সরকারি চাকুরির ১১-২০ গ্রেডের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বইয়ের তালিকা ও অন্যান্য পরামর্শ

সরকারি চাকুরিতে প্রতিযোগিতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যেসব চাকুরির পরীক্ষায় আগে ৭০ এর মধ্যে ৬০ পেলেই ভাইভায় অংশগ্রহণ করা যেতো সেখানে এখন ৬৫-৬৬ পেয়েও মাঝে মধ্যে প্রিলি টেকা সম্ভব হয়না। বহু অনার্স-মাস্টার্স কমপ্লিট করা বেকার ছেলে মেয়ে ২০ গ্রেডের চাকুরির পরীক্ষায় নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করছেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন, যেমন তেমন প্রস্তুতি দিয়ে চাকুরি প্রাপ্তি এখন মোটেই সম্ভব নয়। আর ক্ষুরধার প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন ভালো মানের/লেখকের/প্রকাশনীর বই। আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বইয়ের তালিকা শেয়ার করছি:

সরকারি চাকুরির ১১-২০ গ্রেডের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বইয়ের তালিকা

সরকারি চাকুরির ১১-২০ গ্রেডের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বইয়ের তালিকা ও অন্যান্য পরামর্শ

০১। যে কোনো একটি ভালো প্রকাশনীর জব সলুশন।

(জব সলুশন পড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যাখ্যাসহ বুঝে মুখস্থ করবেন। ১১-২০ গ্রেডের চাকুরির প্রশ্নসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কমপক্ষে ৭০% প্রশ্ন সরাসরি বা কাছাকাছি জব সলুশন থেকেই কমন পাওয়া যায়। যারা নিয়মিত পরীক্ষা দেন তাদের এ ব্যাপারটি নতুন করে বলার কিছু নেই। আপনি যদি অন্য কোনো বই না পড়ে শুধু জব সলুশনই পড়ে যান তবুও প্রিলি পরীক্ষাসমূহে টেকা অসম্ভব নয়। তাই আমার পরামর্শ জব সলুশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন। প্রতিদিন যত ব্যস্তই থাকুন না কেনো জব সলুশনের ন্যূনতম ০১ টি মডেল শেষ না করে ঘুমাতে যাবেন না। জব সলুশন এর ক্ষেত্রে আমার পরমর্শ Oracle এর জব সলুশন। তবে ভালো মানের অন্য প্রকাশনীরও কিনতে পারেন।)

০২।   English for Competitive Exams (প্রফেসরস প্রকাশনী)(যারা আমার মতো দুর্বল ছাত্র এবং কম পড়ে ঝামেলা মেটাতে চান তাদের English এর প্রস্তুতির জন্য এ বই যথেষ্ট।  ১১-২০ গ্রেডের ইংরেজির জন্য যা যা প্রয়োজন এখানে সবকিছুই সুন্দরভাবে বর্ণনা করা আছে।

০৩। Khairuls Basic Math

১১-২০ গ্রেডের পরীক্ষাসমূহে যেসব ক্যাটাগরির অংক আসে তার কোনো কিছু্ই এখানে বাদ রাখা হয়নি। অল্প সময়ে সমাধান বের করার করার ট্রিকসসমূহ নিয়ে ভালোভাবে আলোচনা করা আছে।

০৪। ৯ম-১০ম শ্রেণির বোর্ডের বাংলা ব্যাকরণ বই।

০৫। PSC নন ক্যাডার জব (প্রফেসরস)

PSC এর পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করলে অন্যান্য চাকুরির জন্য আলাদাভাবে প্রস্ততি নিতে হয়না। বইটির প্রশ্নোত্তরসমূহ খুবই সাজানো গোছানো। নিয়মিত পড়ার মাধ্যমে আয়ত্ত্বে আনতে পারলে বাংলা, ইংরেজি, গণিতসহ ফোকাস রাইটিং এ আপনার দক্ষতা অভাবনীয় বৃদ্ধি পাবে।

০৬। BCS প্রিলিমিনারি বাংলা  (যে কোনো ভালো প্রকাশনীর)

০৭। BCS প্রিলিমিনারি বাংলাদেশ বিষয়াবলি (যে কোনো ভালো প্রকাশনীর)

০৮। BCS প্রিলিমিনারি আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (যে কোনো ভালো প্রকাশনীর)

উপরোল্লিখিত বইগুলোর পাশাপাশি অধিক প্রস্তুতির জন্য নিম্নের ০৩ টি বই কিনতে পারলে  খুবই ভালো। বর্তমানে যে হারে প্রতিযোগিতা বাড়ছে, এখানে নিজেকে এগিয়ে রাখতে অবশ্যই কিছু বাড়তি প্রস্তুতির প্রয়োজন। এ বইসমূহে যেসব বিস্তারিত আলোচনা আছে তা নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে ফোকাস রাইটিং এ আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

০৯। BCS লিখিত বাংলা (যে কোনো ভালো প্রকাশনীর)

১০। BCS লিখিত বাংলাদেশ বিষয়াবলি (যে কোনো ভালো প্রকাশনীর)

১১। BCS লিখিত আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (যে কোনো ভালো প্রকাশনীর)

ভালো প্রস্তুতির জন্য কিছু দিকনির্দেশনা:

১। MCQ টাইপ প্রশ্নসমূহ সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পড়ুন। কারণ ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির প্রশ্নসমূহ এমন হয় MCQ আয়ত্ত্বে থাকলে রিটেন প্রস্তুতিও হয়ে যায়।

২। সকল বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর সম্পূর্ণ মুখস্থ করুন। (ব্যাখ্যাসহ)

৩। একই বিষয়ের খুব বেশি বই না কিনে মানসম্পন্ন প্রকাশনীর বই কিনে তা নিয়মিত পড়ুন।

৪। নিয়মিত পরীক্ষায় আসে এমন বাংলা ও ইংরেজি ফোকাস রাইটিংসমূহে গুরুত্ব দিন। এ বিষয়টিকে অনেকেই কম গুরুত্ব দেয় অথচ ভালো মানের ফোকাস রাইটিং লিখে  পরীক্ষার নম্বরে বেশ এগিয়ে থাকা সম্ভব।

৫। PDF ডাউনলোড না করে সরাসরি বই কিনুন। কাগজের বইয়ে যে মনোযোগ আসে তা PDF এ সম্ভব নয়।

৬। যত বেশি সম্ভব এপ্লাই করুন এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন। বারবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আপনি আপনার দুর্বলতাসমূহ বুঝতে পারবেন।

৭। কিছুদিন পর পর রিসেন্ট জব সলুশন না কিনে প্রতি মাসের বিভিন্ন পরীক্ষার MCQ প্রশ্নসমূহের উত্তরের জন্য কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স  ফলো করুন। লিখিত প্রশ্নসমূহের জন্য নিজেই একটি জব সলুশন খাতা তৈরি করে নিন। প্রতি সপ্তাহের পরীক্ষার প্রশ্নসমূহ ফেসবুকেই পাওয়া যায়। ফেসবুক থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে নিজেই সমাধান করুন, প্রশ্ন সমাধানে প্রয়োজনবোধে নামকরা বিভিন্ন শিক্ষকের ফেসবুক পেজ/ইউটিউব চ্যানেলের সহায়তা নিন। এতে করে আপনার নিজের প্রস্তুতিও উন্নত হবে আর কিছুদিন পর পর জব সলুশন কেনার অর্থও সাশ্রয় হবে।

৮। বিভিন্ন আজেবাজে কোচিং এর নিম্নমানের শিক্ষকদের লেখা বই কেনা থেকে বিরত থাকুন। এসব বইয়ে প্রচুর বানান ভুল ও ভুল প্রশ্নোত্তর থাকে।

৯। সম্ভব হলে আপনার পড়ার টেবিলের সামনে কম খরচের মধ্যে নোটিশ বোর্ডের মতো একটি বোর্ড বারিয়ে নিন। যেসব পড়া বারবার পড়ার পরও মনে থাকেনা এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো স্টিকি নোটে লিখে বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখুন। বারবার দেখার মাধ্যমে পড়াগুলো আয়ত্ত্বে এসে যাবে।

Related Posts

2 Comments

মন্তব্য করুন

গ্রাথোর থেকে নতুন আপডেট পেতে OK চাপুন OK No