আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার দয়ায় ভালো আছি। আজকে আমি বিজ্ঞান অভিশাপ নাকি আশীর্বাদ এটা নিয়ে কিছু লিখবো।
“বিজ্ঞান” এ ওয়ার্ডটির সকলের কম বেশি পরিচিত। সকলেই কিছু না কিছু জানেই বিজ্ঞান সম্পর্কে। জানবেনা বা কেন? বর্তমান সময়ের এই যুগ তো বিজ্ঞানেরই যুগ। ভোরবেলা শয্যা ত্যাগ করার পর থেকে রাতে বিছানায় যাওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞানের সাথেই তো আমরা সম্পর্কযুক্ত। ধরেন ভোর বেলা শয্যা ত্যাগ করার পর থেকে উঠার পর টুথপেস্ট দিয়ে টিথ ব্রাশ করবেন সেখান থেকেই বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক শুরু l বিজ্ঞান ছাড়া অচল আমাদের দৈনন্দিন জীবন l গরম লাগলে ফ্যান চালিয়ে শান্তির নাগাল পাওয়া, অসুস্থ লাগলে ঔষুধ খেয়ে সুস্থতা লাভ করা এসব তো বিজ্ঞানেরই অবদান।
সকল জিনিসের ভালো এবং খারাপ দুইটা দিকই থাকে। বিজ্ঞানেরও ভালো এবং খারাফ দিক রয়েছে। আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে উপস্থাপন করলেও বিজ্ঞানের খারাফ দিক সমূহকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। বিজ্ঞান যেখানে আমাদেরকে টাইম বাঁচিয়ে দিচ্ছে সেখানে বিজ্ঞান আবার আমাদেরকে করে তুলছে পরের উপর নির্ভরশীল। আমরা এখন প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠছি। এক কথায় অলস হয়ে যাচ্ছি। ছোট বাচ্ছা থেকে নিয়ে বড় সবাই এখন স্মার্টফোনে আসক্ত। এই ফোন একজন শিশুর মেধা বিকাশে যে বাধা দেয় তা আমরা একটু ভেবেও দেখি না। শিশুর মানসিক ও শারীরিক অনেক ক্ষতি করে এই ফোন। যখন এতটা প্রযুক্তি ছিল না তখন শিশুরা ঘরের বাইরে খেলাধুলা করতো। সেই সময় শিশুদের মধ্যে তৈরি হতো সামাজিকীকরণ, কিন্তু এই যুগে একে অপরের সাথে মিলে মিশে থাকার মানসিকতা দেখাই যায় না। এখন দেখি তরুণ সমাজে বিজ্ঞানের অভিশাপ। একটি জাতির জন্য তরুণ সমাজ মেরুদন্ড। কিন্তু এই যুগে একদল তরুণ সমাজ প্রযুক্তির অবদানে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়েছে। পত্রিকার খুললেই চোখে পড়ে ধর্ষণ, খুনখারাবি, ডাকাতি এই রকম অসংখ্য ঘটনা। এইসকল ঘটনার পিছনে লুকিয়ে থাকে বিজ্ঞানের বিভিন্ন রকম অবদান। নীল ছবিতে আসক্তি তরুণ সমাজকে নিয়ে যাচ্ছে আরো তলানিতে।
বিজ্ঞান অভিশাপ হিসেবে শরীরের অসুস্থতার জন্যও দায়ী। এখন মনে প্রশ্ন হতে পারে যে বিজ্ঞান ঔষধ তৈরি করে, যে বিজ্ঞান অসুস্থ রোগীকে সুস্থ করে তুলে সে বিজ্ঞান কিভাবে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি হতে পারে? হ্যাঁ, অবশ্যই হতে পারে। দিনের অধিকাংশ সময় যারা এবং, কম্পিউটারের স্ক্রীনে কাটায় তাদের বেশিভাগ লোকের চোখের সমস্যা। অফিসে এক নাগাড়ে বারো থেকে তেরো ঘন্টা যারা বসে বসে কাজ করে তাদের দেখা যায় চোখে স্থুলতার সমস্যা। এই স্থূলতার কারণে দেখা যায় বিভিন্ন রকমের মরণঘাতি রোগ দেখা দেয় যেমন : হাই কোলেস্টেরোল, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক প্রভৃতি।
সুতারাং বুঝা যাচ্ছে যে বিজ্ঞান উপকার করছে ঠিকই কিন্তু অপকার ও কম নয়। তাহলে কি আমরা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বাদ দিয়ে দিব? না, এটা সমাধান নয়। এটা করা সম্ভবও নয়। তাহলে সমাধান কি? সমাধান হলো বিজ্ঞানের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। শিশুদেরকে যতটা সম্ভব স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এইসব ডিভাইস থেকে আগলে রাখা। যারা অফিসে কাজ করে তাদের উচিত সময়ে সময়ে বিরতি নেয়া। নিয়মিত এক্সারসাইজ করা। তরুণ সমাজের মধ্যে সামাজিকীকরণ তৈরী করা। এভাবে আমরা বিজ্ঞানের অভিশপ্ত দিকগুলো থেকে মুক্তি পাবো।
আজ এই পর্যন্ত।
আল্লাহ হাফেজ।
ভালো থাকবেন সবাই।