অনেকেই এই কমন প্রশ্নটি করে থাকেন ভাই আমার হোয়াটসঅ্যাপ খুলছে না কেন ? কিভাবে কি করবো ? তাই আজকের পোস্টে আমরা হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি। হোয়াটসঅ্যাপ কি, কিভাবে ব্যবহার করবেন, ব্যবহার করার সময় কতিপয় সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।
হোয়াটসঅ্যাপ কি?
হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত অনলাইন মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন। হোয়াটসঅ্যাপের বর্তমান মালিক হচ্ছে ‘মেটা’ (তৎকালীন নাম ফেইসবুক)। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে হোয়াটসঅ্যাপের যাত্রা শুরু হয় আর বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে ৫ বিলিয়নের অধিক ডাউনলোড রয়েছে।সারা বিশ্বে হোয়াটসঅ্যাপের দুই বিলিয়নেরও অধিক সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। এখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত আরও জানুন
আমরা কেন হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করি?
হোয়াটসঅ্যাপ মূলত একটি মেসেজিং এপ বা মেসেঞ্জার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দেশে বিদেশে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে সংযুক্ত থাকার জন্যই আমরা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করি। যদিও রিসেন্টলি হোয়াটসঅ্যাপে নিজের কাস্টমার বা কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য হোয়াটসঅ্যাপের আরেকটি আ্যপ্লিকেশন ‘ হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস ‘ চালু হয়েছে।
আপনি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে থাকা যেকোনো বন্ধু বা ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন যদি আপনার শুধুমাত্র একটি সচল ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক বা কোনো ইন্টারনেট কানেকশন থাকে। হোয়াটসঅ্যাপ সবার প্রিয় হওয়ার মূল কারণ হলো হোয়াটসঅ্যাপে সাইন আপ করা খুবই সহজ কোনো ঝামেলা নেই কেবল মাত্র আপনার মোবাইল নাম্বার দিলেই একাউন্ট ওপেন হয়ে যাবে। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করার জন্য আপনাকে কোনো টাকা দিতে হবে না বা কোনো রকমের আ্যডের সম্মুখীন হতে হবে না। এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ অনেক নিরাপদ ও সিকিউওরড।
আপনি হোয়াটসঅ্যাপে মাধ্যমে যে ফোনে কথা বলবেন তা৷ ‘End to End Encrypted’ এর অর্থ হলো আপনি আপনার বন্ধু বা কলের অপর পাশের ব্যক্তির সাথে কি কথা বলছেন তা কেউ জানতে পারবে না। এমনকি স্বয়ং হোয়াটসঅ্যাপও আপনারা কলে কি কথা বলেছেন তা জানে না বা জানতে পারবে না। আর তাদের কাস্টমার কেয়ারও অনেক ভালো। আপনার কোনো প্রকার সমস্যা হলে আপনি তাদের ‘Frequently Asked Qestion’ সেকশনে গিয়ে তার সমাধান দেখতে পারেন। আর তাতে যদি আপনার না হয় তবে আপনি তাদের কাস্টমার সার্ভিস প্রতিনিধিকে আপনার সমস্যা সম্পর্কে জানাতে পারবেন আর তারা আপনার সমস্যা ঠিক করতে কাজ করবেন।
হোয়াটসঅ্যাপে কি কি ধরণের সমস্যা হয়?
হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কিছু সমস্যার মধ্যে রয়েছে লগিন সমস্যা, সাইন আপ বা লগিনের সময় ভেরিফিকেশন কোড না আসা, মেসেজ পাঠাতে সমস্যা ইত্যাদি।
লগিন সমস্যা:
লগিন বা সাইন আপ করার সময় কোনো এরর আসলে বা সমস্যা হলে প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ আ্যপটি কেটে কিছুক্ষণ পর পুনরায় প্রবেশ করুন। সমস্যা যদি আবার দেখতে পান তাহলে হোয়াটসঅ্যাপের ডাটা ক্লিন করুন কিংবা ফোর্সড স্টপ করুন। তাতেও যদি কাজ না হয় তাহলে তাদের কাস্টমার সার্ভিসকে জানান।
ভেরিফিকেশন কোড সমস্যা:
আপনি লগিন বা সাইন আপ করার সময় দেখতে পারেন যে আপনার ভেরিফিকেশন কোডটি আসছে না। সেক্ষেত্রে আবার চেষ্টা করুন। যদি তবুও না আসে তাহলে আ্যপটির ক্যাচ ডাটা ক্লিয়ার করুন। এবং আধা-এক ঘণ্টা পর পুনরায় চেষ্টা করুন। কোড না আসার মূল কারণগুলো হচ্ছে হয় হোয়াটসঅ্যাপের সার্ভার খুবই বিজি তাই মেসেজ পাঠাতে পারে নি অথবা আপনার নেটিওয়ার্কে সমস্যা বা আপনার মোবাইল কোনো কারণে ভেরিফিকেশন কোডটিকে স্প্যান মনে করেছে ও ব্লক করে দিচ্ছে।
মেসেজ যায় না:
অনেক সময় দেখা যায় মেসেজ ডেলিভার্ড হয় না। সেক্ষেত্রে আগে চেক করুন যে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নতুন ভার্সনে আপডেটেড কি না। না হলে অবশ্যই করে নিন। এছাড়াও আপনি চেক করে দেখতে পারেন যে আপনার ওয়াইফাই বা ইন্টারনেট কানেকশন ঠিক আছে কিনা।
আসল প্রশ্ন আমার হোয়াটসঅ্যাপ খুলছে না কেন ? চালু না হওয়ার কারণ কি?
মাঝে মাঝে দেখতে পাবেন যে হোয়াটসঅ্যাপ চালু হচ্ছে না। এর বেশ কিছু কারণ হতে পারে। আপনার নেটওয়ার্ক কানেকশন স্টেবল না বা নেট ভালোভাবে চলছে না। সেসময় আপনি হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া কিছুক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের সার্ভার খুবই স্লো কাজ করলে প্রবেশ করা যায় না। এছাড়াও আপনার ফোনের ভিতরে সমস্যা হতে পারে। যেমন ব্যাকগ্রাউন্ডে আরো আ্যপ চালু আছে যা আপনার ফোনকে স্লো করে দিচ্ছে।
হোয়াটসঅ্যাপ চালু না হলে কি করবেন?
হোয়াটসঅ্যাপ চালু না হলে আপনি হোয়াটসঅ্যাপের ক্যাচ ডাটা ক্লিয়ার করবেন ও আপনার ওয়াইফাই বা ইন্টারনেট অফ করে আবার অন করবেন। তাহলেই ঠিক হয়ে যাওয়ার কথাম এছাড়া মোবাইলও রিস্টার্ট করে দেখতে পারেন। এর পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ডে যে আ্যপগুলো আছে তা কেটে ফেলুন। তবুও কাজ না হলে কাস্টমার সার্ভিসে জানান।
হোয়াটসঅ্যাপের কিছু গোপন ট্রিকস:
আপনি মেসেজের শব্দগুলোকে চাইলে বোল্ড অক্ষরে লিখতে পারবেন। অক্ষর বোল্ড করার জন্য শব্দ বা শব্দসমূহের উভয় পাশে তারকা চিহ্ন (*) যোগ করুন। তাহলেই হয়ে যাবে। আর যদি স্ট্রাইকথ্রু করতে চান তাহলে উভয় পাশে টিল্ডস (~) যোগ করুন। আপনি চাইলে ভয়েস মেসেজের প্লেব্যাক স্পিড বাড়াতে বা কমাতে পারবেন।
প্রথমে ভয়েস মেসেজটির উপর চাপ দিন। তারপর 1x আইকনে চাপ দিন। তাহলে প্লেব্যাক স্পিড 1.5x হয়ে যাবে। আর যদি দুই বার ক্লিক করে থাকেন তাহলে প্লেব্যাক স্পিড 2x হয়ে যাবে। আপনি যেসকল মেসেজ পড়ার সময় পাননি বা আপনি যদি ব্যস্ত থাকেন তাহলে সেসকল মেসেজসমূহকে আপনি অপঠিত চিহ্নিত করতে পারবেন। এর জন্য মেসেজটির উপর চাপ দিন ও ‘Mark as Unread’ এ ক্লিক করুন।
পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।