একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে প্রযুক্তির উৎকর্ষতা সাধনের সাথেসাথে উন্নত হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থাও,সেই সাথে পরিবর্তন হয়েছে রোগের ধরনও।আগেকার যুগে ইনফ্লুয়েঞ্জা, কলেরা, গুটিবসন্তে যেমন মাইলের পর মাইল এলাকা উজাড় হয়ে যেত কিংবা রূপান্তরিত হতো মৃত্যুপুরীতে;অথবা পোলিওর মতো রোগে স্থায়ীভাবে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়তো অল্পবয়সী শিশুরা। সেরকম কিছু এখন প্রতিরোধ করা গেলেও নতুন নতুন অনেক রোগই আবির্ভাব হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো টিউমার।টিউমার যদিও অনেক পরিচিত একটি অসুখ,তাও ক্রমান্বয়ে এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।তাই,আজকের আলোচনার বিষয় টিউমার।
টিউমার শরীরের প্রায় প্রতিটি জায়গায় হতে পারে,তবে আজকে আলোচনা করা হবে ব্রেন টিউমার/মস্তিষ্কের টিউমার নিয়ে।
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক,ব্রেন টিউমার এর লক্ষণ সমূহঃ-
১.মাথা
ক.মাথাব্যাথা(ক্রমশ অবনতি হলে।যেসব মাথাব্যথা ওষুধ খেলে কিংবা বিশ্রাম নিলে দুএকদিন পর এমনিতেই ভালো হয়ে যায়,সেসব মাথাব্যথা নয়)
খ.খিচুনি
গ.হঠাৎই অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
ঘ.অজ্ঞান হয়ে কিছু মূহুর্তপর আবার নিজেই ঠিক হয়ে যাওয়া
২.চোখ
ক.দৃষ্টিশক্তি হ্রাস (সাধারণত একচোখে হ্রাস পায়,সাথে মাথাব্যথা থাকে)
খ.এক জিনিস দুটো দেখা
গ.চোখের সাধারণ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া
৩.কান
ক.শ্রবণশক্তি হ্রাস (সাধারণত এক কানে দেখা দেয়,সাই সাথে ভারসাম্যহীনতাও থাকে)
খ.কানে ঝিঝি শব্দ শোনা
গ.ভারসাম্যহীনতা
৪.মুখ ও জিহ্বা
ক.জিহ্বার এক সাইড/পুরো জিহ্বার শক্তি কমে আসা
খ.কথা বলতে অসুবিধা
গ.খাবার গিলতে অসুবিধা
ঘ.মুখের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া
৫.শরীর
ক.শরীর দুর্বল লাগা
খ.শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া
গ.হাটতে গিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পারা
ঘ.আস্তে আস্তে হাত-পা অবশ হয়ে আসা
৬.অন্যান্য
ক.নাকে ঘ্রাণ না পাওয়া
খ.মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক
গ.শারীরিক সম্পর্কে অনাগ্রহ
ঘ.বিনা কারণে স্থুলতা
ঙ.হাত,পা,জিহবা বড় হতে থাকা
চ.খিটখিটে মেজাজ
ছ.প্রস্রাবের বেগ বুঝতে না পারা
জ.স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া
এসব লক্ষণ/উপসর্গ এক অথবা একাধিক একই সাথে দেখা দিতে পারে।
করণীয়ঃ- উপরিউক্ত উপসর্গ/উপসর্গসমূহ দেখা দিলে অবহেলা না করে অতিসত্ত্বর একজন নিউরোলজিস্ট এর সাথে যোগাযোগ করুন। ঔষুধ কিংবা শল্যচিকিৎসায় এ সমস্যা সমাধানের সফলতার হার অনেক। দ্রুত সমস্যা নির্ণয় করতে পারলে এর সফল সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু,যদি বিলম্ব হয়;তবে রোগ নির্ণীত হলেও তার সমাধান সফল হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। মনে রাখবেন, ব্রেন টিউমার একটি মরণব্যাধি। দ্রুত সমস্যা সমাধান না করলে মৃত্যুর সম্ভাবনা শতভাগ।