সুপ্রিয় পাঠক-পাঠিকা ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। আজ আমি এই আর্টিকেলে আপনাদের সামনে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য হাজির হয়েছি।
আমরা জানি, ‘সুস্বাস্থ্য সকল সুখের মূল‘ স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে পৃথিবীর কোন কিছুই ভালো লাগে না, নিজের সামনে পৃথিবীর হাজারো সুশৃঙ্খলিত রঙ্গমঞ্চ উপস্থাপনও করলেও তা মূল্যহীন মনে হয়। শরীর সুস্থ না থাকলে মনও ভালো থাকে না। কোন কাজে মনও বসে না। এজন্য স্বাস্থ্যের জন্মগত অধিকারের সদ্ব্যবহার করার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা যদি আমাদের শরীর এবং মন কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে অবগত হতে পারি, তাহলে আমরা এই আশ্চর্যজনক খামখেয়ালীপনা পরিহার করে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন এর দিকে দৃষ্টি দিতে পারবো। আমাদের শরীর ও মন তখনই ভালো থাকবে যখন আমরা স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে পারব। আমাদের প্রবীণরা প্রায়শই পুষ্টিকর খাদ্য, পরিমিত ঘুমানো এবং সঠিক সময়ে জেগে ওঠার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তারা প্রতিদিন সময়মতো, এবং প্রতিবার যানবাহন ব্যবহার না করে পায়ে হেঁটে কাছাকাছি স্থানে যাওয়ার বিষয়ে তথা কায়িক শ্রম এর উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
যাইহোক, আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে থাকি এবং আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা চালিয়ে যেতে থাকি। জীবনের একটা নির্দিষ্ট সময় পরে এসে আমরা অনুধাবন করি যে তারা যা পরামর্শ দিয়েছিলেন তা একেবারেই সঠিক ছিল। এখন আমরা বুঝতে পারি যে, একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর আজকাল সর্বত্র জোর দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ কেন?? নিচে তা পয়েন্ট আকারে আলোচনা করা হলো –
- স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন আমাদের দেহকে সুসংগঠিত করে এবং মানসিক ইতিবাচক উদ্দীপনা বৃদ্ধি করে।
- এটি আমাদেরকে শারীরিকভাবে সুস্থ করে তোলে এবং বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
- চাপমুক্ত জীবনযাপনের একটি দুর্দান্ত উপায় হলো স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন। এটি আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বৃদ্ধি করে।
- এটি আমাদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের কাছাকাছি নিয়ে আসে।
- স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন অন্যদের জন্য অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়।
- জটিল এবং কঠিন রোগ থেকে সর্বাত্মক বেঁচে থাকা যায়।
- সর্বমোট কথা, স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপনের মাধ্যমে প্রকৃত জীবনের স্বাদ আস্বাদন করা যায়।
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস যেমন ধূমপান, মদ্যপান, জাঙ্ক ফুড খাওয়া, স্ক্রিনে অত্যধিক সময় ব্যয় করার মত অভ্যাস গুরুতর অসুস্থতার দিকে আমাদেরকে পরিচালিত করতে পারে। তাই এসব এখনই এড়ানো উচিত। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস মানুষের স্বাস্থ্যের উপর বিশাল প্রভাব ফেলে। প্রোটিন, চর্বি, কার্বোহাইড্রেট দিয়ে সুষম খাদ্য প্রস্তুত করে শরীরকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করা উচিত। বাসায় প্রস্তুত করা খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। পাশাপাশি স্ট্রীট ফুড,ওভেনে সিদ্ধ করা খাবার, টক, ভাজা খাবার ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে।
এজন্য ছোট বয়স থেকেই আমাদের বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন অনুসরণের আভাস তৈরি করতে হবে। তাই এখন থেকে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি প্রচুর ব্যায়াম করা এবং প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম সহ একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা চালিয়ে যাওয়া (বা শুরু করা) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ইতিবাচক স্বাস্থ্যগত অভ্যাসগুলি শিশুদের শক্তিশালী হতে, সুস্থ থাকতে এবং তাদের স্থূল হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করবে।
আল্লাহ আমাদেরকে জানা, মানা এবং বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার খাস তৌফিক দান করুন।। আমীন।।
সুপ্রিয় পাঠক-পাঠিকা ভাই ও বোনেরা আজ এই পর্যন্ত। আপনারা সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। নিজে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করুন অন্যকেও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযপন করতে উৎসাহিত করুন।।
আল্লাহ হাফেজ