রাজ ছিলো তানিয়ার থেকে ৩ বছরের ছোট।
প্রথমের দিকে মেয়েটিকে রাজ আপু বলেই সম্মোধন করতো।আর তানিয়াও কখনো তাকে নিয়ে বেশি কিছু ভাবে নি।সাধারণত জুনিয়র হিসেবেই দেখতো।তানিয়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো।আর রাজ ডিপ্লোমা করছিলো।তো যাই হোক এ পর্যন্ত সব ভালোভাবেই চলছিলো।কিন্তু যেটা হয় রাজ ও তানিয়া বেশিরভাগ সময়ই একে অপরের সাথে কথা বলতো,কখনো রাজ ফোন দিতো, কখনো তানিয়া।
তবে তাদের ফেসবুকেই বেশি কথা হতো।দিন ও রাতের বেশির ভাগ সময়ই তাদের কথা চলতোই।এভাবে কেটে যায় প্রায় ২ মাস।ঠিক তারপর হঠাৎ করেই রাজ ফেসবুকে আসা বন্ধ করে দেয়।ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেয়।বেশ কয়েক দিন তানিয়া তার সাথে কোন ভাবেই যোগাযোগ করতে পারে নি।৩দিন পর রাজ ফেসবুকে আসলো আর তানিয়া রেগে অনেক কথা শুনিয়ে দিলো।কেন তুই আসিস নি?কেন তোর ফোন বন্ধ?তুই কালকে আমার সাথে দেখা করবি যদি কাল তরে না পাইছি তুইও আমারে কোনদিন পাবিনা বলে অনলাইন থেকে চলে গেলো।তারপর কাল তারা কাল নদীর পাড়ে বসে দেখা করলো।আর পাশাপাশি বসলো তারপর দুজনেই কিছুক্ষন চুপ থাকার পর।
তানিয়া ঃ তুই ফালতু,ফাতরা একটা পোলা অনেক বকাবকি শুরু করতেই রাজ বলে উঠলো। “আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
যেন আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়লো তানিয়ার।অনেক বড় একটা শক খেয়ে বসলো। সে তো কখনো ভাবেই নি যে রাজ তাকে নিয়ে এসব ভেবে বসে আছে।তানিয়ে শুধুই তাকে অনেক কাছের জুনিয়র ভাবতো।এর বেশি না।কিন্তু রাজের রাজের কথার কোন উত্তর আসলো না অনেক্ষণ।যেন সব কিছু থমকে গিয়েছে।তারপর রাজ বলা শুরু করলো। আমি আপনাকে ভালোবাসি ঠিকি কিন্তু আপনাকে পাওয়ার আশা আমি কোনদিনও করি নি। কোনদিন ভাবিনি আপনাকে নিয়ে সপ্ন দেখবো।কোনদিন ভাবিনি আপনি আমার গার্লফ্রেন্ড হবেন।কারন আমি বাস্তবতা বুঝি,কারন আমি জানি কোনভাবেই এইটা সম্ভব না একটা মেয়ের পক্ষে যে সে একটা জুনিয়র এর সাথে প্রেম করবে।আমি জানি এসব।কিন্তু তারপর ও ভালোবাসি।জানিনা কেন!!
অনেক চেষ্টা করেছি শেষ কয়েকদিন কিন্তু আপনাকে ভালোবাসা থেকে নিজেকে আটকাতে পারিনি আমি।অনেক বার আমি চেষ্টা করেছি যে আপনি যেন আমার চিন্তাতেও না আসেন,সব সময় যেন আপনাকে না মনে হয়।এই কয়দিন আমি এসব চেষ্টাই করেছি।কিন্তু বিশ্বাস করেন প্রত্যেকবার আমি ব্যর্থ হয়েছি৷যখনি আমি আপনাকে ভুলে যাবো বলে চোখ বন্ধ করেছি ঠিক ততবারই আমি আপনাকে দেখেছি।আমি নিজেই বুঝতে পারিনি আমার মধ্যে এতটা চেঞ্জ কিভাবে এসেছে।যেই আমি মেয়ে দেখলেই তার পেছনে দৌড় দিতাম,যে আমি শুধু মেয়ে নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম।আজ সেই আমি কোন সুন্দরী মেয়ে ম্যাসেজ করলে তা সিন করেও দেখি না।সেই আমি কোন মেয়ের পেছোনে যাওয়া তো দূর,কোন মেয়ের দিকে তাকাতেও ইচ্ছে করে না আমার।
অবশেষে আমার সব প্রশ্নের জবাব আমার মন আমাকে দিলো।কিন্তু আমার মনের দেওয়া উত্তর টা আমার মাথাও কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিলোনা যেমন আপনি পারবেন না। কিন্তু আমার মন ও মাথার যুদ্ধে মন জিতে গেছে, তাই আপনাকে এসব বলতে পারছি।আসলে এই কয়দিন একটু একটু করে সাহস সঞ্চয় করেছি আপনাকে কথা গুলো বলবো বলে।তারপরও চেষ্টা করেছি আমার মনকে ভূল প্রমাণ করতে কিন্তু পারিনি আমি। আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।জানেন আপনার কাছে আজ কোন উত্তর চাইবো না।আপনার কাছে আজ আমি শুধু মাত্র একটা জিনিস চাইবো তা হলো আপনি আমার সাথে ততদিন পর্যন্ত কথা বলেন যোগাযোগ রাখেন যতদিন পর্যন্ত আপনি সারাজীবনের জন্য অন্য কারো না হয়ে যাচ্ছেন।(কষ্টের নিশ্বাসের সাথে) এই বলে সে শেষ করলো এবং দীর্ঘ একটা শ্বাস নিলো।
আর তানিয়া শুধু হা করে সব শুনে গেলো।যেন সে তার কথার মধ্যে ডুবে ছিলো।সে চাইলেও যেন কোন কথা মুখ থেকে বের করতে পারছিলো না।কি বলবে? কেন বলবে? কিভাবে বলবে সব ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছে শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে।সে এরকম ভাবে ৫ মিনিট চুপ ছিলো তানিয়া রাজের কথা শোনার পর।তারপর তানিয়া বলে উঠলো কিভাবে সম্ভব এটা?রাজ বললো আমি তো বললামই এইটা সম্ভব না।তখন তানিয়া বলে উঠলো আরে গাধা তুই আমাকে এত ভালোবাসতে কিভাবে পারিস এইটা কিভাবে সম্ভব?
তুই জানিস আমি তোর সিনিয়র তাও কিভাবে এত ভালোবেসে ফেলতে পারলি? কেন এত ভালোবাসলি আমাকে পাবি না জেনেও কেন এই ভূলটা করলি রাজ?