আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আজকে আমি আউটসোর্সিং ও ফ্রিলান্সার তার ধারনা পোষ্ট করব। আশা করি সবার পোষ্টটি ভালো লাগবে। পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই সবাই শেয়ার এবং কমেন্ট করে জানাবেন।
♦ আমরা সবাই জানি, বর্তমান এ ইন্টারনেট আমাদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে থাকে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন ভাবে উপার্জন করে থাকি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আউটসোর্সিং। বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের বাজার উন্মুক্ত করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। ইন্টারনেট ব্যবহার করে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে এক দেশে বসেই অন্য দেশের কোন কাজ করা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশ তাদের অনলাইন নির্ভর কাজগুলি অন্যান্য দেশের লোকজন দিয়ে করিয়ে থাকে। এই ধরনের কাজকে আউটসোর্সিং বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে, আউটসোর্সিং হচ্ছে কোন প্রতিষ্ঠান এর কাজ নিজেরা না করে তৃতীয় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর সাহায্যে করিয়ে নেওয়া।
♦আউটসোর্সিং এখন শিল্পে পরিণত হয়েছে। আউটসোর্সিং শিল্পকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের শিক্ষিত বিরাট জনগোষ্ঠী এখন অর্থ উপার্জন করতে পারছে। আউটসোর্সিং এখন অনেকেরই পেশা হিসাবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিবছর আউটসোর্সিং হতে কয়েক মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারছে। শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী এই শিল্পকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ গুলো ইন্টারনেট প্রযুক্তিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করছে। উন্নত দেশের মত বাংলাদেশেও অনেকে এই খাতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে বহু লোক সম্পৃক্ত হচ্ছে বিভিন্ন কাজে, সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান।
♦আউটসোর্সিং এর অন্যতম হচ্ছে ফ্রিলান্সার। ফ্রিলান্সার হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি কোন প্রতিষ্ঠান এর সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি ছাড়া কাজ করেন। একজন ফ্রিলান্সারের যেরকম রয়েছে কাজের ধরন নির্ধারণ এর স্বাধীনতা, তেমনি রয়েছে যখন ইচ্ছা তখন কাজ করার স্বাধীনতা। গতানুগতিক ৯টা-৫টা অফিস সময়ের মধ্যে ফ্রিলান্সার সীমাবদ্ধ নয়। ইন্টারনেটের কল্যাণে ফ্রিলান্সিং এখন একটি নির্দিষ্ট স্থানের সাথেও সম্পর্কযুক্ত নয়। কারো কাছে যদি ইন্টারনেট সংযোগ সহ একটি কম্পিউটার থাকে তাহলে সে যেকোনো জায়গাতে বসেই ফ্রিল্যান্স ও আউটসোর্সিং এর কাজগুলো করতে পারে। ওয়েবসাইট তৈরি, থ্রিডি এনিমেশন, গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ছবি সম্পাদনা, ডাটা এন্ট্রি, লেখালেখি করা, কোন পন্যের বাজার খুঁজে দেওয়া, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করা, ডেটা বিশ্লেষণ করা ইত্যাদি সহ আরো অনেক কাজ এই পদ্ধতিতে করা সম্ভব।
♦আউটসোর্সিং বা ফ্রিলান্সিং কে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতি তথা ব্যক্তি অবস্থার মান উন্নয়ন করা সম্ভব। শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য আউটসোর্সিং একটি আর্শিবাদ। এ শিল্পে ট্রেনিং এর মাধ্যমে একজন প্রতিবন্ধীও স্বাবলম্বী হতে পারে। উন্নত বিশ্ব আউটসোর্সিং এ অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশেও এই অনলাইন নির্ভর শিল্পটিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আউটসোর্সিং বিষয় এ প্রশিক্ষন এর জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। হয়ত অদূর ভবিষ্যৎ এ বাংলাদেশের কয়েক কোটি লোক এই শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত হবে। এতে করে বেকারত্ব গুছিয়ে দেশ আয় করবে প্রচুর পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা, তৈরি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থান। বিশেষজ্ঞরা ধারনা করেছেন যে, এই খাত বিকশিত হলে তা দেশের গার্মেন্টস শিল্পখাতকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখন হয়ত দেশে শিক্ষিত বেকার খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য হবে।। বিশ্বব্যাপী আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে পায়োনের ও ফ্রিলান্সার ডটকম ইত্যাদি খুবই জনপ্রিয়।
♣সবশেষে বলা যায়, আধুনিক বিভিন্ন প্রযুক্তি আমাদের দেশকে ও আমাদের দেশের জাতিকে করেছে উন্নত। আউটসোর্সিং আমাদের দেশের শিল্প খাত গুলোকে করেছে বিকশিত যার কারনে খুব তাড়াতাড়িই দূর হতে চলেছে বেকারত্ব সমস্যা। অর্থাৎ আউটসোর্সিং দেশের জন্য ও দেশের মানুষ এর জন্য আর্শিবাদস্বরূপ।