সবার হাসি অমূল্য এক রত্ন।সাধারনত আমাদের হাসিখুশি থাকার পেছনে সবচেয়ে বেশি যে জিনিস কাজ করে তা হল আমাদের শারীরিক অবস্থা ও মানসিক অবস্থা ।যদি শরীর এবং মন না ঠিক থাকে তাহলে আমাদের কোন কাজই ঠিকমতো হয়না। যদি এই শরীর-মন না ঠিক থাকে, তাহলে আমাদের সকল কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। শারীরিক সমস্যার জন্য সাধারণত নানা ধরনের ওষুধ আছে ,সে ওষুধ খেলে আমরা দ্রুত সুস্থ হয়ে যাই। কিন্তু মানসিক অবসাদের কোন ওষুধ নেই, এটি ধীরে ধীরে আমাদের ভিতরে প্রবেশ করে, আমাদের নিজেকে নিঃস্ব করে দেয়।
ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা এক ধরনের অসুস্থতা বা ব্যাধি যা শরীর, মেজাজ ও চিন্তার সাথে জড়িত থাকে। এটি দৈহিক জীবন, স্বাভাবিক কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করে এবং ব্যাধিযুক্ত ব্যক্তি এবং যারা তার যত্ন করে উভয়ের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে। কিন্তু তাই বলে সব সময় মন খারাপ থাকাকে আমরা ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা বলতে পারি না। এজন্য আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী সেই লক্ষণগুলো জানা দরকার। সেগুলো হতে পারে–
১. ক্রমাগত দুঃখিত, চিন্তিত বা মেজাজ খারাপ থাকা।
২. সব সময় হতাশ থাকা বা
৩. নিজের মধ্যে অপরাধবোধ কাজ করা
৪.অমনোযোগী থাকা।
৫.কোন কিছু মনে রাখা বা সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা।
৬.অনিদ্রা, রাত জেগে থাকা।
৭. মৃত্যু বা আত্মহত্যার চিন্তা, আত্মহত্যার প্রচেষ্টা।
৮. অস্থিরতা বা বিরক্তি প্রকাশ সবকিছুতেই।
তাই এই ডিপ্রেশন এর থেকে মুক্তি পেতে ,আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব , ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির সহজ সাতটি উপায় নিয়ে।
*প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানো:
সাধারণত ডিপ্রেশনের সময়ে ,আমরা আমাদের আশেপাশে এমন মানুষদের খুঁজি যাদের সাথে আমরা কথা বলতে চাই কিংবা আমাদের কথা বলে ভালো লাগে ।তাই এই সময় গুলোতে ,আমাদের প্রিয় জন অর্থাৎ আমাদের পরিবারের সদস্য কিংবা আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে কাটানো উচিত এতে করে আপনার মন থেকে দূর হয়ে যাবে সকল হতাশা এবং আপনি থাকবেন হাসিখুশি।
* কাজে ব্যস্ত থাকা:
নিয়মিত কাজে ব্যস্ত থাকা ।যদি আপনি কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে দেখা যাবে আপনার মাথায় আজেবাজে যত ধরনের চিন্তা বা হতাশা থেকে আপনি খুব সহজেই দূরে চলে গেছেন কিছু ভালো কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে ।আপনার সময় ও কাটবে তখন খুব তাড়াতাড়ি এবং আপনি দূরে থাকবেন ডিপ্রেশন থেকে।
*চিন্তার পরিবর্তন করুন:
সব সময় খারাপ চিন্তা ,খারাপ মনোভাব নিজে থেকে দূরে রাখুন। চেষ্টা করুন ,নিজের ভিতর চিন্তার পরিবর্তন আনার ।এতে করে আপনি ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবেন এবং ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকবেন।
*নিয়মিত শরীরচর্চা করুন:
নিয়মিত শরীরচর্চা করার ফলে আপনি যেমন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন ,ঠিক তেমনি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ও পরিবর্তন ঘটবে খুব দ্রুত। তাই নিয়মিত সাইকেল চালানো, যোগব্যায়াম কিংবা অল্প সময়ের জন্য হলেও, নিয়মিত হাঁটার চেষ্টা করুন ,এতে করে মানসিক ভাবে আপনি থাকবেন উৎফুল্ল।
* পছন্দের কাজগুলোতে সময় ব্যয় করা:
পছন্দের কাজগুলোকে যথাসম্ভব নিজেকে সময় দেয়ার চেষ্টা করুন ।এতে করে আপনার যেমন দক্ষতা বাড়বে এবং আপনার পছন্দের বিষয়ে পাশাপাশি আপনার মানসিক অবসাদ দূর হয়ে যাবে। আপনি আনন্দ লাভ করবেন ,সে কাজ করে তাই বসে পড়ুন কলম খাতা নিয়ে , লিস্ট করে ফেলুন আপনার সকল পছন্দের কাজের।
*নিয়মিত ধর্মচর্চা করুন:
নিয়মিত ধর্ম চর্চা করুন ,আপনি যে ধর্মেরই হন না কেন । কারণ প্রতিটি ধর্মেই আপনি খুঁজে পাবেন এমন কিছু তথ্য ,যা আপনাকে মানসিক অবসাদ থেকে দূরে নিয়ে আপনাকে বাস্তব জীবনের কাছাকাছি নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
*প্রযুক্তির ব্যবহারের সঠিক উপায়ে করা:
বর্তমান যুগ ফেসবুক টুইটার মেসেঞ্জারে সারাদিন পড়ে থাকা আমাদের তরুণ প্রজন্ম ও প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানেনা এবং অন্যের জীবন দেখে প্রতিরোধ ও হতাশায় ডুবে যায় তাই এটি ব্যবহার করা এবং এমন কিছু ঘটনা করা যাতে আপনার জীবনে হতাশা নিয়ে আসে।