কাদের বন্ধু বানাবো?
আমার সল্প দৈর্ঘ্যের জীবনের ক্ষুদ্র অবিজ্ঞতা থেকে আমি বলব, কাউকে বন্ধু নামে স্বীকৃতি দেয়ার পূর্বে তার পরিবার সম্পর্কে একটু খোঁজ নিন। তার বাবা মায়ের প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী না থাকুক, কিন্তু মানবিক শিক্ষার ডিগ্রীটা যেনো থাকে। নয়তো আপনি কখনোই একজন বন্ধু হিসেবে তাকে পাবেন না বরং একজন শোষক হিসেবে পাবেন। যে আপনাকে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে যাবে আর আপনি ব্যবহৃত হবেন। আমরা সবাই জানি যে ব্যবহারে বংশের পরিচয়, বাবা মায়ের মানবিকতা না থাকলে সন্তানেরর মানবিকতা আশা করা পাথরে গোলাপ ফুল ফোটানোর স্বপ্ন দেখার মতো হবে ব্যাপারটা!
আপনি পর্যবেক্ষন করুন, তারপর বন্ধু ডাকুন।
• যে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষন করবেন তার প্রথমটি হলো ‘সে আপনাকে প্রতিনিয়ত বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে সকলের সামনে হেয়/অপমানিত করার চেষ্টা করছে কিনা। হযরত আলী (রা) বলেছেন “ঠাট্টার ছলে যে তোমাকে মানুষের সামনে অপমান করে, তাকে বন্ধু বানিও না” আমি মনে করি এই লাইনটি বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন নেই এর ভাবার্থ বিশাল। তবে এটুকু শুধু বলব বন্ধুর কাজ অপমানের হাত থেকে রক্ষা করা, অপমান করা নয়।
• দ্বিতীয় যে বিষয়টি পর্যবেক্ষন করতে হবে তা হলো ‘সে আপনাকে কখন স্বরণ করছে, তার খারাপ সময়ে না তার ভালো সময়ে।’ একজন প্রকৃত বন্ধু অবশ্যই নানান সমস্যার মাঝেও আপনাকে স্বরণ করবে।
• তৃতীয় লক্ষণীয় বিষয়টি হলো ‘সে আপনার কাছে অন্য কারো অবমাননা বা গীবত করছে কি না’। কারণ সে অন্য কারো গীবত আপনাকে বলছে অর্থাৎ আপনার গীবতও সে আরেকজনের কাছে বলবে। গীবতকারীকে স্বয়ং আল্লাহও পছন্দ করেন না আর আপনি আল্লাহর সামান্য সৃষ্টি হয়ে কেন বন্ধু বানাতে যাবেন গীবতকারীকে?
• চতুর্থ বিষয়টি হলো ‘ তার মনের কথা আপনাকে বলছে কি না’। যদি না বলে তাহলে কেটে পড়ুন। যে আপনাকে মনের কথা বলতে পারছে না, সে আপনার বন্ধু হতে পারবে না।
• শেষ যে বিষয়টি দেখবেন তা হলো ব্যক্তিত্ব। আপনার বন্ধুর ব্যক্তিত্ব ভালো মানে আপনি সার্থক। ভালো একজন বন্ধু পেয়েছেন।
মোটামুটি এই কয়টা বিষয় পর্যবেক্ষন করে আপনি বন্ধু নির্বাচন করতে পারেন। তবে অবশ্যই ভালো বন্ধু হতে হবে। এপিজে আবদুল কালাম স্যার বলে গেছেন, “একটা ভালো বই একশো বন্ধুর সমান। কিন্তু একজন ভালো বন্ধু একটা লাইব্রেরির সমান।”
আর একটা লাইব্রেরি থাকা মানে বুঝেন? সমগ্র পৃথিবী আপনার হাতের মুঠোয়। আর আমরা সবাই ই চাই পৃথিবী আমাদের হাতের মুঠোয় থাকুক।ভালো বন্ধুরা থাকলেই এটা সসম্ভব শুধু।
এখন কথা হচ্ছে এত কিছু পর্যবেক্ষন করবো কিভাবে যদি কাউকে বন্ধু না বানাই? আগে তো বন্ধু বানাতে হবে, তারপর তো পর্যবেক্ষন!!
হ্যা ভাই আগে বন্ধু বানান। তবে স্থায়ী না, অস্থায়ী বন্ধু বানান। কিছুসময় পর্যবেক্ষন করুন যদি উপরের লক্ষণগুলোর কোনটি ধরা পরে তাকে বয়কট করুন। আর যদি উপরিউক্ত লক্ষণগুলো ধরা না পরে তবে অস্থায়ী থেকে স্থায়ীতে রূপ দিন বন্ধুত্বটাকে, কিন্তু ভুলেও তাকে ব্যাপারটা বুঝতে দিবেন না। কারণ সে যদি বুঝতে পারে আপনি তাকে পর্যবেক্ষন করছেন,তাহলে সে কষ্ট পাবে। তাই তাকে বুঝতে দিবেন না। গোপনে পুরো কাজটি চালাবেন।
সকলের জন্য দোয়া ও শুভকামনা, শুভ এবং সুন্দর হোক সবার বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব বেঁচে থাকুক সারাজীবন।