একটি মানব শিশু বাবা মায়ের হাত ধরেই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহন করে।একটি সামাজিক পরিবেশে লালিত হয় এবং একটি সংঘবদ্ধ পরিবেশে(যেমন বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা ব্যাক্তিমালিকানাধীন যে কোন প্রতিষ্ঠানে কেউ চাকুরি করে।অথবা কেউ ব্যাবসা বানিজ্য করে। অথবা কেউ কৃষি কাজ বা অন্যের জায়গা জমিতে কাজ করে…)কর্মস্হলে থেকে জীবিকার্জন করে থাকে,জীবন নির্বাহ করে থাকে,বেঁচে থাকে আর সবশেষে মারা যায়….এখন প্রশ্ন টা হচ্ছে এই যে জন্ম গ্রহন করা, জীবন নির্বাহ করা আর মৃত্যুবরণ করা টা ই কি মানব জীবনের গল্প!! না আরো কিছু……
পৃথিবী নামের এই ছোট্ট গ্রহটাতে কেনইবা আমাদের মতো বুদ্ধিমান প্রানীর বিকাশ ঘটেছে।সহজ কথায় পৃথিবীতে আমরা কেন এসেছি।মৃত্যু ই কি আমাদের শেষ পরিনতি…. এসব কি নিছক প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা না এর পেছনে কাজ করছে কোন মহান পরিকল্পনাকারীর পরিকল্পনা….. একদিকে ধর্ম আরেকদিকে বিজ্ঞান।একদিকে কিছু প্রাচীন মহাগ্রন্হের বর্ননা,কিছু নথিপত্রের উদ্বৃতি অন্যদিকে আমাদের পদার্থ বিদ্যা,রসায়ন বিদ্যা,জীববিদ্যা,অনুজীব বিদ্যা,ভ্রুন বিদ্যা,প্রানীর অংগ সংস্হানিক বিদ্যা,আমাদের ভু তত্ত বিদ্যা….
শিল্প বিপ্লবোত্তর পৃথিবীতে আমাদের জানতে চাওয়া, আমাদের বুঝতে পারার ব্যাপ্তিটা বিশাল।আজ আমাদের ক্যামেরা চাঁদে,মঙ্গল গ্রহে পৌছে গেছে।আজ আমরা জাননি সাগড়ের অতল গহবরের রহস্য। গোটা দুনিয়াজুড়ে অসংখ্য মানুষের বছরের পর বছর ধরে ব্যাপক অনুসন্ধান, বিরামহীন প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে কিছু বৈজ্ঞানিক মতবাদ।যেখানে তুলে ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ শত কোটি বছর আগে কিভাবে নাথিং থেকে এভরিথিং মানে কোন কিছু নয় থেকে সবকিছু তৈরি হয়েছে…..
আজ আমরা জানি কিভাবে প্রায় ৫০০ কোটি বছর আগে সুর্যের কক্ষপথে আমাদের পৃথিবী ঘূর্নায়মান হতে থাকে…কিভাবে পৃথিবীতে প্রানের স্পন্দন এসেছে…কিভাবে প্রানীজগতের ক্রমবিকাশের সর্বশেষে এসেছি আমরা মানুষেরা… এরপর মানুষের বন্যজীবন>কৃষিজীবন আর এর ধারাবাহিকতায় শিল্পবিপ্লবোত্তর পৃথিবীতে মানুষের জীবন ধারায় আসে নতুনত্ব।সবশেষে আজকের অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে এসে গোটা দুনিয়া আজ আমাদের হাতের মুঠোয়….
কিন্তু সেই জীবন জিজ্ঞাসা মৃত্যু ই কি জীবনের গল্পের শেষ না আরো কিছু?
এই প্রশ্ন টা আমার নয়….
অন্ধকার দুর করে সুর্য তার আলো ছড়ায়,মাঝে মাঝে মনে হয় রোদের তাপে যেন সব শেষ,কিন্তু দিন শেষে একটু একটু করে ঝিমিয়ে যায়।সবশেষে সুর্যটা ডুবে যায় আর অন্ধকার আবার ফিরে আসে…
এভাবেই সুর্য উঠে আর অস্ত যায় প্রতিনিয়ত।রাতের আকাশে চাঁদ ও একটু একটু করে বড় হতে হতে পুর্নিমায় ঝলমলে হয়ে উঠে আবার একটু একটু করে ক্ষয় হতে হতে অমাবস্যায় হারিয়ে যায়।আবার একটু একটু করে জেগে উঠে….
এভাবেই রাতের পর দিন আসে,দিনের পর রাত আর ঋতুর পালাবদল হয়।শীতের পর গ্রীষ্ম আসে,চৈত্রের তাপদাহের পর আসে বর্ষা।এভাবেই চলছে প্রকৃতির প্রবাহমানতা।প্রকৃতির এই প্রবাহমানতার এক পর্যায়ে এ পৃথিবীতে মানুষের পথচলা শুরু।
এখন একজন মানুষ তার শৈশব,কৈশর পার হয়ে যৌবনে পদার্পন করে।একটা সময় যখন সে কারো হাতের আংগুলে ধরে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করত,কখনো আংগুল ছেড়ে দিয়ে এদিক ওদিক চলে যেত আর বাবা অথবা মায়ের ধমক শোনতে হত….এই যে সোনামনি এদিকে ওদিকে যেওনা…..
আজ সেই শিশুটিই বড় হয়ে তার আংগুলে আরেক শিশুকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।একটা সময় সে বাবা বাবা, মা মা বলে ডাকত।সে আজ অন্য এক শিশুটির বাবা বাবা ডাক শোনে।সে যেভাবে তার বাবাকে কবরে রেখে এসেছে,একদিন তার সন্তান ও তাকে কবরে রেখে আসবে।এটাই মানব জীবনের প্রবাহমানতা।
দিনের পর যেমন রাত আসে,আবার রাতের পর দিন…গ্রীষ্মের পর বর্ষা,বর্ষার পর শীত, শীতের পর গরম আবার গরমের পর আবার শীত…প্রকৃতির এই চক্রের মতো কি মানব জীবনের ও কি কোন চক্র আছে? মৃত্যুর পর সে কি আবার জীবন ফিরে পাবে!
প্রকৃতির গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত,বসন্তের চক্রের মতো এই পৃথিবী ও আমাদের মানব জীবন ও কি কোন চক্র মেনে চরে?
এই বিষয় টা ই কৌতূহলী মানসপটে হাজারো ভাবনার জন্ম দিয়েছে আর তৈরি হয়েছে কত গল্প,উপাখ্যান,কত রচনা…
বাকিটুকু পরের অংশে লেখার চেষ্টা করব