- বিখ্যাত ডিভাইড এন্ড রুল
উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রক্রিয়া শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে। ব্রিটিশ সরকার উপমহাদেশে তাদের শাসনকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায় কে ব্যবহার করেন। তারা ভাগ করা ও শাসন ক(ডিভাইড অ্যান্ড রুল) নীতির মাধ্যমে হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায় কে ব্যবহার করার প্রয়াস পায়। ১৮৮৫ সালে ভারতীয় কংগ্রেসের জন্ম লাভের পর থেকে ভারতের হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ১৯০৫ চেতনা জাগ্রত হয়। এছাড়া কংগ্রেসের মধ্যে মুসলমান নেতারা যখন উপলব্ধি করতে পারলেন যে কংগ্রেস ভারতের সমগ্র শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না, এটি কেবল হিন্দুদের স্বার্থরক্ষার জন্য পরিচালিত হয় তখন থেকে মুসলমানরা তাদের নিজেদের জন্য আলাদা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার মুসলমানদের তথা পূর্ববঙ্গ বাসীর জন্য বঙ্গভঙ্গ সম্পন্ন করলে এটি সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প উসকে। এর ফলশ্রুতিতে ভারত বর্ষ তথা বাংলার বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। হাজার ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের দুটি প্রধান ধর্মীয় সম্প্রদায় হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর হিন্দু সমাজ তা মেনে না নেওয়ার ফলে সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। বঙ্গভঙ্গের ফলে মুসলমানরা খুশি হলেও হিন্দুরা এতে ব্যাপক নাকচ হন। তারা বঙ্গভঙ্গ কে বাতিল করা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন পরিচালনা করার পরিবর্তে ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় তাদের কর্মসূচি পালন করে। হিন্দুদের দ্বারা আন্দোলন সফল করার জন্য উগ্রপন্থা অবলম্বন করা হলে তা উপমহাদেশে হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে জন্মদিন। এর ফলে হিন্দু মুসলমান একে অপরের প্রতি হিংসাত্মক আচরণ প্রদর্শন করে। কলকাতায় কেন্দ্রিক হিন্দুরা এই সময় মারমুখী আচরণ শুরু করে। হিন্দুদের আচরণের ফলে উপমহাদেশে মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় কলকাতা নগরীর বিভিন্ন গুপ্ত সংগঠন জন্মলাভ করে। তারা মুসলমানদের পাশাপাশি ইংরেজদের তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা চালায়। কলকাতায় যুগান্তর,অনুশীলন প্রভৃতি সন্ত্রাসবাদি সংগঠনের জন্ম হয়েছিল। এসব সংগঠন সব সাম্প্রদায়িক চেতনা লালন পালন করে উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপের দিকে প্রচলিত ছিল।
.
আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশরা চলে গেলেও তারা যে ধারা প্রবর্তন করে গেছেন তা তার ধারাবাহিকতা হিসেবে এ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সংঘাত এখনো অব্যাহত আছে। অনেক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকলেও মাঝেমাঝে আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায়। ব্রিটিশ শাসন আমল থেকে সাম্প্রদায়িকতা উপমহাদেশে তথা বাংলাদেশের ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে বাংলার তৎকালীন রাজনীতিতে এই বিষয়টি বেশ জটিল আকার ধারণ করে। ব্রিটিশ রাজের আমলের ও শাসন কর নীতি থেকে মূলত সাম্প্রদায়িকতা শুরু হয়। কারণ ইংরেজ সরকার তাদের সুবিধামতো হিন্দু এবং মুসলমানদের সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিত যার প্রভাবে হিন্দু-মুসলমান এ দুটি সম্প্রদায়ে ভারতের রাজনীতিতে সর্বদা বৈরী আচরণ করত এক সম্প্রদায়ের লোকেরা অন্য সম্প্রদায়ের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে ফলে দিন দিন হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির হতে থাকে। যার পরিণতিতে 1937 সালের নির্বাচনের পর এ দুটি সম্প্রদায়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করার চেষ্টায় লিপ্ত হয় এবং ধর্মীয় চেতনার ভিত্তিতে বিভক্ত হাজার ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
আমাদের দেশ এক ধর্মের লোকদের জন্য ধর্মের নিয়ম নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে দেখা যায় বর্তমানে অনেক পীরের মাজারের হিন্দুরা মানব করে কেননা তাদের বিশ্বাস যে তারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে মানব করছে তা পূরণ হবে এটা অবশ্যই ধর্মীয় বিশ্বাস ছাড়া আর কিছু নয় আমাদের দেশে অতীতকাল থেকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে। সামাজিক ভাবে মেলামেশা চিত্র লক্ষ্য করা যায় এদেশে সামাজিক অনুষ্ঠানে হিন্দুরা মুসলমান অতিথিদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার আলাদা ব্যবস্থা করে এছাড়া মুসলমানদের উদ্দেশ্যে হিন্দুদের জন্য আলাদা খাবারের ব্যবস্থা করা হয় তবে আজকাল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উভয় সম্প্রদায়ের জন্য যেসব খাবারের ব্যবস্থা করা হয় সেগুলো। উভয় সম্প্রদায়ের জন্য নিষিদ্ধ নয় এর ফলে কোন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে না মুসলমানদের ঈদ উৎসব উপলক্ষে মানপত্র এবং এবং মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি করে তাছাড়া বিভিন্ন আকর্ষণীয় তথ্য যেমন মাটি দিয়ে ফল ইত্যাদি তৈরি করে বিক্রি করে। পাশাপাশি হিন্দুদের পূজা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মেলায় মুসলমানরা যাত্রা দেখে এবং গান-বাজনা উপভোগ করে হিন্দু মুসলমান সকল সম্প্রদায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে গায়ে হলুদ গান বাজনা এবং প্রীতিভোজের ব্যবস্থা প্রায় একই রকম। অপর ধর্মের প্রতি সহনশীল প্রদর্শন এটা সব ধর্মের মূল বাণী ইসলাম ধর্মে আছে ধর্মের জোরজবস্তি নেই তাই বাংলাদেশের ধর্ম নিয়ে খুব বাড়াবাড়ি করা ইতিহাস দেখা যায় না অতি প্রাচীনকাল থেকে এদেশের মানুষ ধর্মীয় সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে এর দৃষ্টান্ত পৃথিবীর অনেক দেশেই বিরল এদেশে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে হয়ে থাকে আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন মোটামুটি ধর্মনিরপেক্ষ। বাঙালি মুসলমানরা ব্যক্তিগণ জীবনের বেস্ট ধার্মিক কিন্তু তারা ধর্মান্ধ নয় ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা অপছন্দ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য ধর্মীয় সহনশীলতার প্রয়োজন। যে কোন ধর্ম অপর ধর্মের প্রতি সহনশীল হতে শিক্ষাদান করে জোরপূর্বক ধর্মান্তর প্রকৃত ধর্মের আদর্শ বিরোধী কাজ বাংলাদেশের মুসলমান ইসলামকে ধর্ম হিসেবে বেছে নিয়েছে। পাশাপাশি তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিতে অভিন্নতা সৃষ্টি করেছেন।