বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিবেশ, আবহাওয়া, জলবায়ু ও মৌসুমি আদ্রতা কৃষি কাজের জন্য খুবই উত্তম এবং এ দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুতে ধানের চাষ ও ফলন খুবই বেশী হয়ে থাকে। ভাত বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাবার হিসেবে বিবেচিত। বাঙালি জাতিকে মাছে-ভাতে বাঙালি বলা হয়ে থাকে।
সারাদেশেই হেক্টর হেক্টর বিস্তৃীর্ণ জমি জুরে ধানের চাষ হয়ে থাকে। প্রতিবছরই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে আঁউশ, আমন, ইরি ও বরো ধানের চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। বলতে গেলে বাংলাদেশের ছয় ঋতুতেই ধানের চাষাবাদ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার বলেছেন, একটি দেশ বা অঞ্চলের প্রধান খাদ্য কি হবে তা নির্ভর করে ওই দেশ কিনবা অঞ্চলের ভৌগলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু উপর নির্ভর করে যে খাদ্য চাষযোগ্য জমিতে বেশী উৎপাদন হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিবেশ, আবহাওয়া ও জলবায়ু দিক বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে যে বাংলাদেশে ধানের চাষ সব থেকে বেশী হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় সারাদেশেই ধানের চাষাবাদ হয়ে থাকে। এছাড়াও সারাবছর জ্বুরেই আঁউশ, আমন, বরো ও ইরি ধানের চাষাবাদ হয়ে থাকে এবং যার কারণেই বাঙালি জাতির ভাতের উপর চাহিদা বেশী এবং ভাত বেশী খেয়ে থাকে। খেঁটে-খাওয়া কৃষকেরা অনেক পরিশ্রম করে চাষাবাদযোগ্য জমিতে কৃষিকাজ করে থাকে।
কৃষক সকালে পান্তা ভাত খেয়ে মাঠে ধান চাষে লিপ্ত হয়। এছাড়াও দুপুরে তাদের স্ত্রী ভাত ক্ষেতে বহন করে আনে খাবার চাহিদা পূরণ করার জন্য। কৃষকেরা ক্ষেতে অত্যধিক পরিশ্রম করে এবং তারা ভাত অনেক বেশী খেয়ে থাকে। ধান থেকে প্রক্রিয়াজাত করে চাউল করা হয় এবং পরবর্তীতে চাল রান্না করে ভাতে রূপান্তর করা হয়। খাদ্য হিসেবে ভাত খবই পুষ্টিকর খাবার এবং পেট ভরে একবার ভাত খেলে ভরাপেটে অনেক সময় কাজে লিপ্ত হয়ে থাকা যায়।
বাংলাদেশে ভাতকে সুপার ফুড বলা হয়। শুধু কষকেরা নই বরং শহর অঞ্চলের মানুষও ভাত বেশী খেয়ে থাকে। শহরেও ভাতের প্রবনতা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে ভাতে পারিশ্রমিক শক্তি পাওয়া যায় এবং অফিসে ও কাজের সময় শরীর ঠান্ডা রাখে এবং দীর্ঘসময় ধরে মনকে সতেজ রাখে। চালের মাধ্যমে শুধু ভাত হয় তা নই। চালের মাধ্যমে বাত ছাড়াও খিচুরি, বিড়িয়ানি, পোরাও, ক্ষীর ও পায়েস তৈরী করা হয়ে থাকে যা ভাতের মতনই পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে ধান চাষ বাদেও অন্যান্য ফসল ও সবজি চাষাবাদ করে থাকে। এছাড়াও দারিদ্রতা বিমোচনে গাবাদিপশুপাখিও লালন-পালন করে থাকে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে খুবই দরিদ্রতম একটি দেশ যেখানে এখনও ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ ভাতের অভাবে পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আগামী দিনে ভাতের চাহিদা মিটিয়ে দারিদ্রতা বিমোচন হবে বলে আশা বাংলাদেশের খেঁটে-খাওয়া সাধরণ মানুষের।
সূত্র: বিবিসি