আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা ,
আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমরা জানি ঘুম আমাদের নিত্যসঙ্গী। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দৃষ্টিতে একটা মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন । অনেকেরই আবার ৮ ঘণ্টার বেশি কম হয়ে থাকে । কাজের ব্যস্ততার কারণে অনেকের আবার কম হয়। আসলে বিষয়টা হচ্ছে আমাদের অনেকেরই একটা প্রবলেম হয় ঘুমের মধ্যে। আর সেটা হলো ঘুমের মধ্যে বোবা ধরা। আমারা অনেকেই বোবা ধরার এরকম অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছি । হঠাৎ করে দেখবেন আপনি ঘুমের মাঝে হাত পা নাড়াতে পারছেন না, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতেছে, দেহ থেকে যেন আত্মা বের হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু এরকম কেন হয়??
(১) আসলে আমাদের মস্তিষ্ক একটা খুবই জটিল উপাদান বা অঙ্গ। আমরা প্রতিভা বা চিন্তা-ভাবনাকে একটা অন্য কোন বিষয় হিসেবে বিবেচনা করি আসলেই বিষয়টা তেমন নয়। এই যে আমি সব কাজ করতেছি এটা আসলেই সবগুলোরই একটা সমন্বিত রূপ। এর থেকে যদি কোন একটা বাদ হয়ে যায় তাহলে কিন্তু আমি আর এই আমি পরিপূর্ণ থাকবো না । এই আমি যেন দিনের বেলায় একরকম আবার রাতের বেলায় অন্যরকম। হিসেবে বলা যায় যে আপনি যখন স্বপ্ন দেখেন তখন আপনার যৌক্তিক চিন্তা করার অংশটা নিস্তেজ থাকে বলে আপনি আকাশের মধ্যে উঠতে পারেন।
(২) আমাদের ঘুমের বিভিন্ন স্তর বা পর্যায় রয়েছে। ঘুমের এই বিভিন্ন পর্যায়ে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ একটিভ থাকে। আমরা যে ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না , সে ঘুমে আমাদের কোন সমস্যা হয়না। কিন্তু যে ঘুমের মাঝে আমরা পিঠের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকি। ঠিক তখনই আমাদের শ্বাসনালী দিয়ে বাতাস নিতে সমস্যা হয়। তখন অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মস্তিষ্কের সতর্কীকরণ ব্যবস্থা আমাদের মস্তিষ্ককে একটু জাগিয়ে দেয়। আবার যখন আমরা পাশ ফিরে শুই বা নড়াচড়া করি তখন এই শ্বাসের সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা পুরোপুরি ঠিক হয় না। তখন আমাদের মস্তিষ্ক এভাবে দুই তিন বারের সতর্কের কারণে প্রায় অনেকটাই জেগে যায়। কিন্তু ঘুমের মাঝে আমাদের এই নড়াচড়া করার অংশটা অনেক ক্ষেত্রেই পুরোপুরি সক্রিয় হয় না। তখন শুরু হয় বোবায় ধরা। কারণ তখন আপনার মস্তিষ্ক স্বপ্ন দেখা নিয়ে ব্যস্ত তাই আপনি অনেক কিছুই স্বপ্ন দেখেন , অনেক আজব কিছুই দেখেন , হয়তো শুয়ে শুয়ে গাড়ি চালান । কারণ আপনার যুক্তির সেই অংশটুকু কাজ করছে না। আপনার মস্তিষ্কের অনেক অংশই জেগে আছে। তাই আপনি যে আসলেই আপনি সেই চিন্তাটা সঠিকভাবে করতে পারেন ।আর আপনার শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে পারেন এবং যার ফলে মস্তিষ্কের ভয় অংশটা একটিভ হয়ে যায়।
(৪) আর সবচেয়ে মেইন অংশটা হল – আপনি চাইলেও আপনার হাত-পা ঠিক ভাবে নারাতে পারবেন না । কারণ আপনার মস্তিষ্কের সেই অংশটুকু এখন অফ আছে ।
আসলে মূল কথা হলো-এই বোবায় ধরা এমন একটি অবস্থা, যখন আমাদের শ্বাসকষ্ট হয় এবং এর কারণে মস্তিষ্কের কিছু অংশ সক্ষম থাকে কিন্তু আবার প্রয়োজনীয় বেশ কিছু অংশ সক্ষম না থাকার কারণে আমাদের এক ধরনের অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতার সৃষ্টি হয়। আর এটাই হল বোবায় ধরা।
আজকে এই পর্যন্তই । সবাই অনেক ভালো থাকবেন ।