Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

পিঁপড়া বৃত্তান্ত পার্ট ২

পিঁপড়া বৃত্তান্ত পার্ট ২

“কই যাচ্ছিস?”

আমি অর্ধ ঘুম চোখে রেখে অনেক কষ্ট করে বললাম, “আমি ঘুমাচ্ছি আম্মু। কই যাবো?”

“মিথ্যে বলিস না। গেইটের চাবি নিয়ে আস্তে আস্তে নিচে নামছিস, আমি দেখেছি। যাচ্ছিস কোথায়?”

“আম্মু, ঘুম ভাঙিয়ে এসব কাহিনী বন্ধ করবা?” বলে এক পাশে মোবাইল রেখে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।

 

“এই একটু আস্তে চালাও।” সুহাসিকা পিঠে খুব জোরে থাপড়ে বলল।

“আস্তেই তো চালাচ্ছি।” আমি পিছে ফিরে বললাম।

“এভাবে বারবার ব্রেক দিচ্ছো কেন? তোমার সাথে বারবার ধাক্কা খাওয়ার জন্য?” আবার পিঠে থাপ্পড়।

 

সুহাসিকা বাসন্তী রঙের শাড়ী পরেছে।

কপালে ছোট একটি কালো টিপ। খুব একটা সাজেনি। সুন্দর মেয়েরা তেমন একটা সাজে না। তারা জানে তারা সুন্দর। এজন্য তাদের মনে অহংকার। অহংকার যে আছে তাও তারা জানে। সেই অহংকার তারা প্রকাশ করতে চায় না। অহংকার প্রকাশ না করা নিয়েও তাদের অহংকার আছে।

 

জিইসি কনভেনশনাল সেন্টারে আমার বাইক থামালাম। সুহাসিকা নামলো। আমি হেলমেট খুলে তার দিকে তাকালাম। সে দাঁড়িয়ে আছে। যেন কিছু একটা দেখে চোখ সরছে না। তার চোখে মুখে আতংক। সে যেদিকে তাকিয়ে আছে আমিও সেদিকে তাকালাম।

 

মনে হলো আমি আয়না দেখছি। চোখ বড় বড় করে সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সহজভাবে নিতে পারছি না। হুবহু আমি যেন আমার সামনে! সে আমি কয়েকজন বন্ধু নিয়ে আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে আছে।

 

ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলতে ইচ্ছে করছে না। এরপর কী হল? খুব জানতে ইচ্ছে করছে। আম্মু মশারী খুলে দেয়। আমি চোখ কচলে নিয়ে বললাম, “কী?”

“কাল রাত সাড়ে তিনটার দিকে এমন করলি কেন?” আম্মু খুব সিরিয়াস মুখ নিয়ে বলল।

“আম্মু, কথা বলিও না তো! এমনি কাঁচা ঘুম ভেঙে দিয়েছিলে!” আমি আড়মোড়া দিয়ে বললাম। স্বপ্নের পরের অংশ কী হতে পারে ভাবতে থাকি।

“কালকে আমি তখনো ঘুমাইনি। আওয়াজ হতে দেখে তাকিয়ে দেখি তুই গেইটের চাবি নিয়ে ধীরে ধীরে দরজা খুলেছিস। ভাবলাম নামাজ পড়তে বের হলি নাকি? গেইট খোলার আওয়াজ শুনে তোকে ফোন দিলাম। তুই ঘুমের ভান ধরে কথা বললি। তোর আব্বুকে পাঠালাম নিচে। গেইট খোলা। তালাচাবি ঝোলানো। পরে রুমে এসে দেখে তুই ঘুমোচ্ছিস। গেইট খুলে আমার ফোন দেখে শুয়ে পড়েছিস না?” আম্মু একটানা কথাগুলো বলল। আম্মু আরো কথা বলছে। কান পর্যন্ত আসার আগে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আম্মু হাত মুখ নাড়িয়ে কথা বলছে। মোবাইলে আলো জ্বলে উঠল। মোবাইল তো সাইলেন্ট করা না। আওয়াজ হচ্ছে না কেন? স্ক্রিনে সুহাসিকার নাম। হাত বাড়িয়েও মোবাইল হাতে নিতে পারছি না। আমার শরীর ট্রান্সপারেন্ট মনে হচ্ছে হঠাৎ। হাতে তাকিয়ে দেখি পিপড়া। আমার সারা গায়ে লাল পিপড়া। আমার ভাবনা গুলো একে একে নিস্তব্ধতা খুঁজে নিচ্ছে। আমি চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। লাল পিপড়া গুলো শরীরে লাইন ধরে যেন ফিজিক্যাল ট্রেনিং নিচ্ছে। একদম সোজা লাইন তাদের।

(সমাপ্ত)

Related Posts

11 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No