এক গুচ্ছ মন কাড়া অণুকাব্য
জিয়াউল জিয়া
১.
চালাক শহরে চালাক বাতাস
আমিই শুধু বোকা,
`হাত পেতে নিয়ে চেটেপুটে খাই’
রঙিন যতো ধোঁকা!
২.
আমার ছিল পাখির মতো ডানা
আমার ছিল উড়ে চলার সাধ,
কেউ আমাকে উড়তে করেনি মানা
স্বেচ্ছায় বেছে নিয়েছি অবসাদ।
দোহাই তোমার, আমার শরীরটাকে-
পুড়তে দিও না আর কারো উত্তাপে,
তুমিহীনা জীবন ভাবতে গেলে
পায়ের তলার জমিন আমার কাঁপে!
৩.
আকাশ বলে, এমন করে-
আমাকে তুই মারবি,
এক নিমিষে আমাকে তুই
ভুুলে যেতে পারবি?
তারচে’ না হয় মুখটা তুলে
উপর দিকে তাকাস,
আলতো হেসে বলিস রে তুই
‘বন্ধু আমার আকাশ।’
এসব কথা শেষ করেই
তবে আকাশ থামে,
কষ্ট-শোকে চোখের পানি
বৃষ্টি হয়ে নামে!
৪.
মন খারাপের চিঠি আসে-
খাম ছাড়া,
ভুতুরে চিঠি প্রেরকের-
নাম ছাড়া!
৫.
একদিন চলে যাবো দূর-বহুদূর
যেখানে ঘাসের পায়ে শিশির নুপুর,
যেকানে বৃষ্টি পড়ে টাপুর-টুপুর
যেখানে মাতাল হাওয়া অলস দুপুর,
আকাশে মেঘের দল, সূর্য উপুড়
একদিন চলে যাবো সেই বহুদূর!
৬.
সকাল থেকেই আকাশে আজ
মেঘের কারুকাজ,
আহ কি মজা, বৃষ্টি হবে-
বৃষ্টি হবে আজ!
মুষলধারায় বৃষ্টি হবে
ভিজবো হেলেদুলে,
বৃষ্টি হবে, আহ কি মজা-
যাবো না ইশকুলে!
৭.
তোমার জন্য রেখেছি আকাশ
চিলেকোঠার ঘর,
আসো না তুমি, দোষ কি আমার?
আমি স্বার্থপর?
৮.
আমরা শুধুই ছুটি আলোর পিছু,
সবশেষে হায় তাকিয়ে দেখি-
আঁধার ছাড়া প্রাপ্তি তো নেই কিছু!
৯.
একটা দেশে অনেক রকম বস্তি থাকে
সে বস্তিতে অনেক রকম স্বস্তি থাকে,
এক ভবনে অনেকগুলো তলা থাকে
মানুষগুলোর অনেক বড় গলা থাকে,
যাকে তাকে যা খুশি তাই যায় তো বলা
সেসব শুনে নিত্য যাদের পথচলা-
বন্ধু তাদের তারার আকাশ, ভোরের হাওয়া
সবকিছু হায় যায় কি মোটেও ভুলে যাওয়া!
১০.
ভালো থাক সুতো
ভালো থাক সুঁই,
ভালো থাক তুই…!
ভালো থাক বহুদূর-
হেঁটে আসা পা’টা,
শাটডাউন, টাটা!
১১.
হাত ধরে থাকো নামুক যতোই বৃষ্টি,
আমরা দু’জন মিলে গেলেই-
তৃতীয় জনের সৃষ্টি!
১২.
আমার কিছু স্বপ্ন ছিলো ব্যক্তিগত
বললে পরে দেখতাম তুই ‘লেখতি’ কত,
নেই সংসার, হলো না তাই সন্তানাদি
তাইতো আমার মন কাড়ে না স্বর্ণ-চাদি,
সবার মাঝে থেকেও আমি নির্বাসনে
কেউ দিলো না তুলে আমার ক্ষীর বাসনে,
মুখের হাসি আড়াল করে হৃদয় ক্ষত
কারো জীবন হয় না বুঝি কারোর মতো!
১৩.
ঝুম বৃষ্টি, রিকসা ঘেরা-
পলিথিনের পর্দাতে,
তার অন্দরে আদর-সোহাগ-
মাদী এবং মর্দাতে!
১৪.
চুপচাপ টুপটাপ বৃষ্টিরা ঝরছে,
কেন জানি ক্ষণে ক্ষণে-
তাকে মনে পড়ছে!