আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজই পড়ালেখার সাথে জড়িয়ে থাকে। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় হলো আমরা তা বুঝতে পারি না। এই যেমন ধরুন আমরা যখন বাজারের হিসাব মিলাই তখন আমরা অংক করি। কিন্তু এই অংক করাকে আমরা সাধারনত পড়ালেখা বলে থাকি না। এছাড়াও গল্পের বই পড়া, বিখ্যাত ভাষণ শোনাকেও আমরা পড়ালেখা বলি না।
আমরা কেবল নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু বই পড়া ও প্রশ্ন সমাধানকেই পড়ালেখা বলে থাকি। আর এই কারণেই ছাত্র- ছাত্রীদের কাছে পড়ালেখাকে রসহীন মনে হয়। কিন্তু সত্যি কথা হলো পড়ালেখা মোটেও রসহীন নয়, বরং আমরাই এটাকে রসহীন করেছি। তবে কিছু কৌশল রয়েছে যা আমাদের পড়ালেখাকে আনন্দময় করে তুলতে পারে। আজ আমরা সেইসকল কৌশল সম্পর্কেই জানবো-
- পড়ালেখাকে দৈনন্দিন কাজে পরিণত করাঃ আমরা সকলেই তিন বেলা ভাত খাই। কেউ কিন্তু তিন বেলা ভাত খেতে ভোলে না, বরং না খেয়ে থাকলে আরো বেশি খাওয়ার আগ্রহ জন্মে। তেমনি পড়ালেখাকে ভাত খাওয়ার মতো দৈনন্দিন কাজে পরিণত করতে হবে। তাহলে পড়ার প্রতি ফাঁকি দেওয়া কমবে এবং আগ্রহ বাড়বে। এ জন্য আমাদেরকে একনাগাড়ে কয়েকদিন একটা নির্দিষ্ট রুটিন মোতাবেক পড়তে হবে। কিন্তু এ কাজটি করাও এতো সহজ নয়। তাই আমরা এটিকেও সহজ করতে আরো একটি কাজ করতে পারি। এক্ষেত্রে আমরা যে রুটিন বানাবো সেই রুটিন এ পড়ালেখাকে এমন কোন স্থানে রাখতে হবে যেন সেটি আমাদের দৈনন্দিন কোন কাজের ঠিক আগে বা পরে হয়। যেমন খাওয়ার পরই পড়তে বসা বা ঘুমানোর ঠিক আগে পরতে বসা। এটি করলে আমরা পড়ালেখাকেও দৈনন্দিন কাজে পরিণত করতে পারব। কারণ এর মাধ্যমে পড়ালেখা আমাদের নিয়মিত একটি অভ্যাসে পরিণত হবে।
- পড়ালেখার জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করাঃ বড় মাঠে খেলে যে আনন্দ তা কখনও ঘরে খেলে পাওয়া যায় না। তেমনি পড়ালেখার আনন্দ পেতে হলে প্রয়োজন এটি চর্চার জন্য নির্দিষ্ট স্থান। এই স্থান হতে পারে পড়ার টেবিল, অন্য কোন টেবিল, মাটিতে, এমনকি খাটও হতে পারে। কিন্তু অবশ্যই মনে রাখতে হবে এই স্থানে পড়ালেখা ছাড়া অন্য কোন কাজ করা যাবে না। তাহলে এই স্থানটিই হয়ে উঠবে পড়ালেখার কেন্দ্র।
- পড়ালেখাকে প্রাত্যহিক কাজের মধ্যে খোঁজাঃ আমরা যখন বাজারের হিসাব মিলাই তখন অংক করি। এই অংকটির সাথে পাঠ্যবই এর অংকের মিল খুজতে হবে। তাহলে পাঠ্যবই এর উক্ত অংকটি করার সময় সেটিকে মনে হবে কেবল বাজারের হিসাব মিলানোরই মতো। এভাবে আমরা ঐতিহাসিক সিনেমা দেখার সময় তা ইতিহাস, রান্নার সময় মশলার মিশ্রণকে রসায়ন কিংবা গল্পের বই পরার সময় তা সাহিত্য এর বিষয়বস্তুর সাথে মিলাতে পারি। তবে পড়ালেখা অনেক আনন্দময় হয়ে উঠবে।
- পড়ালেখাকে আকর্ষণীয় করে তোলাঃ পড়ালেখা করার সময় আমরা বিভিন্ন রং, চিত্র ব্যবহার করে একে আরও বেশি আনন্দময় করে তুলতে পারি।
এভাবেই পড়ালেখাকে আমরা আনন্দময় করে তুলতে পারি। যার ফলে আমাদের জ্ঞানের পিপাসা আরও বাড়বে।