আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন প্রিয় ভাই ও বোনেরা? আল্লাহর রহমতে আমিও ভালো আছি বরাবরের মতো। আজ আমরা জানবো এন্ড্রয়েড মোবাইল সম্পর্কিত কয়েকটি সহজ টিপস এবং কিভাবে আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলটির ব্যবহার সহজতর করবেন। এখন, আসুন আমরা পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ি…
[Note: জেনে রাখুন, এই পোস্টটা কিন্তু এন্ড্রয়েডের পারফরম্যান্স নিয়ে না, বরং এন্ড্রয়েড লাইফস্টাইল নিয়ে। অতএব আপনার সেটের পারফরম্যান্স কিভাবে ৬০% বৃদ্ধি করবেন, এ নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম; নিচের লিংকে গিয়ে সেটা আগে একবার পড়ে আসুন..]
মোবাইল ব্যবহার করতে করতে মোবাইল নিয়ে আমরা অনেকেই বড় পারদর্শী। কিন্তু মাঝে মাঝে আমাদের কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যেগুলোর দ্বারা আমাদের মোবাইল ভালো মতো পারফরম্যান্স দিতে পারেনা। ফলে দেখা যায় যে এর ফলে আমরা দামী মোবাইল কিনেও ঠিক মতো খায়েশ মিটাতে পারিনা।
তাহলে চলুন, দেখে আসি এন্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য কিছু লাইফহ্যাক, অর্থাৎ কোন কোন বিষয়গুলোর উপর নজর দিলে আমাদের এন্ড্রয়েড লাইফস্টাইল এখনের চাইতে অনেক বেশি আরামদায়ক ও সহজতর হবে।
যে যে বিষয়গুলোর উপর নজর দেওয়া উচিৎ :
(১) ব্যাটারীর চার্জিং সময় ও চার্জিং স্পীড,
(২) মোবাইলের অতিরিক্ত হিট হওয়া,
(৩) নেট ব্রাউজিং স্পীড,
(৪) স্টোরেজ স্পেস,
(৫) উচ্চ গ্রাফিক্সের গেমের সেটিংস, [যারা RPG Gamer তাদের জন্য ]
(৬) মোবাইলের ব্যাক কাভার ও সেফটি গ্লাস।
আসুন দেখে নিই, কিভাবে আমরা আমাদের এন্ড্রয়েড লাইফস্টাইল উন্নততর করবো:
১. ব্যাটারীর চার্জিং সময় ও চার্জিং স্পীড:
আমাদের অনেকের কাছেই 15W/ 33W/ 64W -এর সুপারফাস্ট চার্জিংয়ের মোবাইল আছে, তাই চার্জিং স্পীড ও সময়ের জন্য আমাদের ভাবতে হয়না। কিন্তু যাদের নেই, তাদেরও তো ইচ্ছা করে যাতে তাদের মোবাইলের ব্যাটারীর চার্জ একটু তাড়াতাড়ি হয়। আপনাদের চিন্তার কিছু নেই। বাজারে এখন ৩০০/৪০০ টাকার মধ্যে 3.0 mAh এর ফাস্ট চার্জার পাওয়া যায়। সেখান থেকে একটা নিয়ে আসতে পারেন। আর মোবাইলে চার্জার কানেক্ট করার জন্য Oraimo -কোম্পানি’র একটা ডাটা ক্যাবল নিয়ে আসবেন ১২০ টাকা দিয়ে। ব্যাস.. দেখে নেবেন ফাস্ট চার্জিং কাকে বলে। এক্ষেত্রে মোবাইলের কোন সমস্যা হবেনা।
২. মোবাইলের অতিরিক্ত হিট হওয়া:
এটি এন্ড্রয়েডের একটি সাধারণ সমস্যা। দামী, কমদামী, নিম্নদামী সকল সেটের ক্ষেত্রেই বেশি আর কমে এই ইস্যুটা পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে যা করবেন,
২(ক). মোবাইলের Developer Option -এ গেলে Background Process নামের একটি অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করে জাস্ট No Background Processes -টা সিলেক্ট করে নিন।
২(খ). যে অ্যাপসগুলা দীর্ঘক্ষণ চালিয়ে থাকেন, সেগুলোতে লং প্রেস করে i -ওয়ালা আইকনটিতে ক্লিক করবেন। সেখান থেকে Storage -এ ক্লিক করে Cache -গুলো ক্লিয়ার করে নিবেন।
ব্যাস… হয়ে গেল আপনার হিটিং ইস্যুর সমাধান।
৩. নেট ব্রাউজিং স্পীড:
এই সমস্যাটি সাধারণত গ্রামাঞ্চলে বেশি দেখা যায়। গ্রামে প্রাকৃতিক পরিবেশের আধিপত্য বেশি থাকায় নেটওয়ার্কের রেডিয়েশন সেখানে তেমন কার্যকরী প্রভাব ফেলতে পারেনা। এক্ষেত্রে যা করবেন,
৩(ক). ফোনের নেটওয়ার্ক অপশনে গিয়ে Mobile Network অপশনে যান। সেখান থেকে রোমিং চালু করে দিন।
৩(খ). নেটওয়ার্ক সেটিংসে আরও একটি কাজ আছে। অপশনটির ভিতরে আপনি Data Saver নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। সেটি চালু করে দিন।
৪. স্টোরেজ স্পেস বৃদ্ধি:
অনেকেই জানেননা যে এই সেটিংসটা আপনার ফোনের ডিসপ্লে কে গতিশীল করে, অ্যাপগুলো লোডিং হতে কম সময় নেয়। এক্ষেত্রে আপনার যা করতে হবে,
৪(ক). সবসময় File Manager অ্যাপের Cache Data ক্লিয়ার করে রাখবেন।
৪(খ). মোবাইলের স্টোরেজে থাকা ফটো, ভিডিও ও অন্যান্য ফাইলসগুলো রাখার জন্য আপনি অন্য একটি মেমোরি কার্ডের সাহায্য নিতে পারেন। একটি নতুন ৩২ বা ৬৪ জিবি মেমোরি কার্ড কিনে ফেলুন। জমে থাকা ফাইলসগুলো সেখানে সেভ করে রাখবেন আর মোবাইলের ইন্টারনাল মেমোরি যতটুকু পারেন খালি রাখার চেষ্টা করবেন।
৫. উচ্চ গ্রাফিক্সের গেমের সেটিংস [যারা RPG Gamer তাদের জন্য] :
অনলাইন গেমাররা সাধারণত বেশি ইন্টেলিজেন্ট হয়। তারা হয়তো ভালো জানেন যে, উচ্চ গ্রাফিক্সের গেমগুলো চালাতে হলে মোবাইলের কোন কোন সেটিংসগুলো চালু রাখতে হয়। তবুও আমি আপনাদের কাছে আমার এক্সপেরিয়েন্সটা শেয়ার করতে চাই..
৫(ক). মোবাইলের ফাংশনে Focus Mode নামে কোন অপশন থাকলে খুবই ভালো। সেখানে ঢুকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কিছু অ্যাপস এবং যে গেমসটি খেলবেন সেটি বাদ দিয়ে বাকি সব অ্যাপসকে সিলেক্ট করতে হয়। যখন গেমসটা কেলবেন, তখন শুধ Focus Mode -টা চালু করে দিলে হয়। ফাংশনটি আপনার গেমসটি ব্যতীত বাকি প্রত্যেকটা অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড & ফোরগ্রাউন্ড রানিং স্টপ করে দেয়। ফলে আপনি গেমিংয়ের সর্বোত্তম পারফরম্যান্স পেয়ে যান।
৫(খ). যদি উপরোক্ত সেটিংসটি না থাকে, তাহলে মোবাইলের প্রত্যেকটা অ্যাপসকে লং প্রেস করে i -ওয়ালা আইকনে ক্লিক করে Force Stop -এ ক্লিক করে দিবেন। তাহলেও খুব ভালো গেমিং পারফরম্যান্স পাবেন। মনে রাখবেন, গেমিংয়ের সময় চার্জ যদি ৩০% এর বেশি থাকে, তাহলে কখনোই Battery Saving Mode -টা চালু করবেননা। নাহয় আপনার গেমসের পারফর্ম্যান্সে আঘাত লাগতে পারে।
৬. মোবাইলের ব্যাক কাভার ও সেফটি গ্লাস:
এটা মোবাইলের এক্সটার্নাল একটা লাইফহ্যাক। মোবাইলের জন্য একটি মোটা ও আকর্ষণীয় ব্যাক-কাভার কেনা থাকলে আপনার মোবাইল ব্যবহারে একটা ইন্জয় ফিল হবে। রাগে মোবাইলটা আছাড় মারতে ইচ্ছা হবেনা। ফলে আপনার সেট অনেকদিন যাবত সেফটিতে থাকবে। এখন বাকি রইলো সেফটি গ্লাস।
সুন্দরের জন্য অনেকেই সেফটি গ্লাস হিসেবে 5D /13D /21D গ্লাসগুলো লাগিয়ে থাকেন। আমি বলি..
যদি ঘরে কোন ছোট বাচ্চা-কাচ্চা থাকে, আর আপনার মোবাইলটা তাকে একান্তই দিতে হয়, তাহলে 5D /13D /21D -এর প্রটেক্টর গ্লাসগুলো লাগাবেননা। দেখতে ভালো লাগলেও বেশিদিন টিকবেনা, ভেঙে যাবে। এক্ষেত্রে আপনি নরমাল ৫০/৬০ টাকা দামের গ্লাস প্রটেক্টরগুলো লাগাবেন। দেখবেন বছর পার হয়ে গেছে এবং ফোনের স্ক্রীনও সেইফ আছে। আর যদি আপনি মোবাইলের সৌন্দর্য চান, তাহলে 5D /13D /21D -এর গ্লাস প্রটেক্টর লাগাতে পারেন।
আসলে, কষ্ট কম হয়না পোস্টগুলো লিখতে। দিনের প্রায় ২ ঘন্টা সময় ব্যয় হয়ে যায়। তবুও মনের আশে লেখালিখি করি। দোয়া করবেন সবাই আমার জন্য।
পোস্ট দ্বারা উপকৃত হলে শেয়ার করে জানিয়ে দিন অন্যদেরও। কমেন্ট করে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে একদম ভুলবেননা।
পোস্টটি নিয়ে আপনার কোন প্রশ্ন, কৌতূহল, মতামত, অভিমত, পরামর্শ থাকলে নির্দ্বিধায় দিতে পারেন। আসসালামু আলাইকুম।