Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

কয়েকটি হৃদয়ভাঙা বিচ্ছেদের গল্প (৪টি ছোট গল্প)

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো আছেন। চলুন, আর কথা না বাড়িয়ে আমরা গল্পগুলো পড়ি। আমাদের কঠিন হওয়া অন্তরটাকে একটু নাড়া দিই…

গল্প ১ :- “দোষটা আমারও না তোমারও না। না তোমার পরিবারের ছিলো, না আমার পরিবারের। দোষটা মূলত কারোরই না। সৃষ্টিকতারও না। কারণ তিনি জেনে বুঝে সব তাঁর বান্দার ভালোর জন্য করেন। তোমার সাথে বিচ্ছেদের মূলে ছিলো আমার-তোমার বয়সের সমতা। সমবয়সী মানেই সম্ভব না, এই মানসিকতা আজ আমায়-তোমায় এক হতে দেয়নি। আরেকটা সরকারী চাকরীই তো দরকার ছিলো, যেটা হতে একটু দেরীতে হয়ে গেল প্রিয়। জানিনা এ সমাজ আদতেই সুস্থ আছে কিনা। ইটালীর মাটিতে থেকে তুমিও হয়তো অনেক ভালো আছো। জানো? আজ আমি তোমার বাড়িতে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য পরিপূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছি। ***** সরকারী কলেজে পদার্থবিজ্ঞান পড়ানোর দায়িত্ব পেয়েছি। প্রিয়.. আজও কি তুমি আমার হবেনা?”

লেখাটি রেজা স্যারের পার্সোনাল ডাইরী থেকে কালেকশন করা হয়েছিলো। আমাদের ব্যাচ শেষ করার পর দীর্ঘদিন মানসিক হাসপাতালে ছিলেন তিনি। আজ জানা গেল তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীনতার মূল কারণ; যদিও তিনি আর আমাদের মাঝে নেই।

গল্প ২ :- গ্রামে আসার পর বন্ধু রাকিবের সাথে প্রায় ঘুরতে যেতাম পাশের ইছামতি খালের পাড়ে। সেখানে গেলে মনে হতো কোন সমূদ্রের পাড়ে বেড়াতে গিয়েছি। ছবি তোলার জন্য আমাদের এলাকায় সর্বোত্তম স্থান ছিলো খালের পাড়। বড় একটা গোয়ারীগাছের গুড়ি ছিলো সেখানে। প্রায়ই আমি আর রাকিব বসতাম। চিপ্স/বাদাম খেতে খেতে কত গল্প জুড়তাম আমরা, বলা বাহুল্য। আমাদের গল্প, ইতিহাস আর হাস্যরসিকতায় যোগ দিতো আরও কয়েকজন বন্ধু। পুরো দিনটা কাটিয়ে দেওয়া যেত সেখানে।
আজ অনেকদিন পর সেখানে বেড়াতে গিয়েছি। তবে একা। হাতে চিপ্স/বাদাম ছিলোনা। আজ আর কেউ গল্প জুড়তেও এলোনা। প্রকৃতির শব্দে সবাই যেন শব্দহীন। সবাই আজ নীরব, নিরাকার। রাকিব ও আমার অন্যান্য বন্ধুরা সেদিন যদি বান্দরবানে যাওয়ার টিকেট না কাটতো, তাহলে আজ হয়তো সবাই বেঁচে থাকতো। একটা সড়ক দুর্ঘটনা আমার সব বন্ধুকে পরপারে নিয়ে যায়।

গল্প ৩ :- “আজ তোমার জন্মদিন। তোমার জন্য কাঠগোলাপ নিয়েছিলাম। কিন্তু কেন জানি ফুলটা তোমার উপর ভীষণ অভিমান করেছে। তোমার কাছে যেতে চায়না। আমাকেও যেতে দেয়না। শেষে আমি আর আমার কাঠগোলাপ অভিমান করে এই ডাইরীর পাতায় আজীবন বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নিই। আর কোনদিন দেখতে হবেনা আমার ভালোবাসার কাঠগোলাপগুলোকে। দূরে থেকেও তোমার ভালো চাইবো। ভালো থেকো, আমার অপূর্ণ ভালোবাসা।”

লেখাটা মারজিয়া সুলতানা মিম আপুর সুইসাইড নোট ছিলো। আপুর ফেসবুক আইডি চেক করে একটা অজানা আইডি পাওয়া যায়। সম্ভবত একটা ছেলের আইডি, আপুকে ব্লক করে দিয়েছিলো। ম্যাসেজগুলো পড়ে পরিষ্কার জানা যায়, ছেলেটা আপুর সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে শেষে আরেকজনের হাত ধরে পালিয়েছে।

গল্প ৪ :- ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি প্রায় ৪ বছর পর। শহুরে ঝনজাট থেকে কিছুদিনের অবসর নিয়ে ছেলেকে গ্রামের মুক্ত বাতাসের স্বাদ নিতে দেওয়ার ইচ্ছা হয়েছিলো। আমার মায়ের আজ অনেক আনন্দ তাঁর একমাত্র নাতিকে দেখে। এখানে এসে খুব আদর যত্ন হচ্ছে আমাদের রাফির।
বিকেলে এলাকার কয়েকটা বাচ্চার সাথে লুকোচুরি খেলছিল আমার ৫ বছরের ছেলে রাফি। আর বাসার ছাদে বসে আমি ও শিমু কফি খাচ্ছিলাম। একটু পর ছেলেটা কোত্থেকে এসে বলতে লাগলো, “বাবা, বাবা.. ওইদিকে দেখো.. জঙ্গলের ওখানে কেউ নেই কিন্তু কে যেন আমার নাম ধরে ডাকছিলো.. রাফি.. রাফি..”
আমি বলি, “কে ডাকছিলো বাবা? তুমি ভালো করে দেখনি?”
“না বাবা, সেখানে তো জঙ্গল.. সেখানে কেউ নেই। আমার ভয় করে।”
আমি একটু হাসলাম। তারপর আবার কফির কাপে চুমুক বসাচ্ছিলাম। খানিকক্ষণ পরেই আমার মুখটা চুপসে যায়। ছেলেকে বললাম, “রাফি বাবা, কোথায় তুমি তোমার নাম ধরে ডাক দেওয়া শুনতে পেলে?”
অতঃপর ছেলে আমাকে টেনে নিয়ে গিয়ে ছাদের উপর থেকেই একটা ঝোপের মতো স্থান দেখালো। আসলে সেটা একটা কবরস্থান ছিলো, যেখানে রাফির আসল মায়ের কবর ছিলো। ছেলে জন্ম দিতে গিয়ে জীবনটা দিয়ে দিয়েছিলো আমার প্রথম স্ত্রী নিরুপমা..

পাঠকের কেমন লেগেছে, কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেননা। আপনার মতামত, অভিমত, পরামর্শ আর প্রতিক্রিয়াই আমার লেখাকে গতিশীল করে..
ধন্যবাদ পুরোটা পড়ার জন্য।

Related Posts

17 Comments

    1. Your name is matching some with my 3rd story’s suicided person – marjia sultana mim. 😊😊
      What a miracle!
      But be sure that you’re not attempting to suicide anymore.. Thank you. Stay tuned.

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No