এক সময়ে এক গ্রামে বাস করতো ২ ভাই। তাদের মধ্যে যে বড় তার নাম কাশেম, আর যে ছোট তার নাম কালু। তারা তাদের বাবার রেখে যাওয়া জমি সমান ভাবে ভাগাভাগি করে চাষ করতো। কিন্তু কালুর বড় ভাই ছিল লোভী। সে বাজারের পাশে একটা খাবারের দোকান দিয়েছিল।
দোকানের নাম কাশেম্পুরি। সেই দোকানে অনেক ভালো খাবার পরিবেশন করা হতো। তার দোকানে এজন্য অনেক কাস্টমারের ভির লাগতো। এদিকে কালু তার ভাগের জমিতে চাষ করে ভালোই রোজগার করতো।
কিন্তু কাশেম তার দোকানে এতো কাস্টমার দেখে ভাবে, যদি সে তার খাবারের উপকরণ কমদামে কিনে খাবার তৈরি করে, তাহলে টাকাও বাচবে আর অনেক লাভ করবে। তাই কাশেম তার খাবার তৈরির উপকরণ কমদামে কিনে খাবার তৈরি করলো।
এর ফলে যেই কাস্টমার তার দোকানের খাবার খাচ্ছে সবারি পেটের অসুখ ধরা পড়তেছে। এই ঘটনা দেখে কাশেমের ছোট ভাই কালু তাকে বলল, ভাই তুমি খাবারের উপকরণ কেন কমদামে কিনে খাবার বানাচ্ছ। এর ফলে অনেক কাস্টমারের পেটের অসুখ ধরা পড়তেছে।
এই কথা শুনে কাশেম কালুকে বলে, তোমার এতো জ্ঞান আমাকে দিতে হবে না। এই দোকানটা আমার। তাই আমি কি দিয়ে খাবার বানাবো সেটা দেখা আমার কর্তব। তাই তুমি এই দোকানের বিষয়ে একটাও কথা বলবে না।
এইকথা শুনে কালু মনে অনেক দুঃখ পেল। আর বলল, ঠিক আছে ভাই আমি তোমার দোকানের বিষয়ে একটাও কথা বলবোনা। তুমি মাথায় রেখ মানুষের ক্ষতি করতে নেই।
কিন্তু কালু তার ভাইকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটা মাথায় বুদ্ধি বের করলো। বুদ্ধিটা হচ্ছে, তার ভাইয়ের দোকানের পাশে সেও একটা খাবারের দোকান দিবে। এই বুদ্ধি অনুযায়ী কালু একটা দোকান দিলো।
আর দোকানে অনেক ভালো খাবার পরিবেশন করলো। প্রত্যেকে কালুর খাবার খেয়ে অনেক প্রশংসা করতে লাগলো। এদিকে কাশেমের দোকানে একটাও কাস্টমার নেই। কাশেম রাগ করে তার ভাইকে বলল, কালু আমি যে দোকান দিছি তাই তোমার হিংসে হচ্ছিলো তাইনা? তাই তুমি আমার রোজগার বন্ধ করতে এই খাবারের দোকান দিয়েছ।
কাশেম আরও বলল, “তোমার দোকান বন্ধ করার কাজ আমি করতেছি”। কালু বলল, “কি করবে দেখা যাবে। আমি আমার দোকান বন্ধ করব না”। এই কথা শুনে কাশেম আরও রেগে গেলো। আর কাশেম ঠিক করলো কালুর দোকানে আগুন লাগিয়ে দিবে। এর জন্য কয়েকজন গুন্ডা ভাড়া করলো। তাদের বলল, “কালুপুরি দোকানে আগুন ধরিয়ে দিলে ৫ হাজার টাকা পাবে”।
এই কথা কালুর চামচা রাকেস শুনে ফেললো। আর সাথে সাথে কালু কে জানিয়ে দিলো। কালু রাতে বুদ্ধি করে তার দোকানের সাইনবোর্ড আর তার ভাইয়ের দোকানের সাইনবোর্ড পালটে দিলো। এর ফলে কাশেমের দোকানের সাইনবোর্ড কাসেম্পুরি হয়ে গেলো কালুপুরি। কালুর দোকানের সাইনবোর্ড হয়ে গেলো কাসেম্পুরি।
রাতে গুন্ডারা কালুপুরি দোকান দেখে আগুন ধরিয়ে দিলো। এদিকে কাসেম তার বাড়িতে নাকডেকে ঘুমাচ্ছে। আর তার দোকান পুরো আগুনে পুড়ে গেছে। দিন হলো আর কালু তার দোকান ভালোই চালাচ্ছে। কাসেম কালুর দোকান ভালো দেখে হঠাৎ তার চোখ গেলো নিজেরি দোকানে। সে দেখে তার দোকান পুরো পুড়ে গেছে।
সাথে সাথে কাশেম কান্না করতে লাগলো। কারণ, তার চাষ করা জমি বিক্রি করে সে এই দোকান দিয়েছিল। এখন সে কীভাবে খাবে।
কাশেমের ছোট ভাই কালু তাকে বলে, ভাই কান্না করার কিছুই নেই অন্যের ক্ষতি করতে চাইলে নিজেরি ক্ষতি হয়। আর কেদনা আমার দোকানে আমরা দুই ভাই মিলে মিশে কাজ করে খাবো।
তো বন্ধুরা কি বুঝলে? কারো ক্ষতি চাইলে নিজেরি ক্ষতি হয়, তাই না?
সকলকে ধন্যবাদ।