পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা পেটপুরে দুবেলা খেতে পায়না। আবার এমন একদল মানুষ আছে যাদের মোট সম্পদ কোনো একটি দেশের মানুষের মোট সম্পদের চেয়েও বেশি। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর ধনী এক শতাংশ মানুষের যে সম্পদ আছে তা পৃথিবীর বাকি ৯৯ শতাংশ মানুষের সম্পদের সমান। আজ আমি আপনাদের সাথে এইসব সম্পদশালী মুকুটবিহীন সম্রাটদের গল্প বলবো।
১. জেফ বেজোস: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ই-কমার্স অ্যামাজনের উদ্যোক্তা ও সিইও জেফ বেজোস। তিনি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তার মোট সম্পদের পরিমান ১১২ বিলিয়ন ডলার। জেফ অ্যামাজন শুরু করেন তার বেডরুমে। অ্যামাজন শুরুতে একটি অনলাইনভিত্তিক বই বিক্রির দোকান ছিলো। আজ সেখান থেকে জেফ বেজোস পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিতে পরিনত হয়েছেন।
২. বিল গেটস: বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফসওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের মালিক তিনি। বিল গেটসের মোট সম্পদের পরিমান ৯০ বিলিয়ন ডলার। ১৯৭৫ সালে বিল গেটস ও পল অ্যালেন মাইক্রোসফট শুরু করেন। তিনি ২০১৪ সাল পর্যন্ত মাইক্রোসফটের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে ছিলেন। এখন তিনি একজন বোর্ড মেম্বর হিসেবে আছেন। তিনি এখন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত আছেন।
৩. ওয়ারেন বাফেট: ওয়ারেন বাফেট এই সময়ের একজন জনপ্রিয় উদ্যোক্তা ও বক্তা। তার মোট সম্পদের পরিমান ৯১ বিলিয়ন ডলার। তিনি ১১ বছর বয়সে প্রথম বিনিয়োগ করেন এবং তার এখন ৬০ টিরও বেশি কোম্পানী রয়েছে।
৪. বার্নাড আর্নল্ড: খ্যাতনামা ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান লুই ভিটনের সিইও আর্নল্ডের মোট সম্পদের পরিমান ৭৫ বিলিয়ন ডলার। তিনি তার জীবনের প্রথম একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। এরপর তিনি তার নিজ পরিবার ব্যবসায়ে ডিরেক্টর পদে অংশগ্রহন করে আজ তিনি সেরা ধনীদের মধ্যে একজন।
৫. মার্ক জুকারবার্গ: জুকারবার্গ ফেসবুকের উদ্যোগতাদের মধ্যে অন্যতম। তার সম্পদের পরিমান ৭৪ বিলিয়ন ডলার। মার্ক জুকারবার্গ কম বয়সে বিলিয়নার হওয়া মানুষদের মধ্যে অন্যতম। তার কলেজের মধ্যে ছোট পরিসরে তিনি ফেসবুক চালু করেন। আজ সেই ফেসবুক চারশ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানী হয়ে গিয়েছে।
৬. আমানসিও অর্তেগা: বিখ্যাত পোষাকের ব্র্যান্ড জারা কোম্পানীর মালিক অর্তেগার মোট সম্পদের পরিমান ৭০ বিলিয়ন ডলার। তার কোম্পানীর সারা পৃথিবীতে সাত হাজার শাখা আছে। ২০১১ সালে তিনি কোম্পানীর সিইও পদ থেকে অবসর নেন।
৭.কার্লোজ স্লিম হেলু: মেক্সিকান ব্যবসায়ী কার্লোজ স্লিম হেলুর মোট সম্পদের পরিমান ৬৭ বিলিয়ন ডলার। তার নিয়ন্ত্রনে প্রায় দুই শতটির মত কোম্পানী চলে। তিনি টেলিকমিউনিকেশন থেকে শুরু করে ব্র্যান্ড ব্যবসা পর্যন্ত করেন। তার বাবা লেবানন থেকে মেক্সিকো একজন ইমিগ্রান্ট হিসেবে এসেছিলেন।
৮. কোক ব্রাদার: চার্লস ও ডেভিট কোক এই দুইজনে মিলে আমেরিকার কোন ইন্ডাসট্রি চালান। এ দু্জনেই ৬০ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তারা দুজনেই তাদের বাবা থেকে এ কোম্পানীর অংশ পেয়েছেন। এই দুই ভাই আমেরিকার রাজনীতির সাথে বেশ ভালোভাবে জড়িত। এদের যেমন সুনাম আছে তেমনই দুর্নামও আছে।
৯. ল্যারি অ্যালিসন: ল্যারি অ্যালিসন সফটওয়্যার কোম্পানী ওরাকল এর নির্মাতা ও সিইও। তার সম্পদের পরিমান আটান্ন বিলিয়ন ডলার। তার কোম্পানী অনেক সফটওয়্যার বানিয়ে বিশ্বকে প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে এসেছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআই এর ডাটাবেস অ্যালিসন তৈরি করেন। তিনি একজন বড় মনের দাতাও বটে। তিনি পড়াশোনার উন্নতির জন্য কোটি কোটি টাকা দান করেছেন।
১০. মাইকেল ব্লুমবার্গ: আমেরিকান রাজনীতিবিদ, দাতা ও ব্যবসায়ী মাইকেল ব্লুমবার্গের মোট সম্পদের পরিমান পঞ্চাশ বিলিয়ন ডলার। ১৯৮১ সালে তিনি একটি মিডিয়া কোম্পানী শুরু করেন। তিনি শেয়ার মার্কেট ও বিভিন্ন ব্যবসায়ে নিজেকে জড়িত রেখেছেন। তিনি আমেরিকার নিউইয়র্কের মেয়র ছিলেন অনেক বছর।