আসলামুল আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও খুব ভালো আছি। আজকে আমি ” তুমি কি সত্যি আমার ” গল্পের সপ্তম পর্ব দিচ্ছি। সবাই সম্পুর্ন গল্প টি পড়ে আমার সাথেই থাকবেন। চলুন শুরু করা যাক।
ষষ্ঠ পর্বের পর থেকে….. ঈতিশা কে bye বলে বসে ভাবতে লাগলাম কিভাবে ঈতিশা কে আমার মনের কথা জানানো যায়। একবার ভাবি সরাসরি গিয়ে বলে দিব। আবার ভাবি যদি ও অন্য কিছু মনে করে। যদি আমার সাথে প্রেম করতে রাজি না হয়। এ কথা শুনে যদি আমার সাথে বন্ধুত্ব টা আর না রাখে! যদি আর আমার সাথে কথা না বলে। এই যদিই আমাকে আমার মনের কথা বলতে দিচ্ছে না। ওর থেকে একেবারে দুরে চলে যাওয়ার চেয়ে ওর বন্ধু হয়ে সবসময় ওর কাছে থাকাই আমার ভালো। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরের দিন সকালে কলেজে গেলাম। সেদিন প্রথম ক্লাস তৃতীয় তলায় ছিল। আমি একটু দেরিতে ক্লাসে গেলাম। তাই পিছনে বসতে হলো। ক্লাস শেষে দ্রুত নেমে দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির কাছে এসে দাঁড়ালাম। অপেক্ষা করতেছি কখন ঈতিশা আসবে। মাথা তুলে দেখি ঈতিশা খুব দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নামছে। আমি হঠাৎ ওর হাত ধরে ওকে থামিয়ে বললাম, ঈতিশা শোন। ঈতিশা হতভম্ব হয়ে যায়। বেশ রেগে গিয়ে পিছনে ঘুরে দেখে আমি তখন রাগ নিয়ন্ত্রণ করে একটু মুচকি হেসে বলল। কি হয়েছে? এভাবে হঠাৎ ডাকলে কেন? আমি বললাম, তোমার চোখে ঐ দেখ ওটা কি। ও বলল কোথায়? আমি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছিলাম। এদিকে, না না ওদিকে, আরো এদিকে, আর অল্প একটু উপরে, একটু বাম দিকে সরে। ও আমার কথা অনুযায়ী ওর চোখের আশেপাশে কি আছে তাই খুঁজতে লাগল। আসলে আমি চাচ্ছিলাম ও আমার চোখে চোখ রেখে কথা বলুক। এতক্ষণ ধরে ও তাই করছিল। তারপর আমি বললাম, এখন নাই। এতক্ষণ ধরে ওর হাত ধরেই ছিলাম। ও আমার থেকে ওর হাত ছাড়িয়ে নিয়ে নিচে চলে গেল। এতক্ষণ ওর হাত ধরে ছিলাম বুঝতেই পারি নাই। খুব ভয় হচ্ছে। ওখানে সবাই ছিল তাই হয়ত তখন কিছূ বলে নাই। আমাকে একা পেলে আজ আমার খবর খারাপ আছে। তাই ওর ধারের কাছেই আর যাই নাই।
কলেজ শেষে প্রাইভেট পড়ে বাসায় এসে বিকাল বেলা বারান্দায় বসে আজকের ঘটনার কথা ভাবতে লাগলাম। হাত ধরার সাথে সাথেই ঈতিশা প্রচন্ড রেগে গেল কিন্তূ যখন দেখল হাতটা আমি ধরেছি তখন একটু হাসলো। তারমানে ঐ ও আমাকে পছন্দ করে? নাকি বন্ধুত্বের কারনে কিছু বলে নাই। সবটাই অজানা। ঐ ঘটনার পর থেকে আমি ঈতিশা কে কোন sms করি নাই। ঈতিশা ও নিজে থেকে কোন sms করে নাই। তাছাড়া আমিও নিয়মিত কলেজ যাই নাই। ওর সাথে তেমন দেখাও হয় নাই।
আজ আমাদের কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান। সবাই অনেক সাজুগুজু করে আসছে। সব মেয়ে গুলো মেকআপ দিয়ে মুখ ভর্তি করে এসেছে। আমরা অনেকেই যেটাকে ময়দা বলে থাকি। আর অনেকেই শাড়ি পরে এসেছে। কিন্তূ ঈতিশা একদম অন্যরকম ভাবে এসেছে। একটি সেলোয়ার কামিজ, সাথে হিজাব পড়েছে। হালকা মেকআপ করেছে। অন্যদের তুলনায় খুব সামান্যই সেজেছে। তবুও ওকে খুব সুন্দর লাগছে। অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। আমি আর চোখে ঈতিশাকে দেখতেছিলাম। তবে এই সময় টায় অনন্ত কে খুব miss করেছিলাম। অনন্ত থাকলে আজ হয়ত আমার মনের কথা শুধু আমার মনেই থাকত না ওকে বলে দিতাম। ও নিশ্চিত আমার জন্য কিছু একটা করতে। আমাদের নবীন দের পক্ষ থেকে একজন কে বক্তব্য দিতে হবে। ঐ বক্তব্য ঈতিশা দিল। ও অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পারে। বক্তব্য টা বেশ ভালই লাগলো। নবীন বরণ অনুষ্ঠান এ সবাই ছবি তুলতেছিল। আমিও চাচ্ছিলাম ঈতিশার ছবি তুলতে। তখন আমার বন্ধুদের কারো স্মার্ট ফোন ছিল না। সবার ছোট ফোন ছিল। আমি ছবি তোলার জন্য ভাইয়ার স্মার্ট ফোন নিয়ে গেছিলাম। সবাই আমার ফোন দিয়ে ছবি তুলছে। ছবি গুলো আমিই তুলে দিচ্ছিলাম। ঈতিশা সহ অন্যান্য বন্ধুরা মিলে গ্রুপ ছবি তুলছে। আমি ঈতিশার একক ছবি তুলতে চাচ্ছিলাম। অনেক কষ্টে ঈতিশার অজান্তেই ওর একক ছবি তুললাম। গ্রুপ ছবি তোলার সময় সবাই আমাকে ডাকছিল ওদের সাথে ছবি তুলতে। তখন ঈতিশা আমাকে জোর করে টেনে নিয়ে গেল। কি আর আমার। সবার সাথে বেশ কয়েক টা ছবি তুললাম। নবীন বরণ অনুষ্ঠান শেষে তাহমিদ আমার কাছে ছবি গুলো চাইলো। আমি বাসায় গিয়ে ফেইসবুকে দিতে চাইলাম। ও রাজি হয়ে গেল।
সম্পুর্ন গল্পের পর্ব টা পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।