আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমিও ভালো আছি। আজকে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে সেই সম্পর্কিত কিছু তথ্য নিয়ে। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
পূর্বে বা ইতিমধ্যেই যারা ভোটার হয়েছেন এবং ভোটার আইডি কার্ড অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পএ পেয়েছেন তাদের মধ্যে অনেক জনেরই ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পএ ভুল এসেছে। কারো নিজের নাম ভুল আবার কারো বাবা অথবা মায়ের নাম ভুল, আবার অনেকের জম্ম তারিখ ভুল কিংবা অনেকের ঠিকানা ভুল রয়েছে। এসব ভুলের জন্য আপনি নানান সমস্যার মধ্যে পড়েন এবং এই জাতীয় পরিচয় পএ কিভাবে সংশোধন করবেন কিংবা কোথায় গিয়ে আপনার জাতীয় পরিচয় পএ সংশোধন করবেন এটা নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তর মধ্যে পড়ে যায়।
আবার আমাদের মধ্যে অনেক ভাই আছে যারা ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য নানান কাজে বাধাপ্রাপ্ত হন। এমন কি অনেকে যারা বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রস্তুত তারা ও এই ভুলের জন্য বিদেশে গমন করতে সমস্যার মধ্যে পরে যায়। তাই আজকের পোস্টে আমি আপনাদের কে দেখাবো কিভাবে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পএ সংশোধন করবেন, কোথায় গিয়ে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পএ ঠিক বা সংশোধন করবেন এবং এই ভুল সংশোধন করতে কত দিনই বা সময় লাগতে পারে এই নিয়েই আজকের পোস্ট। ইন শা আল্লাহ এই পোস্টে টি পড়ার মাধ্যমে আপনাদের সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তো চলুন আর দেরি না করে আজকের পোস্ট টি শুরু করা যাক।
জাতীয় পরিচয় পএ সংশোধনের পদ্ধতি
জাতীয় পরিচয় পএ যদি নাম বা অক্ষর ভুল থাকে তাহলে এটা আবেদন করে প্রয়োজননীয় কাগজ পএ জমা দান করে এই ভুল সংশোধন করা যায়। এনআইডি কার্ড সংশোধন করার আবেদন এর জন্য দুইটা পদ্ধতি রয়েছে।
প্রথম পদ্ধতিটি হলো উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ফরম ২ নিয়ে সেটি যথাযথ ও সুন্দর এবং নির্ভুল ভাবে সকল তথ্য লিখে ফরমটি পূরণ করতে হবে।
তারপর ফরম টি পূরণ করা সম্পন্ন হলে প্রয়োজনীয় কাগজ পগ কালেক্ট করে সেসব কাগজ পএের ফটোকপি করে উক্ত ফরমের সাথে অর্থাৎ ফরমটির পেছনে সেসব কাগজপএ পিনআপ করতে হবে। তারপরে উক্ত পিনআপ কৃত ফরম ও কাগজ গুলো সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তার হাতে জমা দিতে হবে।
দ্বিতীয় নিয়ম টি হলো আবেদন করার জন্য আপনাকে আর উপজেলা কমিশনার বা নির্বাচন অফিসে না গিয়ে আপনি সরাসরি বাসায় বসে অনলাইন এর মাধ্যমে আপনার এনআইডি সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারেন। এই পদ্ধতি টি হলো একদম ঝামেল মুক্ত একটি অবনব পদ্ধতি। এই নিয়মে আপনি যদি আবেদন করেন তাহলে আপনি হয়রানি থেকে মুক্তি পাবেন। আপনাকে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আপনার কাছে একটি স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ অথবা ডেক্সটপ থাকতে হবে।
তবে অনলাইনে আবেদন করার জন্য আপনার অবশ্যই ইন্টারনেট কানেকশন এর প্রয়োজন হবে। আপনি আবেদন করার জন্য গুগল বা অন্য কোনো ওয়েব ব্রাউজারে প্রবেশ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনার এর ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করবেন।
ওয়েবসাইট লিংক: http://services.nidw.gov.bd/
এই ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর রেজিষ্ট্রেশন করে আপনাকে লগইন করতে হবে। তারপর আপনার নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, জম্ম তারিখ ও আরো অন্যান্য তথ্য আপনি এডিট বা সংশোধন করতে পারবেন। সংশোধন করার হলে আপনি আবার জমা দিতে পারবেন। আসা করি প্রথম নিয়মের থেকে দ্বিতীয় নিয়ম টি আপনার জন্য সহজ হবে। কেননা এই ক্ষেএে আপনি নানান ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পএ সংশোধন এর জন্য যা যা লাগে
আপনি যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে চান তাহলে আপনার যেসব কাগজ পত্রের প্রয়োজন হবে সেই কাগজপত্র গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ
➤ জম্ম সনদের অনলাইন কপিঃ আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম সংশোধন করার জন্য আপনার জম্ম নিবন্ধন সনদ এর অনলাইন কপি অবশ্যই লাগবে। যদি জম্ম সনদ কপি অনলাইন করা না থাকে তাহলে আগে অনলাইন করতে হবে।
➤ আপনার বাবা মায়ের জাতীয় পরিচয় পএ কপি/ আপনি বিবাহিত হলে এবং আপনার সন্তানের যদি জাতীয় পরিচয় পত্র থাকে তাহলে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। স্বামী/ স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ড (যদি থাকে)
➤ ওয়ার্ড কাউন্সিলর / চেয়ারম্যান / পৌর মেয়র এর প্রত্যয়ন পত্র। ( যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)
➤ এসএসসি সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
➤ জায়গার খতিয়ান/ বিদ্যুৎ বিল/ গ্যাস বিল/ পানির বিল/ কর পরিশোধ, ইত্যাদির কপি।
➤ বিবাহিত হলে কাবিননামা/ বৈবাহিক সনদ।
➤ চাকুরিজীবী হলে এমপিও শীট/ সার্ভিস বই, ইত্যাদি।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে
সাধারণত আপনি প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সহ আবেদন করার পর আপনার সব তথ্য সঠিক যাচাই হলে ৭ থেকে ১০ দিন কার্য দিবসের মধ্যে আপনি আপনার সংশোধিত জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন কপি বের করতে পারবেন। এরপর মূল জাতীয় পরিচয়
পত্র কার্ড আসলে সেটি আপনি নির্বাচন কমিশনার অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারবে সংশোধনী আবেদন করার পর আপনাকে যে কাগজটি দিবে সেটি জমা দিয়ে।
আজ এই পর্যন্তই। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।