মানব মস্তিষ্ক খুবই জটিল একটি বস্তু।মানুষের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মিলেও মস্তিষ্কের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। বরং মস্তিষ্কই তাদের নিয়ন্ত্রণ করে।মস্তিষ্কের এই জটিল ক্রিয়াকলাপ বোঝা খুবই মুশকিল।নিজের ঘরে বসে এমনি কথা ভাবছিল কাব্য।নিজের গোল বা লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে বাধার সম্মুখীন হওয়ায় সে মস্তিষ্কের উপর কিছুটা তিক্ত মনোভাব প্রকাশ করছে।সে মনে করছে তার অপারগতার জন্য শুধু মস্তিষ্কই দায়ী।
মানুষের লক্ষ্য অর্জনের বাধা দেওয়ার পেছনে মস্তিষ্কের প্রভাব যে নেই তা নয়।কিছুটা মস্তিষ্কের প্রভাব অবশ্যই আছে।আমরা যখন কোন কাজ করতে যাই মস্তিষ্কের একটি নেতিবাচক অংশ সবসময় নেতিবাচক মনোভাব তৈরী করে।যারা এই নেতিবাচক মনোভাবকে কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারে তারাই লক্ষ্য অর্জনের পথে অগ্রসর হয়।কাব্যের লক্ষ্য অর্জনের বাধাগুলো দূর করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় টিপস্ দেখা যাক।
★ Create Your Vision – প্রথমত, কাব্য যদি নিজের গোল বা লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারে তাহলে তার কি কি উন্নতি হবে,গোলটি এচিভ করার পরের ফলাফল কি হবে, কি কি সুফল আসবে, নিজেকে কোন স্থানে নিতে পারবে এই বিষয়গুলো ভিজুয়ালাইজ করা বা কল্পনার জগতে দৃশ্যমান করা।এর ফলে নিজের গোলটি এচিভ করার জন্য ইচ্ছাটা আরো সচেষ্ট হবে ও উদ্যমী হয়ে কাজ করা যাবে।
★ Ask Yourself – ভিশন ক্রিয়েট করার পর নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে কিভাবে এবং কেন এই লক্ষ্যটি পূরণ করা কাব্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।লক্ষ্য পূরণের জন্য সঠিক পথগুলো নির্ধারণ করতে হবে এবং কেন এই লক্ষ্য পূরণ তার জন্য জরুরী তা নিজেকে বোঝাতে হবে।প্রয়োজন কিভাবে ও কেন এর উত্তরগুলো লিখে রাখতে হবে।তা রাখতে হবে সবসময় চোখের সামনে।যাতে লেখাগুলো চোখে পড়লেই নিজের লক্ষ্যের কথা মনে পড়ে।যে
★ Breaking Down The Vision – নিজের লক্ষ্যটা পূরণ করা জন্য যে কাজগুলো করতে হবে তা ভাগে ভাগে ভেঙ্গে নিতে হবে।এতে কাজগুলো সহজলভ্য হয়ে উঠে।এর জন্য কার্যকরী উপায় হতে পারে —
° নিজের লক্ষ্যটি পূরণের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় নির্ধারণ করে রাখা।এরপর ধীরে ধীরে তা কমিয়ে আনার মাধ্যমে কাজের দ্রুততা বাড়াতে থাকা।
★ Put Your Vision Into Action – নিজের লক্ষ্য অর্জন করার জন্য নিজেকে সবসময় ৩ টি প্রশ্ন করতে হবে। কি? কেন? কোথায়?
কাব্য কি করতে চায় তা সে স্পষ্টভাবে জানতে হবে।
কেনই বা সে ঐ বিষয়টিকে তার লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করল তা জানবে হবে।এতে তার কি লাভ হবে তাও স্পষ্ট করতে হবে নিজের কাছে।
অবশেষে লক্ষ্যটি কিভাবে পূরণ করবে তার পরিকল্পনা করতে হবে।
★ Program Yourself To Achieve Your Goal – নিজের লক্ষ্যটা পূরণ করার জন্য নিজেকে তৈরী করতে হবে।যে ব্যক্তি কাব্যকে তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য মোটিভেট করে তার সাথে শেয়ার করতে হবে।
★ Set A Accountability Partner – অনেকসময় আমরা মনে করি, আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজেকে দায়ী রাখলাম।বিষয়টি আসলে একাউন্টেবিলিটি নয়।এটি আসলে রেসপনসেবলিটি বা দ্বায়িত্ববোধ।একাউন্টিবিলিটি আর রেসপনসেবলিটি এক নয়।নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজের প্রতি দ্বায়িত্বশীল হওয়াটা রেসপনসেবলিটি। কিন্তু লক্ষ্যটি অর্জন করার জন্য কারো কাছে বদ্ধপরিকর থাকাটা একাউন্টিবিলিটি।কাব্য তার কাছের কোন মানুষকে তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য একাউন্টেবল পার্টনার হিসেবে নির্ধারণ করতে পারে।এর ফলে তার কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে।যেমন আমরা পরীক্ষার হলে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে বদ্ধপরিকর থাকি।অন্যথায় অকৃতকার্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।একাউন্টিবিলিটি পার্টনার নির্বাচন করার সময় যে বিষয়গুলো কাব্যকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে —
° একাউন্টিবিলিটি বুঝতে পারছে কি না আপনি কতদূর অগ্রসর হচ্ছেন বা তার বোঝার সেই সামর্থ্য আছে কি না।
° ট্রেনিং এবং সাপোর্ট দিচ্ছে কি না।
° কাজের অগ্রগতি নিয়ে ফলোআপ করছে কি না বা বারবার তাগাদা দিয়ে ডেডলাইনের কথা স্মরণ করাচ্ছে কি না।
** Types Of Accountability Partner – একাউন্টিবিলিটি পার্টনার ৩ ধরণের হয়।
১. বন্ধুবান্ধব, পরিবার, সহকর্মী।
২. মেন্টর – যারা ঐ নির্দিষ্ট পথের লক্ষ্যগুলো অর্জন করে এসেছে।
৩. কোচ – যারা শেখাবেন কিভাবে লক্ষ্য অর্জন করা যায়।
★ Positive Reinforcement – নিজের বড় লক্ষ্যটার দিকে খেয়াল রাখতে রাখতে অনেক সময় ছোট ছোট অর্জনগুলো আমাদের চোখে পড়ে না।যার ফলে বড় লক্ষ্য অর্জনে একটি বাধার সম্মুখীন হলে আমরা ডিমোটিভেট হয়ে যাই।এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য কাব্যকে নিজের ছোট ছোট অর্জনগুলোর রেকর্ড রাখতে হবে।হতে পারে তা ভিডিও কিংবা অডিও বা ছবি ইত্যাদি।রেকর্ড রাখার ফলে যখন তার চোখে সেই ছোট ছোট সফলতাগুলো ধরা পড়বে তখন তার মস্তিষ্ক বড় সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে উপযোগী হয়ে উঠবে।
★ Cheaking Your Progress – শুধু নিজের লক্ষ্য অর্জনে ছুটলেই হবে না।মাঝে মাঝে লক্ষ্য অর্জনে কতটা অগ্রসর হওয়া গেছে তা দেখতে হবে।এর আরেকটি সুবিধা হল যদি মাঝপথে কোন ভূল ধরা পড়ে তা পুণরায় শুদ্ধ করার একটি সুযোগ পাওয়া যায়।