আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন আপনারা সবাই?
আশা করি ভাল আছেন।
আজকে আপনাদেরকে বলবো দেশ গঠনে নারী সমাজের ভূমিকা সম্পর্কে।
আশাকরি পড়বেন।
লিঙ্গ বিভাজনের দিক থেকে মানবসমাজ দুটি ভাগে বিভক্ত। এক নারী ;দুই পুরুষ।
এ দুয়ের সমষ্টিতেই গঠিত মানব সমাজ।এ দুই জাতির একটি ছাড়া অন্যটি অচল, মূল্যহীন ও অর্থহীন। ইসলাম ধর্মে নর-নারীর সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে বলা হয় , পুরুষের বাম পাজরের হাড় দিয়ে নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
এই কথাটির অর্থ এই যে নারী ও পুরুষ একে অন্যের সহযোগী ও পরিপূরক। সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকেই নারী যেমন পুরুষের উপর নির্ভরশীল,তেমনি পুরুষ ও নারীর উপর নির্ভরশীল।
সেই গুহাবাসী মানব থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বনচারী মানুষ শিকার করে এনেছে আর গুহাবাসী নারী বীজ বপন করে কৃষি সভ্যতার সূত্রপাত করেছে।
নারী আদ্যাশক্তি। তার সার্থকতা মাতৃত্বে। নারীই গর্ভে ধারণ করেছেন হযরত মুহাম্মদ (স) এর মত আদর্শ মহাপুরুষ কে; যাকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর কোন কিছুই সৃষ্টি করতেন না। নিউটন এর মত মহান বিজ্ঞানী ,প্লেটো ,সক্রেটিস এর মতো দার্শনিক, অ্যারিস্টোটলের মতো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, আলেকজান্ডার, নেপোলিয়নের মত বিশ্ববিজয়ী বীর,ও শেক্সপিয়ার, রবীন্দ্রনাথের মত মহান প্রতিভাধর ব্যক্তিদের গর্ভে ধারণ ও লালন পালন করে মানুষ করেছে নারী।
অনুরূপ আগামীদিনের অনাগত ভবিষ্যত প্রজন্ম ও গড়ে উঠবে নারীর হাতে। দেশ বা জাতি গঠনে নারী সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায় উন্নত বিশ্বের দেশগুলো নারী সমাজের দিকে নজর দিলে।যেমন: জাপান ,যুক্তরাষ্ট্র ,যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় অন্য দেশ আজ জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্যসহ সর্বক্ষেত্রে সবার শীর্ষে অবস্থান করেছে। কারণ তাদের মধ্যে নারী পুরুষ বিভাজন ততটা নেই।
আমাদের মত অনুন্নত দেশগুলোতে নানা কুসংস্কার এর ফলে নারীরা আজও গৃহবন্দী ও সেবাদাসী।
তারা নানাভাবে নির্যাতিত ও অবহেলিত।আমাদের ১৬ কোটি মানুষের প্রায় সাড়ে ৭ কোটিই নারী।জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশকে পশ্চাতে বসিয়ে রাখলে কোনদিনই জাতি উন্নত হতে পারবে না।
“নারী”কবিতায় তাই কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন:
‘এ-বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল ,ফলিয়াছে যত ফল,
নারী দিল তাহে রূপ-রস-মধু-গন্ধ সুনির্মল।
তাজমহলের পাথর দেখেছ ,দেখিয়াছ তার প্রাণ?
অন্তরে তার মোমতাজ নারী, বাহিরেতে শা-জাহান।’
দেশ ও জাতি গঠনে নারীর যেমন কর্তব্য রয়েছে তেমনি অধিকার ও রয়েছে।দেশের প্রচলিত সাংবিধানিক আইন অনুসারে প্রতিটি নারী মৌলিক অধিকারসমূহ ভোগ করার অধিকার রাখে।
এখনো গ্রামের নারীরা বা মেয়েরা ঠিকমতো শিক্ষার সুযোগ পায়না ।তাদেরকে শিক্ষার আলো ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। এ ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হওয়া উচিত। আর নারীদেরও সেই মধ্যযুগীয় দাসীবৃত্তির মনোভাব পরিহার করে অধিকার সচেতন ও কর্তব্য পরান হওয়া উচিত।
নারী পুরুষের শ্রমসাধনা ও সমান অংশগ্রহণের মাধ্যমেই কেবল গড়ে উঠতে পারে একটি সভ্য ,উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী জাতি বা দেশ। প্রবাদ আছে, আগে ঘর ,তবে তো পর। অর্থাৎ করে নারীকে পশ্চাতে ফেলে বাইরে পুরুষ একা একা কোনো ক্রমেই উপরে উঠতে পারবে না।উপরে উঠতে হলে, দেশ বা জাতির উন্নতি চাইলে, নারীকে অবশ্যই সমভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে সর্বত্র।
পরিশেষে প্লেটোর সেই বিখ্যাত কথাটিই স্মরণীয়,’Woman is an interpensable part of the mankind who must complete their role to vibrate common interest’
আজ এ পর্যন্তই। আশা করি সকলের ভাল লেগেছে। ভাল লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে যাবেন।
দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ।।