★★ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ দেশের সকল শিক্ষা-কার্যক্রম ★★
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়।এরপর এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার আশংকায় ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং এগুলোর শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।কয়েক দফা ছুটি বাড়ানো সত্ত্বেও এখন অবধি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসার কারনে আরেক দফা বাড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসলে এই ছুটি আরো বাড়তে পারে বলে আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাদের মতে,” স্কুল-কলেজে পড়া এসব শিক্ষার্থী আমাদের দেশের ভবিষ্যত।তাই এদের জীবন আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।” তবে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষা-কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয় নি। সরকার টেলিভিশনে দেশের সেরা শিক্ষক দ্বারা ক্লাস করানো চালু করে।এছাড়া প্রত্যেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন ক্লাস চালুর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।তবে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাসগুলো দেশের সব শিক্ষার্থীদের কাছে পৌছানো সম্ভব হচ্ছে কি না তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে।কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন,”দেশের প্রায় ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা এই অনলাইন ক্লাসের সেবা পৌঁছে দিতে পেরেছি।”
দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বাসায় প্রায় বন্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।করোনা মহামারীর কারনে কেউ বাহিরেও বের হতে পারছে না।সারাদিন বাসায় বসে টিভি দেখা, মোবাইলে গেম খেলা,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি সময় কাটানোর মাধ্যমেই দিন কাটাচ্ছে। ফলে তাদের দৈহিক ও মানসিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।অনেকে বাসায় বন্ধ অবস্থায় থাকতে থাকতে খিটখিটে মেজাজের হয়ে যাচ্ছে এবং কোনো কিছু নিজ মতো না হলে বা অল্পতেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলছে।অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও তেমনভাবে না হওয়ার কারনে শিক্ষা অর্জনের দিক দিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে করোনায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার কারণে এখন স্কুল-কলেজগুলোতে একদম নীরব ও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।এসব স্কুল-কলেজে এখন আর নেই আগের মতো একসাথে অনেক শিক্ষার্থীদের ক্লাস করা,টিফিন টাইমে মাঠে খেলাধুলায় মেতে ওঠা,বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়াসহ আরো অনেক কিছু।স্কুল-কলেজগুলোতে দিনের শুরুতে ক্লাস শুরু হওয়ার ঘন্টা আর বাজছে না এখন। এমনকি স্কুল-কলেজ ছুটির ঘন্টাও বাজছে না।দেশের শিক্ষাঙ্গনের পুরো পরিবেশটাই যেন কেমন অদ্ভুত এবং অচেনা হয়ে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার মতো এরকম বিরল ঘটনা দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় ১৯৭১ সালেও একবার ঘটে।সেইবার মুক্তিযুদ্ধের পুরো দীর্ঘ ৯ মাস বন্ধ থাকে দেশের সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং সকল শিক্ষা-কার্যক্রম।পরবর্তীতে অবশ্য তা আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল।
আমাদের সকলের এখন একটাই আশা করোনা জয় করে দেশের শিক্ষাঙ্গনে ফিরে আসুক সেই পুরানো পরিবেশ।শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠুক আনন্দ -উল্লাসে।পড়াশোনার প্রতিযোগিতা আবার শুরু হোক এবং উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে এসব শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করুক।
ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।
রিপোর্টার–রাতিন