আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। অনেক দিন পর আজকে আবার আসলাম আমার গল্পের পর্ব নিয়ে। ব্যাক্তিগত সমস্যার কারনে বেশ কয়েকদিন গল্পের পর্ব দিতে পারি নাই। তাই আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। তবে এখন থেকে নিয়মিত গল্পের পর্ব দিব ইনশাআল্লাহ। চলুন আজকে ” তুমি কি সত্যি আমার !! ” গল্পের নবম পর্ব পড়া যাক।
অষ্টম পর্বের পর থেকে………
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে আমি আর কলেজে যাচ্ছি না। আমাদের বাসা থেকে আমাকে আর সাধারণ ভাবে পড়াশোনা করাবে না। আমাকে বিভাগীয় কৃষি ডিপ্লোমা কলেজে ভর্তি করিয়ে দিবে। তাই ১ বছর অপেক্ষা করতে হবে আবার নতুন করে ভর্তি হওয়ার জন্য। ডিপ্লোমায় ভর্তি হওয়ার প্রস্তাব টা প্রথম মা আমাকে দিয়েছিল। আমি রাজি হই নাই। ঈতিশা কে ছেড়ে আমি যেতে চাচ্ছি না। মা সেটা বুঝতে পারে। মা তখন বলল, দেখ বাবা রূহান। তুমি ঐ কলেজে যদি পড় তাহলে ঈতিশার সাথে শুধুমাত্র দুই বছর থাকবে। তারপর ঈতিশা অন্য কোথাও চলে যাবে। তখন ঈতিশা তো তোমার সাথে থাকবে না। ঐ সময় তুমি কি করবা? আর তুমি যদি ডিপ্লমায় পড়াশোনা করে নিজেকে ভালো ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পার তাহলে ঈতিশার সাথে শুধু দুই বছর না সারাজীবন ও কাটানোর সুযোগ হবে। মার এ কথা শুনে রাজি হয়ে গেলাম।
এক বছর অপেক্ষা করে শুধু আমি একা না, আমার খালাতো ভাই শরীফ ও আমার সাথে একি কলেজে ভর্তি হবে। শরীফ শুধু আমার খালাতো ভাই না আমার ছোট বেলার বন্ধু ও। শরীফ আর আমি দুজনে পিঠাপিঠি তাই ছোট বেলা থেকেই একসাথে বেড়ে উঠেছি। শরীফ ডিপ্লোমায় ভর্তি হবে জন্যে খালা মনি মা কে বলেছে যেন আমাকেও ডিপ্লোমায় ভর্তি করায় দেয়। মা তো আমাকে রাজি করিয়েছে আর কোন সমস্যা নাই। ভাইয়াও আমার পড়া শোনার সব খরচ দিতে রাজি।
কলেজ না যাওয়ায় ঈতিশার সাথে আমার এখন কোন যোগাযোগ নেই। আমার মোবাইল টা নষ্ট হয়ে গেছে। সাথে সাথে মোবাইল এ সংরক্ষণ করা সব মোবাইল নাম্বার ও delete হয়ে গেছে। ঈতিশার মোবাইল নাম্বার ও delete হয়ে গেছে। আমিও এমন বোকা যে মোবাইল নাম্বার টা মুখস্থ করে ও রাখি নাই। পড়াশোনা না থাকায় বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই আর আম্মুর সাথে গল্প গুজব করি। তাছাড়া বাকি সময়টা Facebook এ কাটাই বিভিন্ন হাসির,মজার আর অনুপ্রেরণা মূলক গল্প পড়ে।
Facebook এ আজ নতুন একজন friend request পাঠিয়েছে। Facebook account এর নাম ” রাতের শেষ প্রহর “। Profile এ গিয়ে দেখলাম। একজন মেয়ে মানুষের ID. তাছাড়া আমার পরিচিত অনেকেই এ আইডির সাথে বন্ধুত্ব করেছে। আমিও request accept করলাম। আমার কেন জানি চেনা চেনা মনে হচ্ছে। ম্যাচেনজার থেকে এস এম এস দিলাম।
আমি: Hi.
রাতের শেষ প্রহর: Hi! দুলাভাই।
আমি: [ আমি তো পুরাই বেকুব, আমি দুলাভাই হলাম কবে।] এসব মনে বলতেছি। উঃ এ বললাম: আমি আপনার দুলাভাই না। আমি এখনো বিয়েই করি নাই দুলাভাই হই কি করে?
রাতের শেষ প্রহর: হুম জানি। আপনি এখনো বিয়ে করেন নাই।
আমি: তাহলে দুলাভাই বলতেছেন কেন?
রাতের শেষ প্রহর: এমনিতেই, ইচ্ছে হইছে তাই। ছাড়েন ওসব। কেমন আছেন?
আমি: জি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
রাতের শেষ প্রহর: জি আমিও ভালো আছি। কি করেন?
আমি: কিছু না। বসে বসে fb চালাচ্ছি। আপনি কি করেন?
রাতের শেষ প্রহর: আমিও একটু fb যে আসলাম। এখন fb থেকে বের হবো । Bye.
আমি: আচ্ছা bye.
ঈতিশাকে খুব মনে পড়ছে, খুব দেখতে ইচ্ছে করতেছে। কতদিন থেকে ঈতিশার সাথে কথা হয় না..
আচ্ছা! ঈতিশা কি Facebook account খোলে নাই? ও কি fb চালায় না? আজকাল তো সবাই fb চালায়। আমি ওর ID না চিনলেও ওতো আমার ID চিনবে। আমাকে ভালো না বাসলেও অন্তত কলেজের বন্ধু হিসেবে friend request পাঠাতে পাড়ত। আজ পর্যন্ত যতগুলো friend request আসছে সব accept করছি। যদি এদের মধ্যে কেউ ঈতিশা হয়। কিন্তূ না এখানকার কেউ ঈতিশা নয়। এদের সাথে কথা বলে জেনে নিয়েছি।
বেশ কয়েক দিন “রাতের শেষ প্রহর” এর সাথে কথা বলছি। সব সময় দুলাভাই দুলাভাই বলে। আমি প্রচন্ড বিরক্ত বোধ করতে লাগলাম। এই দুলাভাই কথাটা আমার বড্ড অসয্য লাগছে। আমি ঈতিশা কে ভালবাসি আর অন্য কেউ আমাকে দুলাভাই বলে ডাকছে। উফ্ফ ভালো লাগছে না। আবার হিসাব ও মিলছে না। আমি আর মা ছাড়া আর তো কেউ জানে না। থাক কে হয় হোক। আমার সমস্যা কোথায়?
আমিও না, হুদাই হুদাই বিষন্নতায় চলে যাই।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ” তুমি কি সত্যি আমার” গল্পের আজকের পর্ব টা সম্পুর্ন পড়ার জন্য।