আমারে যেতে দাও
গাজী মোহাম্মাদ আব্দুল মাজেদ।
আমারে যেতে দাও
আমি অহর্নিশ অসহায়।
আমারে নেতে দাও
আলোতে নিয়ে বসোহায়।
মনে হয় কতকাল
বাবার সাথে সাক্ষাৎ হয় না।
যেন চির মরণ
এ মরণ সহজে যায় না।
যতো ভুলই করি
তিনি ক্ষমা করে দিবেন।
“মাজেদ” বলে ডেকে
কথার কোলে তুলে নিবেন।
আমি আর ফিরব না
গন্ধমে ভরাট জীবনে।
আমি আর ফিরব না
তোমাদের অবাধ যৌবনে।
ভুল করার পর
গাজী মোহাম্মাদ আব্দুল মাজেদ।
আহারে!
কেমন হবে গল্পের ফরিদপুর?
হাসি মুখ মলিন হবে
আমি ভাবতেই লজ্জায় মরে যাই।
কোন দিক চেয়ে বলব কথা?
কোন দিক ফেরাব মুখ?
এমন কোনো দিক নেই যে খোলা।
তখন কি উড়ে যাব আকাশে?
নাকি বাতাসের সঙ্গে?
আমি জানি না জানা নেই কোনো উপায়।
আমার অপেক্ষার দুপুর ঘনিয়ে আসছে যে,
আমি এখনো নীরব, চুপচাপ বসে।
যেন কিছু জানি না
যেন কিছু বুঝি না।
হৃদয় কান্নায় লুকানো
যেন কিছু হয় নি
যেন কিছু হবে না।
আমি তারে দেখেছি
গাজী মোহাম্মদ আব্দুল মাজেদ।
আমি তারে দেখেছি
হাসতে, খেলতে, গাইতে,
জীবনের জীবন চলতে।
আমি তারে দেখেছি
ঝগড়া, বিবাদ, ফ্যাসাদ, মিথ্যা কথা,
হিংসা, অহংকার, দুষ্টামি, ফাজলামি,
আরও কত কিছু করে সে।
আমি তারে দেখেছি
অন্য বাড়ি যায়
অন্য বাড়ি আয় সে।
আমি তারে দেখেছি
ছেলে মেয়ের দায়িত্বে মশগুল সে।
অনেক বছর পর আমি শুনেছি যে,
তিনি অনেক বড় চুপচাপ,
কেউ জল ফেলে
কেউ ফেলে না,
কেউ চিৎকার করে
তিনি শোনে না,
দেখে না,
চোখগুলো মেলে না।
তিনি কি কোনো অপরিচয়ের
পরিচয় পেয়েছে?
সেই কারণে ভুলে গেছে পৃথিবীর সব?
আমারে কেউ কি সেই পরিচয় দিতে পারো?
আমি যাইনি,
আমার যাওয়া হয়নি,
আমি অসুস্থ।
কোনো খুব সকালে
গাজী মোহাম্মাদ আব্দুল মাজেদ।
6/6/2021
কোনো
খুব সকালে,
চলো দুখের বোঝা
সইতে নাহি পেরে, সন্ধ্যা
নদীর পানিতে ভেসে ভেসে যাই।
যদি
টগর পাতা
বাড়াবাড়ি করে,
তবে টগর ফুলে বলি,
এমনিতেই, আমার কোনো দুঃখ নাই।
যদি
মায়া মানুষ
উদ্ধার চোখে আসে,
তবে তাদের বলি, আমার
দুঃখ নিয়ে আমি একাই চলি।
যদি
ভেসে ভেসে
নীল সাগরে পৌঁছাই,
তবে নীল তিমিতে বলব,
তোমার ইচ্ছে আমার অনুরোধ নাই।
যদি
বনের দেখা
পেয়ে জেগে উঠি,
তবে বাঘ মামাকে বলব,
তোমায় খুঁজছি তোমারেই খুঁজে যাই।
তবে
সন্ধার সূর্য
বাড়ি ফেরার আগেই
ফিরে আসার ইচ্ছে নাই। কী
হবে জানি না জানার জ্ঞান চাই।
কারণ আমি শিক্ষক
গাজী মোহাম্মাদ আব্দুল মাজেদ।
সকল
বেঞ্চে ছাত্র
ও ছাত্রীতে ভরা,
আমি সবাইকে অটোপাস
শব্দের ভালো মন্দ জ্ঞান দিচ্ছি।
তারা
মনোযোগী
ভঙ্গিমায় শুনছে
আমি কী বুঝাচ্ছি। এমন
সময় পাশের ঘরে শব্দ এলো
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান
খুলে দেয়ার চিন্তা
ভাবনায় আছি, নিদ্রা কেটে
গেল, ভেতরে ভেতরে ভাবলাম,
তবে
আমার আমি
এতটা ক্ষণ কোথায়
ছিলাম? কোথায় শ্রেণিঘর?
কোথায় গিয়ে কোথায় কী শিখালাম?
কারণ
আমি শিক্ষক,
শুধু শিক্ষকই নই
একজন দেশপ্রেমী শিক্ষক।
তাই আমি বসে থাকতে পারি না।
আমার
হৃদয় ছুটে
যায় শ্রেণী কক্ষে।
আমার পেশা, আমার নেশা,
আমার ধেয়ান, আমার জ্ঞান, শিক্ষা
দেয়া
ও নেয়া।