আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় পাঠক এবং পাঠিকাগণ। কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি আপনারা সকলে যে যার অবস্থানে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আপনারা সবাই নিজ নিজ অবস্থানে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আল্লাহর কাছে এই দোয়া করি সবসময়। আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি তা হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তি নিয়ে।…………….চলুন সকলে সময় নষ্ট না করে বিষয়টি দেখি। প্রযুক্তি যখন আসক্তি ও মুক্তির উপায় –
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি আমাদের জীবন কে এতো সুন্দর আর সহজ করে দিয়েছে যে আমরা প্রযুক্তি ছাড়া এক মূহুর্ত চলার কথা ভাবতেও পারি না। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে সারাদিনের নানান কাজে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করি।
এর মাঝে আমাদের অনেকেই আছে যারা ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করার আগে মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে পছন্দ করে। ফলে দিনটা শুরু হয় প্রযুক্তির ব্যবহার দ্বারাই,যদিও এখন আমাদের সকাল টা সূর্য উদয়ের অনেক পরে শুরু হয়।
কেননা অনেকেই অনেক রাত জেগে মোবাইল নামক আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করেন।কিন্তু আমরা কি ভেবে দেখেছি একবার,,,,,,সভ্যতার এই ক্রম বিকাশের পূর্বে মানুষের সকাল টা কিভাবে শুরু হতো?সকলে সূর্যের জাগার আগে জেগে যেত,, ,যেমন টা আমরা কবিতায় পড়েছি,,,”সূর্য্যি মামা জাগার আগে উঠবো আমি জেগে, হয়নি সকাল ঘুমো এখন মা বলবেন রেগে”…….এ থেকে বোঝা যায় দিনের শুরু টা মানুষ অতি শীঘ্র শুরু করতেন সকালের সুন্দর আবহাওয়া ও পাখিদের কলরবের সাথে।কত সুন্দর এবং মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ্য ছিলো সেসময়।
কিন্তু এখন প্রযুক্তি আমাদের এতো টাই আসক্ত করে দিয়েছে যে আমরা রাত জেগে আধুনিক প্রযুক্তির মোবাইল ব্যবহার করে,,,সকালে দেরিতে ঘুম থেকে উঠি যার ফলে সূর্য উদয়ের দৃশ্য আমরা দেখতে পাই না। অনেকেই আছেন যারা খাওয়ার সময় মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন। এটাও প্রযুক্তি আসক্তির এক ভয়ানক দিক।রাস্তাঘাটে লক্ষ্য করা যায় ছেলে -মেয়েরা পথ চলার সময় মোবাইল ব্যবহার করে ফলে অনেকেই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
প্রযুক্তি আসক্তি শুধু বড়দেরই নয়, বর্তমান সময়ে শিশুদের উপরেও প্রযুক্তি মারাত্মক আসক্তি সৃষ্টি করছে।অনেক মা-বাবা আছেন যারা কাজের চাপের কারনে ছোট বাচ্চা দের হাতে মোবাইল, ল্যাপটপ তুলে দিয়ে তাদের ব্যস্ত রেখে নিজেদের কাজ অবলীলায় করে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে তাদের সন্তানদের প্রযুক্তি আসক্তির দিকে তারা লক্ষ্য করেন না ফলে শিশুরা প্রযুক্তির প্রতি এমনি আসক্ত হয়ে পড়ছে, সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে আনতে অনেক বাবা-মা কে সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে।হারিয়ে যাচ্ছে পড়াশোনায় মনোযোগ। বাচ্চারা বাইরে গিয়ে খেলাধুলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। দীর্ঘ সময় প্রযুক্তি মধ্যে কাটানোর ফলে অনেকেই শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। যে সময় টা তাদের খেলাধুলায় আর পড়াশোনায় ব্যয় করতে হত সেটা এখন শিশুরা প্রযুক্তি ব্যবহার এর ব্যয় করছে।
অনেকেই আছেন যারা প্রযুক্তি আসক্তির কারণ এ একসময় এর ভালো ছাত্র-ছাত্রী থেকে পিছনের সারির দিকে ধাবিত হয়েছেন। সেজন্য অনেকেই চান প্রযুক্তি আসক্তি থেকে মুক্ত হতে। কি উপায়?কি করে পাবেন মুক্তি? এই ভাবনায় ডুবে থাকেন তারপরেও প্রযুক্তি আসক্তি থেকে বের হতে পারছেন না?
আসক্তি হতে মুক্তির কিছু উপায়:
১. নিজেকে সময় বেশি দিন
২. বাস্তব বন্ধুবান্ধব এর সাথে সময় কাটান
৩. বাস্তব জীবনের খেলাধুলা ও ব্যয়াম করুন
৪. অবসরে গল্পের বই বা উপন্যাস পড়ুন
৫. একঘেয়েমি লাগলে বাইরে ঘুরতে বের হন
৬. টিভি, মোবাইল কে যথাসম্ভব সময় কম দিতে চেষ্টা করুন
৭. নিজের ভালো লাগার একটা অন্য জগত সৃষ্টি করুন
৮. শখের কাজ যেমন বাগান করা, মাছ ধরা, সাতার, এগুলোও বেছে নিতে পারেন
৯. সৃজনশীল কাজ কর্মে মনোযোগ দিন
১০. পরিবার এর সাথে গল্প গুজব, হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে,,,বা অন্য কোনো কাজ নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করুন।
মানুষ চাইলে কি না করতে পারে। মানুষই প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে। তাই প্রযুক্তি কখনো মানুষের নিয়ন্ত্রক হতে পারে না।
আমার লেখায় যদি কোনো ভুলে হয় দয়া করে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেবেন। ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন কেমন লেগেছে। আজ এই পর্যন্তই পরের পর্বে আরও অন্য কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন এবং গ্রাথর ডট কম এর সাথেই থাকুন। বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন। নিজে সচেতন হন, অন্যকেও সচেতন করুন। আল্লাহ হাফেজ