২০২০ সালে ই পাসপোর্ট কর্মসূচি উদ্বোধনের পর থেকে আমাদের প্রত্যেকের মনে ই পাসপোর্ট নিয়ে নানান জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। আপনাদের মধ্যে অনেকে ই পাসপোর্ট এর বিষয়ে কম বেশি জানেন। অনেক প্রবাসী ভাই ইমেইল করেছেন যে – আমি প্রবাসী ই পাসপোর্ট কিভাবে পেতে পারি?
তবে যারা একেবারেই কিছু জানেন না তাদের চিন্তার কিছু নেই। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের ই পাসপোর্ট কি, এর সুবিধা কিভাবে পাবেন ইত্যাদি বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। আশা করছি আর্টিকেলটা মনোযোগ সহকারে করলে ই পাসপোর্ট সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর আপনি পেয়ে যাবেন। অনেক কথা হয়ে গেল শুরুতে, চলুন এইবার মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক।
ই পাসপোর্ট কি?
প্রথম আপনাদের বলি, ই পাসপোর্ট এর পুরো রূপ হচ্ছে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (Electronic Passport)। তারমানে বুঝতেই পারছেন এর সাথে ইলেকট্রনিক কর্মকাণ্ড জড়িত আছে।
আমি আপনাদের বিষয়টা কোনো সংজ্ঞা দিয়ে নয় বরং সহজ ভাষায় বুঝানোর চেষ্টা করবো। ই পাসপোর্ট হচ্ছে এমন এক ধরনের ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট যেটি দ্বারা দ্রুত সময়ের মাধ্যমে ইলেকট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে পাসপোর্টধারীর সকল তথ্য যাচাই করা যায়।
একটি সহজ উদাহরণ দ্বারা বুঝাতে গেলে এটিএম আর চেক বই এর কথা ধরা যাক। ব্যাংক থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে আমাদের প্রথমত চেক লিখতে হয়, পরবর্তীতে ব্যাংকে গিয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তার অনুমোদন, সিল, সাক্ষর ইত্যাদি নেওয়ার পর আমরা টাকা তুলতে পারি। কিন্তু এটিএম এ কেবল কার্ড দিলেন এবং কোনো ঝামেলা ছাড়া টাকা তুলে নিলেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ হয়ে গেল। ঠিক এমনি ই পাসপোর্ট এর বিষয়টা।
ই পাসপোর্ট এর সুবিধাঃ
ই পাসপোর্ট এর প্রধান সুবিধা হচ্ছে ঝামেলা ছাড়া যাতায়াতের সুবিধা। ই পাসপোর্ট ছাড়া ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে লাইনে দাড়িয়ে ভিসা চেকিং করে অনুমোদন নিতে হয়। যেটা বলতে গেলে অনেকটা ঝামেলার।
কিন্তু একজন ই পাসপোর্টধারী এসব ঝামেলা ছাড়া ই গেট ব্যবহার করে দ্রুত সময়ে চেকিং করার মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারেন। তবে যদি পাসপোর্ট সংক্রান্ত বা অন্যান্য ঝামেলা থাকে তবে সেই মেশিনে রেড সিগনাল দ্বারা দেখানো হবে।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
আপনি যদি E-passport করতে চান তবে আপনার যেসব ডকুমেন্টস লাগবে সেগুলো হলোঃ
- জাতীয় পরিচয় পত্র।
- জন্ম সনদ।
- ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম।
ই পাসপোর্ট আবেদন কিভাবে করবেন?
E-passport এর জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে এর ফরম নিতে হবে। অতঃপর জাতীয় পরিচয় পত্র তথ্য অনুযায়ী ফরম পূরণ করে সেটি নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর ছবি, দশ আঙ্গুলের ছাপ, আইরিশের ছবি তোলা হয়। এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হবে। সব ঠিক থাকলে আপনার কাজটি সম্পন্ন হবে
ই পাসপোর্ট আবেদন এর ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানলে বাংলাদেশের E-passport বিষয়ক অফিসিয়াল সাইট ভিজিট করুন নিচের লিংক থেকে।
- Link: www.epassport.gov.bd
ই পাসপোর্ট কতদিনের মধ্যে পেতে পারেন?
আবেদনের ক্ষেত্রে যদি আপনার সব ডকুমেন্টস ঠিক থাকে সেক্ষেত্রে আবেদনের পরবর্তী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে আপনার ই পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
ই পাসপোর্ট এর ধরন বা প্রকারঃ
বাংলাদেশে তিন রঙের পাসপোর্ট দ্বারা ইমিগ্রেশন হয়ে থাকে। যথা; সবুজ রঙের পাসপোর্ট, নীল রঙের পাসপোর্ট এবং লাল রঙের পাসপোর্ট।
জন্মসূত্রে অথবা বিবাহ সূত্রে যারা বাংলাদেশের বৈধ নাগরিক তাদের বিদেশ যাতায়াত এর জন্য সবুজ পাসপোর্ট দ্বারা ইমিগ্রেশন কার্য সম্পন্ন করতে হয়। নীল পাসপোর্ট হচ্ছে অফিসিয়াল পাসপোর্ট। অর্থাৎ সরকারি কাজের ক্ষেত্রে যেকোনো সরকারি কর্মকর্তা দেশের বাহিরে ভ্রমণ করলে এই পাসপোর্ট দেওয়া হয়। অপরদিকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যেমন; রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সংসদের বা মন্ত্রিসভার সদস্যরা বা তাদের স্বামী/স্ত্রীদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে লাল পাসপোর্ট পান।
আমি প্রবাসী ই পাসপোর্ট কিভাবে পেতে পারি ? প্রবাস থেকে ই পাসপোর্ট করার উপায়
দেশের বাহিরের যেকোনো দেশ থেকে যদি আপনি ই পাসপোর্ট করতে চান তবে চিন্তার কিছুই নেই। সরাসরি বাংলাদেশের অফিসিয়াল ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করার মাধ্যমে ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
সর্বশেষ
আজকে আপনাদের ই পাসপোর্ট কি এবং ই পাসপোর্ট এর সুবিধা, কিভাবে পাবেন ইত্যাদি বিষয়ে বললাম। আশা করছি e passport বিষয়ে আপনার যত প্রশ্ন ছিল সেসব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। তবুও কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। গ্রাথোরের সঙ্গে থাকুন এবং ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত থাকুন।