প্রিয় ভাইয়েরা কেমন আছেন আপনারা ? আল্লাহর রহমতে জানি এখন আপনারা নিশ্চয়ই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন!
যদি আপনার পরিবারের কারও মধ্যে করোনার লক্ষণগুলো দেখা দেয় জ্বর কাশি গলাব্যথা বা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়েই যায় তাহলে কি করবেন তখন?
কিভাবে তার সেবা-যত্ন করবেন? কি পদক্ষেপ নিবেন? কিভাবে তাকে আইসোলেশন রাখবেন? আজকের এই পোস্টটিতে প্রত্যেকটি কথা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন একটু এড়িয়ে যাবেন না কারণ প্রতিটি বাক্যের সাথে আমাদের জীবন মরণ জড়িত চলুন শুরু করা যাক তাহলে?
১। করোনার লক্ষণ দেখা গিয়েছে এমন ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব একটা ঘরের ভেতর রাখার ব্যবস্থা করুন, ওই ঘর থেকে সে যেন টয়লেট বাদে আর কোনো কারণে না বের হতে পারে সবচেয়ে ভালো হয় সেখানে এটাস্ট টয়লেট থাকলে!
২। এরপর আই ডি সি আর এর কাছে ফোন করে জানান তারা প্রতিদিন হাজার হাজার কল সামলাচ্ছে প্রচুর পরিমাণ ফেক কল যায় তাদের কাছে তাই লাইন পেতে দেরি হতে পারে মোটামুটি তিন চার ঘন্টা আগে তাদের লাইন পাবেন না এটা জেনে কল করতে থাকবেন!
৩। তিন দিনে তিনবেলা রোগের ঘরের দরজার সামনে খাবারের ট্রে রেখে চলে যাবেন , সেখানে তার জন্য আলাদা প্লেট গ্লাস চামচ থাকবে।
তাকে খাওয়া-দাওয়া দেওয়ার জন্য আলাদা কেউ থাকলে ভালো হয় এবং তার সাথে যেন রোগের মুখোমুখি দেখা না হয় কারণ এই কাজটা করতে হবে খুব সাবধানে, আনাড়ি কেউ করতে গেলে ভাইরাস নিজের শরীরে বহন করে নিয়ে আসতে পারে খাবারের সাথে নাপা এন্টিহিস্টামিন টেব ঔষধ দিন ও প্রতিদিন দুইবেলা জ্বর মাপুন।
৪। খাওয়ার পর তারপের গ্লাসগুলো ভিনেগার মেশানো গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, ধোয়ার সময় অবশ্যই মাক্স আর গ্লাভস পরে নেবেন তারপরে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগের ভেতর রোগীর ব্যবহৃত বাসনগুলো রেখে দিবেন। এরপর গ্লাভস আর মার্কস খুলে ভালো করে হাত-মুখ ধুয়ে ফেলুন সবচেয়ে ভালো হয় রোগী নিজেই এসব ধুয়ে রাখতে পারলে!
৫। রোগী যে ঘরে থাকবে সে ঘরের দরজা জানলা কিছু খোলার দরকার নেই , দরজা খুলবে দিনে মাত্র তিনবার খাবার নেওয়ার জন্য এবং সেই সময় তার আশেপাশে কোন সুস্থ লোক বিশেষ করে বয়স্ক লোক ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের রোগীই গর্ভবতী ও শিশুরা থাকতে পারবে না তাকে দেখতে হলে ভিডিও কল করুন আর তার যদি একান্তই ঘর হতে বের হতে হয় তবে তাকে মাক্স আর গ্লাভস হাতে পরিয়ে বের করান! আর এর মধ্যেই টয়লেটে গেলে মাক্স আর গ্লাভস বদলে ফেলুন।
৬। এর ভেতর যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাহলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান কিভাবে নিতে হবে সেটা আইইডিসিআর ই বলে দিবে, এই হাসপাতালে নেওয়ার সময় টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সময় যাদের সংস্পর্শে সে আসবে তারাও আক্রান্ত হতে পারে। এরপর বাসার সবাই আগামী ১৪ দিন বাসার বাইরে যাবেন না এবং বাসার সকল সদস্যকে কভিড-১৯ টেস্ট করার ব্যবস্থা করুন।
নিজের সহ প্রতিটি সদস্যের উপর নজর রাখুন দেখুন যে কারো জ্বর কাশি শ্বাসকষ্ট বা গলা ব্যথার প্রকাশ হয় কিনা হলে তাকে একইভাবে বন্দি করে রাখুন।
৭। রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সে যে রুমে এতদিন ছিল সেই রুমের প্রতিটি ইঞ্চি সানি টাইজ করুন দিসিজ ইন ফাক্ট ইনস্প্রে করুন দরজার হাতল সহ সামান্য জাগাও বাদ দেবেন না মানে হচ্ছে গিয়ে যতটুকু আপনার পক্ষে সম্ভব হয় কি! তার ব্যবহৃত কাপড় চোপড় গুলোর একটি অংশ তো তার সাথে হাসপাতালেই গিয়েছে বাকি অংশগুলো গরম পানি দিয়ে সেদ্ধ করে ফেলুন তারপর রোদে শুকিয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে রাখুন।
ধোয়ার সময় গ্লাভস আর মাক্স অবশ্যই অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে,
৮। আর তার ব্যবহৃত টয়লেটেও একই ভাবে গ্লাভস আর মাক্স পড়ে ভালো করে ডেটল বা স্যাভলন মেশানো গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন! টয়লেটের লাইটের সুইচ ও দরজার হাতল ও হাত দেয়া যাবে না।
৯। তার ব্যবহৃত ফোন কম্পিউটার ল্যাপটপ মাউস সবকিছু সানি টাইলস করুন ভাবুন সে কোথায় কোথায় তার হাত দিয়ে স্পর্শ করেছে সেই জায়গাগুলোতে স্প্রে করুন ভালোভাবে দশ মিনিট পরেই টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন, বুঝতে না পারলে ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিন।
১০। সব থেকে বড় কথা হচ্ছে গিয়ে নিজেকে পরিষ্কার পরিছন্নতা রাখুন, মাক্স গ্লাভস ব্যবহার করুন কিছুক্ষণ পরপর হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আর বাইরে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই সেনিটাইজার ব্যবহার করুন, যাতে করে লোক দেখলেই যেন ভাবে আপনার শুচিবাই আছে আসলেই এই শুচিবাই টাই করোনার হাত থেকে বাঁচানোর চাবিকাঠি।
করোনার ওষুধ কিন্তু এখনো আবিষ্কার হয়নি তাই শুধু সাবধানতায় পারে আপনাকে এবং আপনার প্রিয়জনকে এই মহামারী থেকে নিরাপদে রাখতে এটা সব সময় মাথায় রাখবেন দয়া করে! প্রিয় বন্ধুরা করোনার এই ভয়াল দিনগুলো একদিন শেষ হবে, পৃথিবীটা ঠিক আগের মতই ব্যস্ত আর প্রাণচঞ্চল হবে।
সবাই মিলে হাসবে গাইবে ঘুরতে বের হবে লম্বা এই বিরোধিতা শেষে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বে গোটা দুনিয়া আর সেই ভিড়ে আপনাকেও ✅✅✅✅