বাংলাদেশের প্রকৃতি বড়ই সৌন্দর্যময় । বিচিএ লিলাভূমি আমাদের এ বাংলাদেশ । সুজলা ,সুফলা , শস্য-শ্যামলা, রত্নধারিনী এ দেশের রুপে মানুষ কতই না মুগ্ধ হয়েছে । অরন্য, নদী ,শিলাময় উঁচু পাহাড় নিয়ে এ দেশটি। এ দেশের বনে বনে ফুলের সমারোহ , মাঠে মাঠে নানা জাতের ফসলের আগমনী গান, নদ-নদী , খাল -বিলে আঁকাবাঁকা জল ,মাছারাঙ্গা , বক ও সোনালী পাখা ঝাপটানো বড়ই মনোমুগ্ধকর ।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক অবস্থান ঃ
বাংলাদেশে দক্ষিন এশিয়ার একটি দেশ । বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা চলে গেছে । এইজন্য বাংলাদেশের জলবায়ু মোটামোটি সমভাবাপন্ন। মৌসুমী বায়ুর প্রভাব দেশের জলবায়ুর এক বেশি যে সমগ্রিভাবে বাংলাদেশের জলবায়ু ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু নামে পরিচিত । বিভিন্ন ঋতুতে জলবায়ুর কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা যায় । বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন সর্বোচ্চ তাপমাত্তা ৩৪ ডিক্রি সেলসিয়াস এবং শীতকালীন সর্বনিম্ন তাপমাত্তা ০৭ ডিক্রি সেলসিয়াস। এ দেশের বার্ষিক বৃষ্টিপাতের গড় ২০৩ সেন্টিমিটার। পশ্চিমাংশ অপেক্ষা পূর্বাংশ বৃষ্টিপাতের পরিমান বেশি । বর্ষাকালে আমাদের দেশের বেশি বৃষ্টি হয় । বাংলাদেশে মোট বৃষ্টিপাতের পাঁচ ভাগের চার ভাগ বললেই চলে । বাংলাদেশের উওরে ভাওয়াল ও মুধুপর গড়। পার্বত্য চট্রগ্রামের বিশাল এলাকা জুড়ে সিমাহীন সৌন্দর্যের সমাবেশ । আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ আর পাহাড়ের কোল ঘেষে আদিবাসিদের বসবাস । হাতে গোনা শহরগুলো বাদ দিলে বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান দেশ। গ্রামের সৌন্দর্যে কোন কৃত্তিমতা নেই । যতদূর দৃষ্টি যার শুধু মাঠ আর মাঠ । প্রকৃতিগন অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশেকে সমৃদ্ধিশালী দেশ বলা যায় ।
বাংলাশের মাটি
বাংলাদেশে নদীমাতৃক দেশ । ছোট বড় অসংখ্যা নদী এদেশে জালের মত ছড়িয়ে আছে । প্রতিবছর বন্যায় এ নদীগুলো পলি মাটি বহন করে । আর এ কারনে বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা পলি মাটি দিয়ে গঠিত । পলি মাটির উর্বতার কারনে এদেশে ভালো ফসল জন্মায় । এদেশের প্রায় অধিকাংশ এলাকাতে তিনবার ফাসল উৎপাদন করা হয় ।
বাংলাদেশের তাপমাত্তা ঃ
বাংলাদেশের উপর দিয়ে ক্রান্তীয় মৌসুমি বায়ু বছরের প্রায় অধিকাংশ সময় প্রাবাহিত হয় । ফলে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত বেশি হয় । বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে গড় তাপমাত্তা ৩৫ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিক্রি সেলসিয়াস এবং ১৫ ডিক্রি থেকে ২৫ ডিক্রি সেলসিয়াস থাকে। এদেশে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেশি শীত ও এপ্রিল -মে মাসে গরম বেশি থাকে । তবে প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়ের কারনে যেভাবে সমস্ত পৃথিবীর তাপমাত্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আমাদের দেশেও তার প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে ।
খনিজ সম্পদ ঃ
বাংলাদেশে খনিজ সম্পদ অত্যন্ত সমৃদ্ধ । গ্যাস এদেশের অন্যতম খনিজ সম্পদ । তাছাড়া কয়লা ও তেলে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ । গ্যাস বাংলাদেশের মোট জ্বালানির ৭০% ভাগ চাহিদা পূরন করে । বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বছরে প্রায় এক মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলনিত হয় ।মধ্যপাড়া কঠিনশিলা প্রকল্প থেকে বছরে ১.৬৫ মিলিয়ন টন কঠিনশিলা উত্তোলিত হয় ।
বাংলাদেশের প্রাকৃতির ন্যায় এমন বৈচিত্ত্য পৃথিবীর আর কোথাও পরিলক্ষিত হয় না । প্রকৃতিই বাংলাদেশকে আলাদা বৈশিষ্ট্য দান করেছে । বাংলাদেশের ছয়টী ঋতু তাদের সৌন্দর্য ও বৈচিত্ত্যে কানায় কানায় ভরিয়ে তুলেছে বাংলার প্রাকৃতিকে । প্রকৃতি এ দেশের মানুষের মনকে নানা রঙ্গের আল্পনায় বিচিত্ত অনুভবে রঙ্গিন করে তোলে । প্রাকৃতির কল্যানেই আমরা বাংলাদেশ চিরকাল সুখ, সৌন্দর্য ও শান্তি অনুভব করি ।