কেমন আছেন সুপ্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন ও সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি এক অদ্ভুত পর্যটন স্থানের খবর নিয়ে। নরকের দরজা খুলে আছে পৃথিবীর বুকে –
নরকের দরজা খুলে আছে পৃথিবীর বুকে
পৃথিবীতে অনেক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে চলেছে। যা জানার জন্য অদম্য চেষ্টা করে চলেছে মানুষ। এ পৃথিবীতে এমন অনেক স্থান রয়েছে যা রহস্যের মায়াজালে ঘেরা। যেমন, আমাজন অরন্য। যে জঙ্গলের রয়েছে অনেক রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
কিন্তু আজকে আমি আমাজন জঙ্গল সম্পর্কে লিখবো না। আজকে আমি এমন একটি বিপজ্জনক পর্যটন স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতে যাচ্ছি। যেই ভয়ঙ্কর স্থানটি নরকের দরজা নামে পরিচিত।
তুর্কিমেনিস্তান এর রাজধানী আশগাবাত থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে একটি ছোট্ট গ্রাম অবস্থিত। এই গ্রামটির নাম দারভাযা। এই গ্রামে বসবাস করে তেকে উপজাতির প্রায় ৩০০ মানুষ। এই গ্রামে রয়েছে এক অদ্ভুত জায়গা। যেখানে ৭০ ফিট ব্যাসের একটি বিশাল গর্ত রয়েছে।
এই গর্তের মধ্যে জ্বলছে ভয়ংকর আগুন। এই গ্রামে বসবাসরত তেকে উপজাতির মানুষরা এই স্থানকে সবসময় এড়িয়ে চলে। কারণ তারা এই স্থানকে প্রচুর ভয় পায়। তারা এই স্থানটির নাম দিয়েছে নরকের দরজা। এই নামের সাথে এখানে আসা মানুষরা একমত। এই বিশাল গর্ত টি কোনো প্রাকৃতিক গর্ত নয় ।
১৯৭১ সালের আগে এই গর্তের কোনো অস্তিত্বই ছিল না। এই বিস্ময়কর স্থানটির ইতিহাস হতে জানা যায়, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭১ সালে প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পন্ন এই স্থানটি আবিষ্কার করে। কিন্তু তারা প্রথমে মনে করেছিল যে এটি একটি তেল ক্ষেত্র।
তারা সেখানে ডিলিং মেশিন দিয়ে তেল উত্তোলন করার জন্য ক্যাম্প স্থাপন করে। যখন তারা সেখানে তেল উত্তোলন করার চেষ্টা করছিল। তখন ঘটে একটি দুর্ঘটনা, সেখানের মাটি ধসে পড়ে এতে ডিলিং মেশিন সহ সবকিছু মাটির নিচে চলে যায়। এই দুর্ঘটনায় মারা যায় অনেক লোক। আর এখানে সৃষ্টি হয় এক বিশাল গর্ত।
সেখান থেকে বিষাক্ত মিথেন গ্যাস বের হতে থাকে। ভূতত্ত্ববিদরা মনে করেছিলেন যে এখানে খুব সামান্য পরিমাণ গ্যাস রয়েছে। তাই তারা এটি জ্বালিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন। তারা মনে করলেন এই গ্যাস জ্বলে কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে এবং তারা আবার তেল উত্তোলনের কাজ শুরু করবেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই আগুন সেই ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত জ্বলছে। রাতের বেলা প্রায় ২.৫ কিলোমিটার দূর থেকে এই গর্তের আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়। তখন এই দৃশ্যটা দেখতে ভয়ানক সুন্দর লাগে। এই নরকের দরজা ভ্রমণ করার জন্য প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ এখানে বেড়াতে আসে।
এই স্থানটি হয়ে উঠেছে একটি বিশাল পর্যটন স্থান। ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজারের বেশি ভ্রমণবিলাসী মানুষ এই স্থানটি ভ্রমণ করেছেন। এই স্থানে পর্যটক হিসেবে প্রথম পর্যটন করতে আসেন ৫৭ বছর বয়সী উইল কিপিং নামের এক স্কট নাগরিক। পর্যটকদের কাছে এই স্থানটি ভয়ংকর সৌন্দর্যে ভরা এক বিস্ময়কর স্থান।
আশা করি আজকের পোস্ট (নরকের দরজা খুলে আছে পৃথিবীর বুকে) টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আগামীতে আরো সুন্দর কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো এই গ্রাথোর প্লাটফর্মে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন। বিদায়। এমন সব দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর Facebook Group এর সাথেই থাকুন।