরিবর্তন করুন কারণ ধোয়া আপনার ফুসফুসের ক্ষতি করে।
উপরোক্ত উপায় সমূহ মেনে চলার মাধ্যমে আপনি আপনার ফুসফুসকে সুস্থ ও সবল রাখতে পারেন। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ভালো অভ্যাস, সুষম খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বাসস্থান, পরিচ্ছন্ন কর্মস্থল এবং সচেতনতার মাধ্যমে আপনার ফুসফুসকে সবল ও নীরোগ রাখতে পারেন।
পরিশেষে বলতে চাই। নিজের ও পরিবারের সুরক্ষার জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই। পুরো বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সচেতন হোন।
হোম কোয়ারান্টিনে থাকুন নিরাপদ থাকুন।
পোষ্টটি আপনার কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। আর যদি এটি পড়ে আপনার এতোটুকু উপকার হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।