আমার স্টুডেন্টস এবং কিছুজন গুনগ্রাহী আমাকে প্রায়ই একটি প্রশ্ন করে থাকে। প্রশ্নটি হল- স্যার, আপনি কি করোনা ভেকসিন নিবেন? আমাকেও অবস্থানভেদে উত্তর করতে হয়। আমি বলি, রোগ প্রতিরোধ করতপ সক্ষম ও বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত যে কোনও কোন রোগের ভেকসিন বা চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমার ব্যাক্তিগত কোন আপত্তি নেই। কারন, কিছু বিজ্ঞ আলেমদের কাছ থেকে জেনেছি ভবিষ্যতে কোন বিপদের সম্ভাবনা থাকলে তার জন্য আগে থেকে পদক্ষেপ নেওয়া আল্লাহর ইসলাম বা ইহকালীন পরিপন্থী নয়।
আবার আমার আশেপাশের অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন আমি করোনা ভেকসিন নিবো কিনা? অথবা জানতে চায় আমার পরামর্শ। সেখানেও সামাজিক অবস্থানভেদে আমাকে লজিকেল উত্তরটিই করতে হয়। পরামর্শগুলোও হতে হয় যুক্তিযুক্ত।
একটি বিষয় খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে ইন্ফ্লুয়েন্জা নামক ভাইরাসের জন্য ফ্লু নামক ভেকসিন কিন্তু অনেক আগে থেকেই বাজারে আছে। বাজারে থাকা সত্ত্বেও কিন্তু আমরা এই ভেকসিন সবাই নেই না। আবার অনেকে এটা জানিই না। এই ভাইরাসে নিয়মিতই আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এর ফলে সামান্য সর্দি-কাশি ও জ্বর হচ্ছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে আবার সবাই ভালোও হয়ে যাচ্ছেন। যদিও এই ইন্ফ্লুয়েন্জা নামক ভাইরাসে পৃথিবীব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা বছরে কম করে হলেও কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এতে মৃত্যুর সংখ্যাও প্রতি বছর কম করেও সংখ্যায় লক্ষ লক্ষ হবে।
আমাদের দেশের মানুষ গায়ে খেটে পরিশ্রম করে। এতে খেটে খাওয়া মানুষদের দেশের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, গড় বয়স ও উষ্ণ তাপমাত্রাকে বিবেচনায় রেখে কোভিডের শুরু থেকেই আমি এই করোনা ভাইরাসকে ইন্ফ্লুয়েন্জা নামক সাধারণ একটি ভাইরাসের চেয়ে খুব বেশি গুরুতর মনে করিনা। অবশ্য এটি বাংলাদেশসহ বিশেষ করে গ্রীষ্মপ্রধান দেশের প্রেক্ষাপটে প্রযোজ্য।
কিছু বাস্তবতা ও কিছু অন্যান্য বিষয়ের উপর বিবেচনা করে করোনা ভেকসিন গ্রহন করতে আমি ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহী নই। বিষয়গুলো নিন্ম তুলে ধরা হলোঃ
১। করোনা ভাইরাসকে আমাদের দেশের সাধারন ইন্ফ্লুয়েন্জা ভাইরাসের মতো মনে হওয়া আমার করোনা ভেকসিন নেয়ায় নিরোৎসাহের প্রথম কারন। আমি এটাকে সাধারণ ও সিজনাল সর্দি-কাশি ও জ্বরের ভাইরাসই মনে করি। আর এই সাধারন ভাইরাসের জন্য আমি এই ভেকসিন নিতে আগ্রহী নই। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই জন্মের পর থেকে এসব ভাইরাসের সাথেই বসবাস করছে।
২। খুব অল্প সময়ের মধ্যেনতাড়াহুড়ো করে বানানো এই ভেকসিনের মান ও মানবদেহে প্রয়োগের এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এমনকি এই ভেকসিনেট পার্শ্বপ্রতিক্রয়ায় মৃত্যুর খবরও বেড়িয়েছে। এমতাবস্থায়, আমার অনাগ্রহের দ্বিতীয় কারন এটি।
৩। এই ভাইরাসে বিদ্যমান রেপিড মিউটেশনের ফলে covid-19 পরিবর্তিত হয়ে covid-20 এমনকি covid21 ইত্যাদিসহ এর সাথে আরও নতুন নতুন প্রজাতি যুক্ত হতেই পারে। আর তখন বর্তমান করেনার এ ভেকসিন তেমন কার্যকর হবেনা। এটা আমার অনাগ্রহী হওয়ার তৃতীয় কারন।
৪। চতুর্থ কারনটি হলো করোনার মতো অতীতে আরও যত ভাইরাস দেখা দিয়েছে সেগুলো শুরুর দিকে যতটা ভয়ংকর আবার সময়ের সাথে সাথে তা আবার ততটাই দুর্বল হয়ে পরে। সেদিক বিবেচনায় আমরা হয়তো এখন এই কঠিন সময়টা পার করছি।
৫। ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, দেশের অধিকাংশ মানুষই আক্রান্ত এই ভাইরাসে হয়েছে। আবার কিছুদিন পর সুস্থ্যও হয়ে গেছে। নিজের অজান্তেই তাদের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। তাই এন্টিবডি থাকা সত্ত্বেও প্রশ্নবিদ্ধ এই করোনা ভেকসিন নিতে আমি অনিচ্ছুক।
৬। শেষ কারনটি হলো, বিশেষ করে বয়স্ক লোকদের ভেকসিন প্রয়োগ করেও তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব বেশি পরিবর্তন হয় নি। বরং এর পার্শ্বপ্রতিক্রয়ায় তারাই আবার উল্টো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এগুলো আমার নিজস্ব মতামত। এবার সিদ্ধান্ত আপনার।