💖লোপার কাছে খোলা চিঠি💖 পর্ব– 1

লোপা কেমন আছিস তুই? জানিস!আজো কেবলি মনে পরে তোদের সাথে কাটানো সোনালী দিনগুলো। দারিদ্র্যতা-জরাজীর্ণতা-নিষ্ঠুরতা সত্ত্বেও সে দিন গুলো আমার কাছে স্বপ্নীল মনে হয়। মনে হয় সেদিনের মত যদি আজকের এই সকাল হত। সেদিনের মতো যদি আজকের দিন গুলো কাটতো। তবে হয়তো আজ আগের মতই স্বচ্ছ -সুন্দর-নির্মল-আন্দময় মন থাকত। কিন্তু কালের স্রোতে সে সময় সে দিন গুলো বিলীন হয়ে গেল। তাই আগের মত আর ভোরের সূর্য টাকে দেখে মনে এখন প্রশান্তি আসে না। আগের মত আর হাসতে-গাইতে পারি না। আগের মত আর আড্ডা কে গল্প – গজবে সরস করে তুলতে পারিনা।

লোপা আমি জানি, তুই ও আর আগের মতো ভালো নেই। দারিদ্রতা যেখানে মাথার মুকুট;সংসারের সংকট যাতনা যেখানে অঙ্গভূষণ সেখানে আর যা কিছু আশা করা যাক না কেন স্বস্তি আশা করা যায় না। জানিস লোপা?এক  সময়ের স্বপ্নে সাজানো -ভালোবাসায় রাঙ্গানো দিন গুলো যখন দুঃস্বপ্নে আর ভালোবাসা হীনতায় ভরা দেখলাম তখন মনের চারপাশে সুখের বদলে কেবল দুঃখের স্রোত বইছে। অথচ যার স্মৃতি চির অম্লান ওই সকালের সূর্য উঠায়-দুপুরের আগমনে – আসন্ন সন্ধ্যায় কিংবা নির্ঘূম রাতে ওই রাত জাগা চাদেঁর জোস্নায়।

তুই তো মেঘলা কে চিনিস। তোকে আমি ওর কথা বলেছি। আর তাই তো তোকে আজ আমি লিখতে বসলাম সেই ফেলে আসা পুরনো দিনের মত। আমি জানি আজো তুই সেই আগের মতই আমার চিঠি খুব ই আগ্রহ নিয়ে পড়বি। আবার ও লিখবি তোর চিঠি গুলো আজো এক একটি উপন‍্যাস।

আজ আবারও সেই প্রতিদিনকার মতো সকাল হল। দিনের শুরু টা ভালো হলে নাকি দিন টি ভালো যায়। না আগের মত আর সুন্দর ভাবে দিন কাটে না। তবে আজো দিন কাটে কষ্টময়- নিরানন্দে-ছটফট করে। তাই ওই নিরাকার ঈশ্বরের কাছে কেবলি জানতে চাই তিনি আমাকে এ কোন পরীক্ষায় ফেললেন। জানি না কোন অজানা দোষে দোষী আমি।

আজ কাছের সকল মানুষ কে আমার বড্ড বেশি পর মনে হয়। স্বার্থপর এই জগতের সকল কেই বড্ড বেশি স্বার্থপর মনে হয়। অযাচিত কোনো দুশ্চিন্তায় মাথার ভেতরটা হঠাৎই গরম হয়ে যায়। চোখের ঘুম ছুটে যায়। দুচোখ বড্ড জ্বালা করে। মন টা আর্তনাদ করে। আমি কি ভালোবাসতে ভুলে গেছি?

জানিস লোপা;আমার কাউকে আর ভালোবাসতে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না। ভয় হয়।  হারানোর ভয়। যদি আবার হারাই। এই এক ভয়ে আমি আজ ভালোবাসার রাজ‍্যছাড়া। এক অচিন পথের যাত্রী। যার জীবনের লক্ষ্য হল একটু আনন্দ একটু শান্তি।আর আজ তাই এই দূর্বিনীত সৃষ্টির কাছে একটু সাহস ভিক্ষে করেছি কেবলই তোকে লিখবো বলে।

চলবে—–