শহরে গিয়ে অমিত নতুন ভাবে একটা দোকান চালু করলো। জাকজমকপূর্ণ। দোকানটি চলছিলও বেশ। সময় বদলেছে। নতুন জায়গায় সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পাল্টাছে। নতুন স্টাইল, নতুন জামাকাপড়, নতুন বন্ধু-বান্ধব সবকিছু। কিন্তু অমিতের স্বভাবটা একটুও পাল্টায়নি। স্ত্রীকে সেই একই পুরানো গালাগালি আর মারধর আছেই।
দিনগুলি গড়িয়ে যাচ্ছিল। অনেকটা নিরামিষ গিতিতে। অমিত তার দোকান চালায়, বীণা তার সংসার সামলায়।
সে এখন ৩০ বছরের যুবতি। আগের মতোই কমনীয় আর রুপবতী।
একদিন সন্ধ্যায় অমিত এসে দেখে বীণা হাসছে।
শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে সে তাকে জিজ্ঞেস করল, “স্টুপিডের মতো হাসছো কেন?”
বীণা তার দিকে ছুটে এসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
অমিত একটু বিরক্তির সূরে বলল, “ হচ্ছে কি এটা!”
“আমি গর্ভবতী।” বীণা আদুরে গলায় বলল।
“কি? কি বললে?” অমিতের রুক্ষতা।
“আমি কি বলেছি তুমি ভালো করেই শুনেছা। আমি গর্ভবর্তী। তুমি বাবা হতে চলেছো।” বীণা অমিতের শার্টের খোলা বোতাম গুলো নিয়ে খেলতে খেলতে আবগী কন্ঠে বলল।
“তুমি কি পাগল নাকি! আমাদের কোন সন্তান হোক আমি চাই না।” অমিত তার লিকলিকে মেদহীন শরীরটাকে ওর কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে শার্টটা খুলতে খুলতে কথাটা বললো।
“কেন?” বীণা টলমল চোখে জিজ্ঞেস করলো।
“কারণ আমি সন্তান চাই না।” অমিত তার প্যান্টের বেল্ট খোলায় মনোযোগ দিল।
“কিন্তু আমি ভেবেছিলাম……” অমিতের চোখে রাগান্বিত চেহারা দেখে বীণা চুপ হয়ে গেলো।
কিন্তু বীণা হাল ছাড়বার পাত্র নয়; সে নিজেকে তার স্বামীর কাছে প্রিয়জন হয়েই বাঁচতে চায়, বিছানার কোন যৌন সঙ্গী হিসাবে দেখতে নারাজ।
অমিত মন খারাপ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে জুড়ার ফিতা খুলতে লাগলো।
বীণা অমিতের পায়ের কাছে গিয়ে বসলো। তার পা কোলে তুলে নিয়ে সে জুতা খুলে দিলো। “অমিত প্লিজ, আমাকে মা হতে দাও!” বীণার কন্ঠে মা হওয়ার আকুতি। “জীবনে আমি তোমার কাছে আর কিছুই চাই না।”
কথাটা কানে যেতেই অমিত বীণাকে একটা জোরে লাথি মারলো। পাগলা ষাঁড়ের মতো কাঁপতে কাঁপতে বীণার লম্বা রেশমী চুল টেনে ধরে অমিত বললো, “এই সন্তান আমি চাইনা এবং তুমি এর জন্ম দেবে না।” বলেই কষে একটা চড় মারলো। বীণার নিচের ঠোঁট দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল।
চোখে পানি ফেলতে ফেলতে বীণা অমিতের দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল যেন কিছুই হয়নি।
পরের দিন একটা ক্লিনিকে গিয়ে বীণা বাচ্চাটাকে গর্ভপাত করায় এবং কিছু দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে যেন কিছুই হয়নি।
ঘটে যাওয়া ঘটনাকে ক্রমে ক্রমে সে ভুলে গেল, সে ভুলে গেল যে সে অন্য মানুষের মতোই একটা মানুষ, সে ইতিমধ্যে জেনে গেছে যে তাকে অন্য মানুষের মতোই যন্ত্রের মতো বাঁচতে হবে। স্বামীকে সেবা আর তার বিছানার যোগ্য সঙ্গী হতে হবে। …..(চলবে)