এক গুচ্ছ প্রেমের অণুকাব্য
জিয়াউল জিয়া
১.
শীত নেমেছে, হিমেল হাওয়া
বইছে নিরবধি,
নেই ভয় নেই, তোর শরীরের=
উষ্ণতা পাই যদি!
২.
সূর্যটাকে পরিয়ে দিলাম
তোর কপালে টিপ,
তোর নামে আজ রিখে দিলাম
‘হৃদয়’ নামের দ্বীপ!
৩.
এমন শ্রাবণ মাসে,
তোমার ভেজা শরীরের ঘ্রান-
আজও ভেসে ভেসে আসে।
৪.
বুকের মাঝে গুমরে কাঁদে
তোমায় পাবার স্বাদ,
আমায় তুমি বামন ভাবো
নিজেকে ভাবো চাঁদ!
৫.
দুরের মানুষ কাছে টেনে
করলে আমায় পর,
তোমার শরীর আমার স্মৃতির
জ্যান্ত জাদুঘর।
৬.
শোনো মেয়ে, হৃদয় দুয়ার-
আমার মোটেও বন্ধ না,
ক্যামনে তোমায় ভালবাসি?
আমি তো আর অন্ধ না,
যারা করে, তারাই করুক
তোমার রূপের বন্দনা!
৭.
তুই তো আমার মনের উঠানে
নেচে বেড়ানো শালিক,
তুই তো আমার মন আকাশের
একচ্ছত্র মালিক।
৮.
তোমার প্রিয় বর্ষা ঋতু
তাই এর ফলাফল,
তুমি ভীষণ ভালোবাসো
আমার চোখের জল!
৯.
শিশিরসম স্বচ্ছ-নিটোল
তোমার গায়ের ঘাম,
ভাবছি বসে কি দেওয়া যায়
ওই ঘামেরই নাম!
১০.
তুমি আমার আমি তোমার
এই কথাটা মিছা না,
আমার প্রিয় পথের ধুলা
তোমার প্রিয় বিছানা!
১১.
তোমার বুকের মধ্যিখানে
আমার স্মৃতির কবর আছে,
তাই আমাকে ভুলতে চাইলে
প্রিয়া তোমার খবর আছে!
১২.
হারালে কোথায়, খুঁজছি তোমায়
আকাশ থেকে পাতাল,
বোঝো না কেন, আমি যে তোমার=
প্রেমে অন্ধ-মাতাল!
১৩.
মনের রাজ্যে প্রিয়া তুমি
ডেকেছো হরতাল,
তোমার স্মুতির মিছিল, সভায়
আমি বেসামাল।
ছাড়তে পারি গদি,
আমারই হও যদি!
যেন নদীর পাড় ভাঙা গোঙানি
জিয়াউল জিয়া
হৃদয়জুড়ে সে কি এক তোলপাড়
যেন নদীর পাড় ভাঙা গোঙানি!
আমি তোমায় ভালবেসে রোজই-
অনেক দামে কষ্ট কিনে আনি।
আমার ছিলো বড় হওয়ার সাধ
আমার ছিলো স্বপ্ন রাশি রাশি,
ডাস্টার দিয়ে কে মুছে দিলো হায়-
আমার স্বপ্ন, আমার মুখের হাসি।
আমার ছিলো নকশা করা নাটাই
আর যে কতো রঙ-বেরঙের ঘুড়ি,
পড়ে আছে তোমার জন্য কেনা-
লাল-সবুজের মুঠি মুঠি চুড়ি।
আমার ছিলো ছোট্ট খালের বাক
আমার ছিলো খলসে মাছের ঝাঁক,
আমার ছিলো রঙ পেন্সিল খাতা
উঠোনজুড়ে হাজার ব্যাঙের ছাতা।
আমার ভীষন পরতে ইচ্ছে করে-
অনেক দামী লাল রঙের এক জামা,
মাথার উপর সূর্য নিয়ে হাঁটি
হাঁটতে হাঁটতে দরদরিয়ে ঘামা।
আমি বোধহয় গিয়েছি কবেই মরে
হাত-পাগুলো নাড়াতে পারি তাই,
মন চাইলে শরীরটাকে নিয়ে
একটুখানি এদিক-সেদিক যাই।
আমার ভীষণ ভালোভাবে বাঁচতে ইচ্ছে করে
বদ্ধ ঘরে তোমায় নিয়ে নাচতে ইচ্ছে করে,
আমি এখন নিঃস্ব মানুষ জানি,
হৃদয়জুড়ে সে কি এক তোলপাড়
যেন নদীর পাড় ভাঙা গোঙানি!