Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

অশ্রুর সত‍্যিকার জীবনের গল্প

মা বাবা কেন জানি নাম রেখেছিল অশ্রু।নামটা সুন্দর ও সতেজ তাতে সন্দেহ নেই।কিন্তু সন্দেহ একটি জায়গায়।মানুষের নাম নাকি তার জীবনে প্রভাব ফেলে।যদিও সেটার প্রমাণ এখনো পায়নি অশ্রু।গলাবাড়িয়ে কাঁদার স্বভাব তার নেই।সে অনেকটা সাহসী আর সত‍্যিকার মানুষের প্রতীক।

হ‍্যা, অশ্রু কালো এবং অশ্রু খাঁটো।হ‍্যা,অশ্রুকে অনেকদিন ধরে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে পরিবার থেকে।হ‍্যা অশ্রুকে শত সহস্র বার যেতে হয়েছে..পণ‍্যের মতো..ছেলে পক্ষের সামনে।কেউই শেষ পর্যন্ত পছন্দ করে নি তাকে।বাংলাদেশি ছেলেরা ফর্সা লম্বা মেয়ে খুঁজে..নিজে দেখতে যাই হোক না কেন।একবার এক ছেলে প্রায় রাজি হয়ে গিয়েছিল।কিন্তু যৌতুক চেয়েছিল ব‍্যাপক আকারে,যা দেওয়ার সামর্থ ছিল না তাদের।তাই আর হলো না।একবার এক ষাট বছরের বুড়ো পর্যন্ত বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল তাকে,তার বিয়ে হয়না দেখে।সত‍্যিই কত অদ্ভুত জীবন তার!!মনে মনে ভাবে সে।একটা চাকরির চেষ্টা করে যাচ্ছে সে।তবুও মা সবসময় বলেন সংসার না করলে মেয়েদের জীবনে কিছুই নেই।তাতেই এই বিয়ের চেষ্টা।

আজ চব্বিশ বারের মতো ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে তাকে।আবার সেই সাজগোজ আবার সেই কাহিনী।মা তাকে অনেকবার সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে আসতে বলেছে।অনেকবার বিদেশে তার যে মামা থাকে সে রং ফর্সা করা ক্রিম পাঠিয়েছে।কিন্তু কয়লা ধুলে কি ময়লা যায়?

লাল রংয়ের শাড়ি আর লাল রংয়ের লিপস্টিক,অনেক স্নো,অনেক পাওডারের পর যখন প্রস্তুতি শেষ হলো একটু পর এসে পৌছালো ছেলেপক্ষ।পৃথিবীর সবচেয়ে দামি পক্ষ।ছেলের মা,বাবা, বড়,ভাই,ভাবি কে আসেনি দেখতে…অশ্রু এর মনটা খারাপ হয়ে গেল..ছেলে একা আসলেও পছন্দ করার চান্স থাকে কিন্তু এত মানুষ..একেকজনের পছন্দ একেক রকম তাই স্বভাবতই মেয়ে পছন্দ হয়তো হবে না তাদের।অবশ‍্য এতদিন পর যদি এটা নিয়ে মন খারাপ করে তাহলে আসলেই কিছু বলার নেই নিজের মনকে..মনে মনে ভাবলো অশ্রু।

-অশ্রু চল।ওইঘরে ছেলেরা অপেক্ষা করছে।

-হ‍্যা যাই।

অশ্রু সামনে গেল তাদের।

-আসসালামুআলাইকুম

-অআলাইকুম আসসালাম।বললো ছেলের বাবা।

-মুখটা তোল তো দেখি মা।কথা বলি।

মুখটা তোলার পর পরই অশ্রু দেখল ছেলের মায়ের মুখ ভার।

-ঘটক যে ছবি দিয়েছিল তাতে তো বেশ ফর্সা লাগছিল।এখন দেখি একটু কালো তুমি।

-একটু না আমি কালো।কিন্তু আপনিও তো কালো অ‍্যান্টি।হঠাৎ কি যেন হয়ে গেল অশ্রুর ভেতরে।মুখের উপর উত্তর দিয়ে ফেললো।

-অশ্রু!!!!বাবা মা একসাথে আঁতকে উঠলেন।কিন্তু কিছু করার নেই এখন আর।প্রতিবাদ যখন করেই ফেলেছে প্রতিবাদী হওয়াটাই শিখবে সে।এইরকম ছেলেপক্ষের মুখের উপর উত্তর দিতে তার তেইশটি ছেলে পার করা লেগেছে।

ছেলেপক্ষরা কিছু বলে নি।উঠে চলে গেছে এরপর।

দুইদিন পর অশ্রুর প্রথম চাকরির লেটার এলো।হয়তো তার বিয়ে করা হবে না,হয়তো তার সংসার হবে না..তাতে কি আসে যায়?সত‍্যিটা তো এটাই যে তার নাম তার জীবনে প্রভাব ফেলতে পারেনি।নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে,নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে বাবা মাকে সাহায‍্য করাটাই তো তার জীবনের প্রাপ্তি।

Related Posts

6 Comments

  1. অশ্রু যে শুধু ক‌ষ্টের হয় তা কিন্তু নয় , আনন্দরে অশ্রুও ‌কিন্তু হয় ।

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No