গ্রামের নাম গালিপুর। সেই গ্রামে বাস করতো এক প্রভাবশালি জমিদার। তার নাম গলাকান্ড। তার নামই আজব নয়, কাজেও আজব। কারণ সে এমনিই সেই গ্রামের জমিদার হয়নি, সে আসলে একজন ডাকাত। এই তার পরিচয়, কিন্তু সে যে ডাকাত সেটা কেউ জানে না।
তার নাম শুনলেই গ্রামের সকলে কাপতে থাকে। কারণ, যেই ব্যক্তি জমিদারের কথার অবাদ্ধ করে তার গলা কেটে নেওয়া হতো। গ্রামের একজনও জমিদারকে পছন্দ করতো না। কারণ, জমিদার সবার উপর অনেক অত্যাচার করতো।
জমিদার গলাকান্ডের ছিল ২৮ টি পুকুর। সেই প্রত্যেকটি পুকুরেই অনেক মাছ চাষ করা হতো। আর সেই মাছ বড় হলে বাজারে বিক্রি করা হতো। সে মাছ বিক্রির টাকা জমিদার নিজের কোশাগারে জমিয়ে রাখতো। গ্রামের অসহায় মানুষদের একটুকুও সাহায্য করতো না।
একদিন খবর আসলো জমিদারের ২টি পুকুরের সকল মাছ চুরি হয়ে গেছে। জমিদার তো রেগে তার পোহরিদের ঘোষণা দিলো যে, “যারা আমার পুকুরের মাছ চুরি করেছে তাদের গলা কেটে কুকুরদের খাওয়াও”।
এই কথা শুনে পোহরিরা চোরকে খুজতে থাকলো। কিন্তু চোরকে খুঁজে পেলো না। তাই তারা জমিদারের কাছে এছে বলল,“আমরা চোরকে খুঁজে পাইনি”।
জমিদার ভাবতে লাগলো যে,“ তার পুকুরের মাছ কে চুরি করেছে”?
তাই জমিদার আবারো ঘোষণা দিলো, “যে মাছ চোরকে ধরিয়ে দিবে তাকে ১০০ মুদ্রা দিবে”। কিন্তু জমিদারের কথা কেউই কানে নিলো না। বরং গ্রামের লোকজনেরা বলাবলি করতে লাগলো ভালোই হয়েছে যে জমিদারের মাছ চুরি হচ্ছে।
আরও তারা বলাবলি করতেছে, “মাছ চোর যেন আরও জমিদারের পুকুরে মাছ চুরি করে”।
সেই গ্রামের জঙ্গলের পাশে বাস করতো এক জেলে। সেই আসলে জমিদারের পুকুরে মাছ চুরি করতেছিল। কারণ, “ জমিদার তার পুকুর জোর করে নিজের করে নিয়েছে”। তাই সেই জেলে জমিদারের পুকুরের মাছ চুরি করে বাজারে বিক্রি করতেছিল।
জমিদার তো আরও রেগে গিয়েছে। কারণ, তার পুকুরের মাছ কে যেন প্রত্যেক দিনই চুরি করতেছে। এবার জেলে ভাবলো এইভাবে আর কত দিন চুরি করবে। তাই জেলে ঠিক করলো যে, “এই জমিদার তাদের গ্রামে থাকলে তাদের পেটের দায়ে না খেয়ে মরতে হবে”।
তাই একদিন জেলে জমিদারকে শাস্তি দেওয়ার জন্য গ্রামের লোকজনদের একত্রে এনে বুদ্ধি বের করলো। এবং তাদের বুদ্ধিটা হচ্ছে যে, জমিদারের পুকুরে যত মাছ আছে সব মাছ চুরি করে অন্য গ্রামে বিক্রি করে দিবে। আর এর ফলে জমিদার আরও রেগে যাবে।
কারণ, জমিদারের মাথায় স্মরার রোগ ছিল। সেই রোগ যেই ব্যক্তিরই মাথায় থাকবে সে ব্যক্তি যদি প্রচন্ড রেগে যায় তাহলে সে ব্রেন স্টোক করে মারা যাবে। তাই জেলে সহ গ্রামের লোকজনেরা জমিদারের সকল পুকুরের মাছ এক রাতেই চুরি করে পাশের গ্রামের বাজারে বিক্রি করে দিলো। আর জমিদার আরও রেগে গেলো। এর ফলে জমিদারের মাথা ব্যাথা আরও বেড়ে গেলো। এবং শেষ পর্যন্ত জমিদার মারাই গেলো।
আর গ্রামের সবাই আগের মতো নিজেদের জিবিন ভালোই কাটাতে লাগলো।
তো বন্ধুরা কি বুঝলে? কমেন্ট করে জানাও।
সকলকে ধন্যবাদ।