ভূমিকা: বর্তমানের আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমান বিশ্বের দিকে তাকালে বোঝা যেতে পারে যে আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কতটা গভীর ভাবে জড়িয়ে আছে। আমরা আজকে যে সভ্যতার পেছনে দাঁড়িয়ে আছি তার অনেকটাই সমর্থন হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে।
বর্তমান সময়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছোঁয়া লেগেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির। যোগাযোগের আধুনিকায়ন এবং ইন্টারনেটের ফলে শুরু হয়েছে ই লার্নিং। ই লার্নিং হলো ইন্টরনেট লার্নিং।
অর্থাৎ ইন্টরনেট ব্যবহার করে কিংবা ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক ,টেলিভিশন ,রেডিও ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করাই হলো একটি আধুনিক পদ্ধতির পাঠদান প্রক্রিয়া। করোনাকালে স্বাভাবিক শ্রেণী কার্যক্রম চালু না রাখার যুক্তিকতা:করোনাকালে স্বাভাবিক শ্রেণী কার্যক্রম চালু না রাখার যুক্তিকতা আছে।
কারণ উন্নত দেশগুলো যেখানে করোনার থাবায় কোনঠাসা হয়ে আছে সেখানে আমাদের মতো জনবহুল দেশ অনেকটাই বিপদের মুখে যদি শ্রেণী কার্যক্রম চালু রাখা হতো তাহলে দেশের দেশের করণের বর্তমান পরিস্থিতি আরো ভয়াভহ হতো। আজকের শিক্ষার্থীরা আমাদের ভবিষৎ।
আজকের শিক্ষার্থীরাই সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিবে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে কতটা উন্নত করতে পেরেছি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে শ্রেণী কার্যক্রম চালু না রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে অর্থাৎ ই লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সেখানে শ্রেণী কার্যক্রম চালু রাখার মানে হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে নিরাশ করা।
তাছাড়াই লার্নিং এর ধারণা :স্কুল বলতেই সারি সারি শেণীকক্ষ। ,ব্ল্যাকবোর্ড ,একরুমে ভর্তি শিক্ষার্থী আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীজুড়ে প্রযুক্তির যে বিকাশ তা ছুঁয়ে গেছে শিক্ষা ব্যবস্থাকেও আর তাতে করে আমাদের এই চিরপরিচিত রূপটা পাল্টে গিয়েছে অনেখানি। ইলেক্ট্রনিক্স প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষাব্যবসাকে বলা হয় ইলেক্ট্রনিক লার্নিং বা ই লার্নিং।
রেডিও থেকে মোবাইল এপ্স সবই ই লার্নিং এর অন্তভুক্ত। ই লার্নিং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অনেক জনপ্রিয়। ই লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী তার প্রয়োজন মতো একই ডিজিটাল কন্টেন্ট বা ভিডিও ক্লিপ ,ইচ্ছেমতো ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সিং আবিষ্কারের ফলে এখন শিক্ষক শিক্ষার্থীকে আলাদা আলাদা করে জায়গায় থেকেও সরাসরি কথা বলতে পারছে।
ই লার্নিং সুবিধা সমূহ:ঘরে বসে সুবিধাজনক সময়ে পছন্দমতো বিষয়ে ই লার্নিং এর মাধ্যমে সহজেই নিজেকে গড়ে তোলা সম্ভব। গতানুগতিক ক্লাসের ব্যাপার না থাকায় নিজের সুবিধামতো সময়ে ই লার্নিং এর মাধ্যমে শেখার কাজটি সহজে এখন সু সম্পন্ন করা যায়। বলা চলে আমাদের সনাতন শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে একদম আধুনিক এবং আলাদা ধরণের হলো এই শিক্ষাব্যবস্থা।
সাধারণত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো এক শিক্ষার্থী যখন কোনো একটি বিষয়ের উপর অধ্যায়ন করে তখন একই সময়ে অন্য বিষয়ে তার মধ্যে শিক্ষার সুযোগ থাকে খুব কম। অথচ অপরাপর অভ্যাস ও অধ্যায়নের পাশাপাশি কিংবা পেশাগত কাজের ফাঁকেও ই শিক্ষা ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের অপরাপর সুযোগ রয়েছে।
সাধারণত প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী যখন কোনো একটি বিষয়ের উপর অধ্যায়ন করতে থাকে তখন একই সময়ে অন্য বিষয়ে তার শেখার সুযোগ থাকে খুব কম। অথচ অপরাপর অভ্যাস ও অধ্যায়নের পাশাপাশি কিংবা পেশাগত কাজের ফাঁকেও ই শিক্ষা ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের অপার সুযোগ রয়েছে। এই ব্যবস্থায় সবচেয়ে সুবিধাজনক দিক হলো ,নিজের ঘরে বসেই ক্লাস করা ,অভীক্ষায় মুখোমুখি হওয়া এবং সনদপত্র অর্জন করা খুব সহজেই সম্ভব হয়।
এ ক্ষেত্রে এখন লিন্ডা ,কোরসেরা ,উডেমি ,ইউডাসিটির মতো ই লার্নিং ফ্লাটফর্মের সুযোগ রয়েছে। ই লার্নিং বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ সমূহ:ই লার্নিং বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ সমূহ নিচে তুলে ধরা হলো;
১.পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি অবকাঠামো ও সক্ষমতা এখনো অনলাইন কার্যক্রম চালানোর নূন্যতম পর্যায়েই পৌঁছাতে পারেনি।
২.করোনার দুর্যোগকালীন বিশেষ শিক্ষাপুঞ্জি তৈরী করে সেই সময়সীমার মধ্যে সেখান সম্ভব এমন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক তৈরী করা।
৩.নতুন করে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন কেনার সামর্থ নেই।
৪.ইন্টারনেট সেবার অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের কাছে বিনামূল্যে পৌঁছানো ছাড়া শিক্ষাকে অনলাইন নিয়ে গেলে তার নতুন ধরণের বৈষম্য সৃষ্টি করতে পারে।
উপসংহার: তাই বলা হয় এই লার্নিং আমাদের বাংলাদেশকে যুগান্তকারী মাধ্যম হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ই লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত যে বিপ্লব ঘটেছে তাকে যথাযত বাস্তবায়নে রূপান্তর করা গেলে লেখাপড়া ,জ্ঞান দক্ষতা খুব সহজে সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে এই সোনার বাংলা।