Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

বাংলাদেশের শারীরিক শিক্ষার কিছু বৈশিষ্ট্য

সাধারণ শিক্ষার সাথে শারীরিক শিক্ষা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। শিক্ষাকে পূর্ণতা দান, কার্যকর ও অর্থবহ করার জন্য শারীরিক শিক্ষা অন্যতম পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। ইউরোপের পুনর্জাগরণের ও (রেনেসাঁ) আগে শিক্ষা নিয়মকানুনের শৃঙ্খলে বাধা ছিল। এসময়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা বলতে আলাদা কিছু ছিল না। সামরিক শক্তির অনুষঙ্গ হিসেবে শারীরিক শিক্ষাকে বিবেচনা করা হতো। রাষ্ট্রের নাগরিককে রাষ্ট্রের বৃহত্তর কল্যাণে গড়ে তোলার প্রয়োজনে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল সংস্কৃার সাধিত হয়। শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থসবল জাতি গঠনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচির প্রচলন হয়। নানা রূপ পরীক্ষা – নিরীক্ষা প্রয়োগ প্রভৃতি স্তর পার হয়ে আধুনিক শারীরিক শিক্ষার জন্ম হয় ইউরোপে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর উপযোগীতা প্রমানিত হওয়ায় পরবর্তীতে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে ইউরোপের শারীরিক শিক্ষার পদ্ধতি ও কর্মসূচি সীমিত আকারে চালু হয়। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পরে তৎকালীন পাকিস্তানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচি চালু হয়। সে সময়ের সরকার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষার জন্য শিক্ষক নিয়োগ, খেলার মাঠ, ক্রীড়াসরঞ্জাম, আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের প্রচলন শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচি বজায় থাকে। বাংলাদেশে শারীরিক শিক্ষার ব্যবস্থাপনা ও কর্মসূচি ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রশাসনিক ভাবে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রণালয় শারীরিক শিক্ষার ব্যবস্থাপনা দায়িত্ব পালন করে। এর অধীনে ক্রীড়া অধিদপ্তর দেশের ৬ টি সরকারি শারীরিক শিক্ষার কলেজের প্রশাসনিক ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক কর্মসূচি তদারকি করে থাকে। এসব কলেজ থেকে প্রশিক্ষন লাভ করে শিক্ষকগণ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। এসব শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকের মাধ্যমে শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচির বাস্তবায়ন তথা খেলাধুলার প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এছাড়া ক্রীড়া অধিদপ্তরের অধীনে কর্মরত জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা সরকার কর্তৃক গৃহীত ক্রীড়া কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে থাকে অন্যদিকে শিক্ষমন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিক্ষা অধিদপ্তরে শারীরিক শিক্ষা বিভাগে বছরে দুবার জাতীয় স্কুল ও মাদরাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়া তাদের ব্যবস্থাপনায় স্কুল পর্যায়ের শারীরিক শিক্ষা শিক্ষকদের রিফ্রেশার্স কোর্স নিয়মিত পরিচালিত হয়। শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, বিষয়টিকে ৬ষ্ঠ – ৮ম শ্রেণি এবং শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা, বিষয়টিকে ৯ম – ১০ম শ্রেণি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এজন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রয়োজনীয় পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে শিক্ষকরা শারীরিক শিক্ষার নির্দেশিকার মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা ও জ্ঞানদান করে। স্কুল পর্যায়ে বয়স ভিত্তিক প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচিকে আরও কার্যকর ও বেগবান করা হয়েছে। সামাজিকভাবে বাংলাদেশে শারীরিক শিক্ষার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে এর আশু সুফল দৃশ্যমান হবে বলে আশা করা যায়।

 

 

Related Posts

10 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No