Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

কোন গ্রুপের রক্ত মশা বেশি খায় । যে গ্রুপের রক্ত বেশি ভালোবাসে

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমিও ভালো আছি। আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব কোন গ্রুপের রক্ত মশা বেশি খায় এবং যে গ্রুপের রক্ত বেশি ভালোবাসে। আশা করি আপনাদের অনেক ভাল লাগবে।

যে গ্রুপের রক্ত বেশি ভালোবাসে

কোন গ্রুপের রক্ত মশা বেশি খায় ?

মশার কাজই তো মানুষকে কামড়ানো তাই না? এছাড়া মশা বিভিন্ন রোগ বিস্তারের জন্যেও দায়ী যেমন: ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি। কিন্তু আপনি জানেন কি নির্ধারিত গ্রুপের রক্তের প্রতি মশার আকর্ষণ রয়েছে আর সেই গ্রুপের রক্তের মানুষদেরই মশা বেশি কামড়ায়। তাছাড়া দেহ থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন রাসায়নিক দ্বারাও মশা আকৃষ্ট হয়।

ধরুন, বন্ধুরা সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছেন। এর মধ্যে দুই/ একজনকে খুব মশা কামড়াচ্ছে। আর বাকিরা মজা করে বলছে, তোর রক্ত ভালো নয় তাই মশা তোকেই চোখে দেখে বেশি।

আসলে ব্যপারটা সেরকম নয়। দেহ থেকে নির্গত তেল, অ্যামোনিয়া, ল্যাকটিক এসিড এমনকি নিঃশ্বাসের সাথে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডও মশাকে আকৃষ্ট করতে পারে। আরও রয়েছে দেহের জিনের গঠন, বিপাক হার বেশি হলেও মশা আপনাকে বেশি কামড়াবে। তবে অনেকে মনে করেন, গাঢ় রঙের পোশাক পরলেও মশা সেই ব্যক্তির প্রতি আকৃষ্ট হয়।

২০১৪ সালে একটি গবেষণায় দেখা গেছে এ, বি গ্রুপের চেয়ে ও গ্রুপের রক্তের প্রতি মশার আকর্ষণ বেশি। ও পজিটিভ অথবা ও নেগেটিভ রক্তের গ্রুপের মানুষেরাই মশার আকর্ষণের কেনদ্রবিন্দু হয়ে থাকে। এছাড়া গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে জিনগত পরিবর্তন এবং শরীরের বিপাক হার বেশি হওয়ায় কার্বন- ডাই – অক্সাইড বেশি নিঃসৃত হয়। এইজন্য মশা তাদের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে। একইভাবে মেদযুক্ত শরীরেও বিপাক হার বেশি হওয়ায় মশা বেশি কামড়ায়।

এদিকে শরীরের তাপমাত্রা বেশি হলে ( যেমন জ্বর হলে) অথবা অ্যালকোহল, সিগারেট কিংবা মাদক জাতীয় দ্রব্য সেবনের অভ্যাস থাকলেও মশা বেশি কামড়ায়। কারণ মাদক সেবনকারীরের দেহ এবং নিঃশ্বাসের সাথে যে তীব্র গন্ধ বেরোয় তা মশাকে আকর্ষণ করে। তাই এদের মশা কামড়ায় বেশি।

আমেরিকান মসকিটো কন্ট্রোল এসোশিয়নের দাবি মানুষের শরীরে মশাকে আকৃষ্ট করার মতো বিদ্যমান উপাদানের সংখ্যা ৪০০ হতে পারে। শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই। কিন্তু একথা ঠিক যে, মানুষের শরীরের একাধিক উপাদিন যেমন- ঘাম, হরমোন, কার্বন- ডাই- অক্সাইড নিঃসরণের হার, বিপাক হার ইত্যাদি মশাকে আকৃষ্ট করে। গবেষকরা এটাও দাবি করেন যে,মশারা ৫০মিটার থেকে দেড়শো ফুট দূর থেকেও এসব উপাদানের উপস্থিতি বুঝতে পারে। আর এগুলো তাদেরকে একপ্রকার চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে। তাই এসব উপাদানের কম- বেশির কারণেও মশা আপনাকে বেশি কামড়াতে পারে।

আরও মনে রাখবেন, বাচ্চাদের তুলনায় বড়দের বেশি মশা কামড়ায় কারণ তাদের শরীরে বিপাক হার আর কার্বন- ডাই- অক্সাইড নির্গত হয় বেশি। অন্যদিকে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের মশা বেশি কামড়ায়। কারণ নারীদের শরীরের কিছু হরমোন মশাকে আকৃষ্ট করে। এছাড়া তাদের ঘামের সাথে অ্যামিনো এসিড নির্গত হয় বেশি। একারণেই পুরুষদের তুলনায় নারীদের মশা কামড়ায় বেশি।

আপনি জেনে অবাক হবেন যে, আপনার শরীরে উপস্থিত স্টেরয়েড এবং ত্বকের কিছু ব্যাক্টেরিয়াও মশাকে আকর্ষণ করতে পারে। এটা শুনে আবার নিজের দৈহিক গঠনকেই নিজের শত্রু ভাববেন না। কারণ এটি খুবই স্বাভাবিক বিষয়। ত্বকে উপস্থিত ব্যাক্টেরিয়া মশাকে যেমন আকর্ষণ করতে পারে তেমনি আপনার শরীরে স্টেরয়েড এবং কোলেস্টোরলের মাত্রা বেশি হলে মশার কামড় খেতে হতে পারে।

শুধু তাই নয়, যারা খেলাধুলা করেন এবং নিজেকে ফিট আর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের প্রতিও মশার আক্রমণ বেশি হতে পারে। কারণ অনেক দূর থেকেই মশা ঘাম আর তার সাথে নির্গত উপাদানের (যেমন- অ্যামোনিয়া, ইউরিক এসিড ইত্যাদি) অস্তিত্ব বুঝতে পারে।

অতএব, আমাদের আলোচনার সারমর্ম করলে দাঁড়ায়

১| মশা ও গ্রুপধারী মানুষদের রক্ত খেতে বেশি ভালোবাসে।
২| দেহ থেকে নির্গত হরমোন এবং ঘামের সাথে নির্গত উপাদান মশাকে আকর্ষণ করে। তাই যাদের ঘাম বেশি হয় তাদের মশা বেশি কামড়ায়।

৩| শরীরে উপস্থিত মেদ, কোলেস্টোরোল অথবা স্টেরয়েডের পরিমাণ বেশি হলে মশা কামড়ায়ও বেশি।
৪| জিনের গঠনও মশাকে আকর্ষণ করতে পারে। তাই জিন, বিপাক ক্রিয়া এবং দৈহিক গঠনের তারতম্যের কারণেও মশা বেশি কাভড়ায়।

৫| ঐ দৈহিক গঠন আর হরমোনের কারণেই পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের মশা কামড়ায় বেশি।
৬| এলকোহল, মাদক বা ঐ জাতীয় দ্রব্য সেবনের অভ্যাস থাকলে আপনার শরীরের ঘ্রাণ মশাকেও আকৃষ্ট করে বেশি।

মশার কামড়ের থেকে বাঁচার উপায় কি

এবার চলুন একনজরে দেখে নেয়া যাক, মশার কামড়ের থেকে বাঁচার উপায় কি

১| সবসময় পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন থাকবেন। নিয়মিত গোসল করবেন।
২| মশারি টানিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
৩| হাতে- পায়ে মশকিটো ডিজইনফেক্টেড মলম বা জেল বা স্প্রে লাগিয়ে নিতে পারেন।
৪| হালকা রঙের পোশাক পরলে মশা তুলনামূলক কম আকৃষ্ট হয়। তাই চেষ্টা করবেন হালকা রঙের পোশাক পরে বের হতে।
৫| তামাক এবং মাদক জাতীয় দ্রব্য সেবন এড়িয়ে চলুন।

জেনে রাখুন, মশা কিছু খেতে না পেলে সর্বোচ্চ ৩-৫ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তবে চেষ্টা করবেন আপনার বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে যাতে মশার আবাসস্থল গড়েই না উঠতে পারে। এতে আপনি এবং গোটা সমাজ নিরাপদে থাকবে।

এই ছিলো আজকের মতো। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

2 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No