গত ২৮ এ অক্টোবর ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের প্যারেন্ট কোম্পানি ফেইসবুক এর নাম পরিবর্তন করে “মেটা” রেখেছে। সেই থেকে এই মেটা-ভার্স প্রযুক্তি জনপ্রিয় হয়। সাধারণত মেটাভার্স সর্বপ্রথম ১৯৯২ সালে “নিল স্টেফেন্সন” এর সাইন্স ফিকশন নোবেল “স্নো ক্র্যাশ” এ দেখা যায়।
কি এই মেটাভার্স?
মেটাভার্স হচ্ছে এমন একটি ভার্চুয়াল ত্রিমাত্রিক দুনিয়া যেইখানে সব কাজ মানুষ ঘরে বসেই করতে পারবে। তারা নিজেদের বাসায় শুয়ে শুয়ে দুনিয়া উপভোগ করতে পারবে। ছাত্র-ছাত্রীরা ঘরে বসেই ক্লাস করতে পারবে। শিক্ষকরা যেইকোনো জায়গা থেকে ক্লাস নিতে পারবে। মানুষ যেই কোনো জায়গা থেকে তাদের অফিসার সকল কাজ করতে পারবে।
মেটাভার্স কিভাবে সম্ভব?
আসলে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় না থাকলেও তার একটি ভার্চুয়াল ক্লোন সেই জায়গায় থাকবে। যাকে আমরা বলতে পারি অবতার। মেটা-ভার্সে প্রত্যেকটি মানুষের একটি অবতার থাকবে যেইটা ওই অবতারের মালিক নিয়ন্ত্রণ করবে। যেমনটা আমরা একটি ত্রিমাত্রিক গেম এ দেখতে পাই।
পার্থক্য তা শুধু এইখানেই যে এই দুনিয়াটা আসল দুনিয়া। টেক জায়ান্ট মেটা(পূর্বে ফেইসবুক ) ইতোমধ্যে মেটাভার্স নিয়ে আসার কথা বলেছে এবং আরো একটি প্রেসেন্টেশনে দেখিয়েছে মেটাভার্স দেখতে কেমন হবে। প্রেসেন্টেশনে মার্ক-জাকারবার্গ তার এবং তার কলিগদের অবতার দেখিয়েছে যে কিভাবে তারা ঘরে বা বারান্দাই বসে তাদের অফিস মিটিং করছে, সমুদ্রে সার্ফিং করছে । মেটাভার্স আমাদের জীবনে এক অনেক বড়ো বিপ্লব নিয়ে আসবে বলে ধরা হচ্ছে। কেননা মেটাভার্স আমাদের জীবন পদ্ধতি সম্পূর্ণ বদলে দিবে।
এছাড়াও মার্ক-জাকারবার্গ এর মতে আগামী ১০ বছরের মধ্যে মেটাভার্সের প্রায় ১ বিলিয়ন ব্যবহারকারী হবে, যা এখনও একটি ধারণা মাত্র।
VR(ভি আর )
ভি আর বক্স হচ্ছে এমন একটি যন্ত্র যা ব্যবহার হয় ত্রিমাত্রিক দুনিয়ার অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য। এটি আমাদের মাথায় চোখের উপর পড়া হয়। যেই চিত্রটি আমরা সাধারণ মোবাইল বা পিসিতে দ্বিমাত্রিকভাবে দেখতে পাই যেই একই চিত্রটি আমরা ভি আর বক্স এ ত্রিমাত্রিক আকারে দেখতে পারি।
ভি আর বক্স কে আমরা মেটা-ভার্সে প্রবেশ করার চাবি ও বলতে পারি। কেননা মেটাভার্স এ যাবার জন্য ব্যবহারকারীকে এই ভি আর বক্স পড়তে হয়। “অকুলাস” যা ফেসবুকেরই একটি কোম্পানি, যা ভি আর বাক্স নির্মাণে কাজ করে।
মেটাভার্সের প্রভাব
মেটাভার্স আসলে যে শুধু একটি কোম্পানির প্রভাবিত হবে এমনটি কিন্তু না। এটির ফলে অনেক শিল্প কারখানা প্রভাবিত হবে , যেমন : গেমিং, শিক্ষা ব্যবস্থা , ই-কমার্স , বিনোদন ইত্যাদি।
অনেকের মতে মেটাভার্স আমাদের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ এটি আমাদের সম্পূর্ণ আসল দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে, আবার অনেকের মতে এটি নিয়ে আসবে মানুষের জীবনে এক অন্যতম অভিজ্ঞতা।
ইতোমধ্যে অনেক টেক জায়ান্ট মেটাভার্স নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে : এপিক গেমস , ফেইসবুক, এনভিডিয়া, মাইক্রোসফট, এপল আরো অনেকেই।