নব্বই দশকের পূর্বে ইন্টারনেট এর প্রচলন প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে শুধুমাত্র প্রচলিত ছিল। কিন্তু এর পর থেকে সর্ব সাধারণের জন্যই ইন্টারনেট এর ব্যবহার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে অনলাইন কে ঘিরে গড়ে উঠছে নানান ব্যবসা বানিজ্য বা অর্থ ইনকাম করার নানান সব মাধ্যম। অর্থাৎ যেকেউ চাইলে এখন অনলাইন থেকে প্রতি মাসে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর মাধ্যমে প্রতি মাসে ১০-২০ হাজার বা তার থেকে বেশি আয় করতে পারেন। তবে কাজ ছাড়া কেও ১০-২০ হাজার টাকা প্রতি মাসে কখনো আয় করতে পারবেন না, কিংবা বলা যায় এক টাকাও কোনো কাজ ছাড়া কষ্ট ছাড়া আপনি অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন না।
অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে আপনাকে। তবে পরিশ্রম করতে আমরা সবাই রাজি কিন্তু প্রয়োজন হয় মাধ্যমের। অনলাইনে অনেক ইনকাম মাধ্যম প্রচলিত কিন্তু আমরা কোনটির মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করবো? আপনার সুবিধার্থে নতুনদের জন্য অনলাইন ইনকাম সহজ ৩ টি উপায় সম্পর্কে আজ বলবো। আমি নিজেও এই ধরনের তিন উপায়ে অর্থ আয় করেছি।
অনলাইন থেকে প্রতি মাসে ১০-২০ হাজার টাকা ইনকাম করার ৩ উপায়ঃ
১) ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে আয়: এই উপায়টি স্কিপ করার আগে আমার অনুরোধ থাকবে আগে পড়ুন তারপর স্কিপ করবেন। দেখুন ইউটিউব থেকে অর্থ আয় করার কথা মাথায় আসলে অনেকের মাথায় বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরতে থাকে। যেমন কিভাবে ভিডিও তৈরি করবো কিভাবে এডিট ইত্যাদি নানান।আপনার কিছুই প্রয়োজন নেই যেভাবে শুরু করবেন তা আমি নিচে আপনাদের বলে দিচ্ছি। তবে বলে নেওয়া ভালো ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে আপনাকে ফসকেম ভিডিও তৈরি করার দরকার নেই, ক্যামেরার সামনে না এসেও আপনি আয় করতে পারবেন।
কিভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন? প্রথমে আপনার একটি নিশ বাছাই করতে হবে, আমি সাজেস্ট করবো হেলথ টিপস, রান্না রেসিপি, রিভিউ, এডিটিং রিলেটেড একটি চ্যানেল তৈরি করুন। এরপর আপনি শুধু নিজের ভয়েস দিন, বাকি ভিডিও আপনি রান্না রেসিপি হলে, রান্নার কাজে যা যা আপনি ব্যবহার করছেন সেগুলো ভিডিও করে জুড়ে দিবেন, কিংবা রিভিউ হলে বিভিন্ন ফ্রি সোর্স হলে সেখান থেকে ছবি বা ভিডিও নিয়ে জুড়ে দিবেন।
অর্থাৎ আপনাকে শুধু নিজের ভয়েস দিতে হবে। সবশেষে ভিডিও এডিট করার জন্য আপনি Klinemaster অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন, যেটি আমি নিজে ব্যবহার করছি। এছাড়া ইউটিউব থেকে কিভাবে নিজে কনটেন্ট তৈরি না করে কপি এবং পেস্ট সিস্টেমে আয় করতে হয় সে বিষয়ে আমি আপনাদের আগের একটি আর্টিকেল দ্বারা বলেছি।
কিভাবে আয় করবেন ইউটিউব থেকে?
Grathor ওয়েবসাইটে কনটেন্ট তৈরি করেঃ আপনি যে ওয়েবসাইটে এই আর্টিকেলটা পড়ছেন সেটির নাম grathor, এটি একটি ব্লগ সাইট। আপনি হয়তো জেনে থাকবেন Grathor এর একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। প্রিমিয়াম মেম্বারদের তারা কনটেন্ট তৈরি করার সুযোগ দেয়। আপনাকে কিছুই করতে হবে না শুধু তাদের দেওয়া টপিকে সুন্দর ভাবে একটি কনটেন্ট তৈরি করে তাদের দিতে হবে, বাকি কাজ তারা করবে। আপনার ভিডিও কোয়ালিটি অনুসারে আপনি ৩০ টাকা থেকে আরো বেশি আয় করতে পারবেন।
নিজের চ্যানেলে কনটেন্ট তৈরি করে ঃ আপনি নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন নিশ নিয়ে কনটেন্ট বানিয়ে আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি গুগল এডসেন্স, পেইড প্রমোশন, স্পন্সর ইত্যাদি উপায়ে আয় করতে পারবেন। এইভাবে মূলত আপনি ইউটিউব জার্নি শুরু করে দিতে পারেন।
২. লেখালেখি করে আয়ঃ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি আমি নিজেই আমার প্রথম ইনকাম করি এই ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে আয় করার মাধ্যমে। কোনো প্রকার অভিজ্ঞতা ছাড়া এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের লেখা আর্টিকেল পাবলিশ করতাম, এভাবে আমি ধীরে ধীরে লেখালেখিতে দক্ষ হই। আপনিও চাইলে Grathor ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখে বিকাশে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
তাছাড়া লেখালেখিতে ভালো দক্ষতা থাকলে বিভিন্ন ব্লগ সাইট থেকে আপনার কাছে আর্টিকেল লেখার অফার আসবে। পরিশেষে আপনি নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে তাতে যেকোনো নিশ এর উপরে আর্টিকেল লিখে গুগল এডসেন্স, এফিলিয়েট মার্কেটিং, পেইড প্রমোশন ইত্যাদি উপায়ে আয় করতে পারবেন। আমার রেকমেন্ড থাকবে আপনারা লেখালেখি করার কাজটি শুরু করুন। এতে দ্রুত আপনারা একটি সুন্দর ক্যারিয়ার গড়তে সক্ষম হবেন। কয়েক মাস কাজ করলে আপনি দক্ষ লেখক হতে পারবেন। আর আরো একটি ভালো লাগার মতো বিষয় হলো লেখালেখির ক্যারিয়ারে আপনাকে কোনো প্রকার বিনিয়োগ করার দরকার নেই। শুধু নিজের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে নিজের ইচ্ছেমত যেকোনো বিষয়ের লিখে অর্থ আয় করতে পারবেন।
৩. ই কমার্স বাণিজ্য: মানুষ যেভাবে প্রতিনিয়ত অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ছে, তাই বলা যায় যে অনলাইনে ব্যবসা করাটা অবশ্যই লাভজনক হতে পারে। আর আমাদের দেশে ইকমার্স শিল্পের উন্নয়ন ঘটছে সময়ের সাথে সাথে। কেননা এখনও এই দেশে ৯০ শতাংশ ব্যবসায়ী অফলাইন ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সেক্ষেত্রে অনলাইন বাজারে প্রতিযোগিতা বেশ কম বলা চলে। তাই এই সুযোগে আপনি চাইলে নিজের ক্যারিয়ার অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করার মাধ্যমে করতে পারেন। তবে যেকোনো ব্যবসা শুরুর আগে প্রশ্ন আসতে পারে ভবিষ্যৎ সম্ভবনা কিংবা নানান পরিসংখ্যান নিয়ে। এক্ষেত্রে চাইলে নিচের আর্টিকেলটা পড়ে আসতে পারেন।
সর্বশেষ পরামর্শ: বন্ধুরা এই ৩ উপায়ে আপনারা চাইলে নিজের অনলাইন ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন। অনলাইন প্লাটফর্মে আয়ের নানাবিধ উপায় থাকলেও এই উপায়গুলো সবসময়ের মতো সেরা। এই পর্যন্ত ছিল আজকের আর্টিকেলটা, কেমন লাগলো জানাবেন। ভালো লাগল অন্যদের মাঝে শেয়ার করে দিন। আল্লাহ হাফেজ।