Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

বাদুর কি চোখে দেখে, বাদুর সম্পর্কে বিস্তারিত

বাদুর কি চোখে দেখে, বাদুর সম্পর্কে বিস্তারিত: গোথাম নগরীর ব্যাটম্যান বা বাদুড় মানব এর কথা কারো অজানা থাকার কথা নয়। যে দিনে একজন বিলিয়নিয়ার। আর রাতে একজন নিশাচর অপরাধী অনুসন্ধানী গোয়েন্দা বাদুড় মানব বা ব্যাটম্যান। ব্যাটম্যান আমাদের অনেকেরই পছন্দের একজন সুপারহিরো যে তার নিনজা স্টার বা প্রতীক হিসেবে ব্যাবহার করে বাদুড়কে। যাহোক বাদুড় অত্যন্ত রহস্যময় একটি প্রাণী। এর কারন কি? এর কারন হল বাদুড় কে দিনের বেলা প্রায় দেখাই যায়না।

বাদুড় নিশাচর একটি প্রাণী। এটি রাতের বেলা ফলমূল ও পোকামাকড় শিকার কর খায়। তাহলে প্রশ্ন হল রাতে বাদুড় কি চোখে দেখে? যদি রাতের অন্ধকারে চোখে না দেখে তাহলে বাদুড় কিভাবে ফলমূল ও পোকামাকড় শিকার করে খায়? রহস্যময় এই বাদুড় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনযোগ সহকারে পড়তে হবে।

বাদুর কি চোখে দেখে, বাদুর সম্পর্কে বিস্তারিত

বাদুড় কি?

বাদুড় এর পাখা আছে। এটি উড়ে বেড়ায়। কিন্তু তারপরও এটি পাখি নয়। বাদুড় একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী যা পাখার সাহায্যে আকাশে উড়ে বেড়াতে সক্ষম। এটি পৃথিবীর একমাত্র উড্ডয়ন ক্ষমতা সমপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী। ইদুর প্রজাতির পর স্তন্যপায়ী প্রাণীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রম বাদুড় প্রজাতি বিশ্বব্যাপী সমস্ত শ্রেণীবদ্ধ স্তন্যপায়ী প্রজাতির প্রায় বিশ শতাংশ। পৃথিবীতে প্রায় ১৪০০ প্রজাতির বাদুড় রয়েছে। বাদুড় অন্যান্য পাখিদের তুলনায় অত্যান্ত ক্ষ্রিপ্রগতিতে আকাশে উড়তে পারে। অনেকটা প্যারাগ্লাইডিং এর মত আকাশে উড়ে বেড়ায় এরা। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট প্রজাতির বাদুড় হল কিটির শূকর-নাসা বাদুড়। যা দৈর্ঘ্যে ২৯ থেকে ৩৪ মিলিমিটার এবং সবচেয়ে বড় প্রজাতি হল কলাবাদুড় যা দৈর্ঘ্যে ২১ সেন্টিমিটার।

বাদুড় এর বাসস্থান

বাদুড় দিনের বেলা বের হয় না। এরা নিশাচর প্রাণী। কারণ দিনের বেলায় মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণীই জেগে থাকে। তাদের দৈনন্দিন কর্মকান্ডের দরুণ কোটি কোটি শব্দ তরঙ্গ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। বাদুড় চলাফেরার জন্য শব্দতরঙ্গের উপর নির্ভরশীল। দিবাচর প্রাণীদের কোলাহলে বাদুড়ের পথচলার সেই বিশেষ শব্দ তরঙ্গ হারিয়ে যায়। তাই কোটি কোটি শব্দ তরঙ্গের ভিড়ে নিজের শব্দ তরঙ্গটি খুঁজে পায় না বলেই বাদুড় দিনের বেলা বাসা ছেড়ে বের হয় না। তারা সাধারনত দিনের বেলায় অন্ধকার গুহায় উল্টো হয়ে ঝুলে থাকতে ভালবাসে। এছাড়াও ফাটল, গাছের খোঁড়ল, দেয়াল, পাথরের ফোঁকর, পোড়ো-দালান, পুলের তল, সড়কের কালভার্ট, বড় বড় গাছ, পুরানো কুয়া এগুলিই এদের আস্তানা। এসব জায়গায় সাধারণত এদের স্তূপীকৃত মল ঝাঁঝালো গন্ধ ছড়ায়। বিঘ্ন না ঘটলে এরা বহু বছর একই জায়গায় থাকে।

বাদুর কি চোখে দেখে, বাদুর সম্পর্কে বিস্তারিত

বাদুড় এর খাদ্যাভ্যাস

প্রায় ৭০ ভাগ বাদুড় প্রজাতি পতঙ্গভূক; বাকিরা ফল-মূল খায়। পেয়ারা, লিচু, জামরুল ইত্যাদি ফলের ঠিকানা খুঁজে বের করতে তারা শব্দ তরঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে নাকের গন্ধ শক্তির ওপরও নির্ভর করে। এছাড়াও বাদুড়ের খাদ্য ফল ও ফলের রস, পতঙ্গ, মাকড়সা, মাছ, ব্যাঙ, ছোট সরীসৃপ ও পাখি, ক্ষুদে বাদুড় ও অন্যান্য ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী। খাবার সংগ্রহ করতে যেয়ে বাদুড় উদ্ভিদের পরাগায়নে বড় ভূমিকা রাখে। যা মানব সভ্যতার জন্য অত্যান্ত উপকারি।

বাদুর কি চোখে দেখে

বাদুড় এর চক্ষুকোটরে চোখ থাকলেও বাদুড় প্রায় অন্ধ বললেই চলে। বাদুড় এর চোখ খুব দুর্বলভাবে বিকশিত, যার ফলে দৃষ্টিশক্তি অত্যান্ত ক্ষীণ হয়, কিন্তু কোনো প্রজাতিই পুরোপুরি অন্ধ নয়। বাদুড়ের চোখ খুব সীমিত আলো শোষণ করতে পারে। মূলত চলাফেরার ক্ষেত্রে এরা শব্দতরঙ্গ ও শ্রবণশক্তির উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।

বাদুড় কিভাবে চলাফেরা করে?

বাদুড় চলাফেরা করে বর্তমান যুগের পানির তলের সাবমেরিন এর মত। সাবমেরিন যেমন শব্দতরঙ্গ ছুড়ে পানির তলের সবকিছুর অবস্থান শনাক্ত করে দেখেশুনে চলাফেরা করে বাদুড়ও রাতের বেলা সেভাবেই উড়ে বেড়ায়। বাদুড় যখন পথ চলে তখন সে একধরনের শব্দ তরঙ্গ বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। যা মূলত ১৪০০০ থেকে ১,০০০০০ হার্জ এর উপরে হয়। প্রসংগত মানুষ সাধারনত ২০ থেকে ২০০০০ হার্জ এর মধ্যে শব্দ শুনতে পায়। সেই শব্দ ঘরবাড়ি, গাছপালা, পাহাড়-পর্বত কিংবা বড় কোনো বাধার প্রতিফলিত হয়ে আবার ফিরে আসে বাদুড়ের কানে। বাদুড়ের মস্তিষ্ক প্রতিফলিত শব্দ থেকে বুঝতে পারে সামনের বাধাটা কত দূরে।

শব্দ ছুঁড়ে দেওয়ার কতক্ষণ পর সেটা আবার কানে ফিরে আসে তার ওপর নির্ভর করেই বাদুড় বাধা ও খোলা পথের নিশানা ঠিক করতে পারে। বাদুড়ের মস্তিষ্ক এখানে সূক্ষ্ম কম্পিউটারের মতো কাজ করে। কারণ সামনের বাধার দূরত্ব কত সেটা বুঝতে অবশ্যই শব্দের বেগ ব্যবহার করতে হয়। বাদুড়ের মস্তিষ্ক সেটা জানে। জানে, মুহূর্তের মধ্যে শব্দের বেগ, দূরত্ব আর সময়ের মধ্যে সঠিক অঙ্ক কষে সঠিক নিশানা ঠিক করতে। আর এভাবেই বাদুড় রাতের বেলা শব্দ ও শ্রবণশক্তির সাহায্যে চলাফেরা করে।

বাদুড় কি মানুষের জন্য উপকারি?

বাদুড় এর উপকারিতা, অপকারিতা দুই ই রয়েছে। বাদুড় উদ্ভিদের পরাগায়নে সাহায্য করে। আবার ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে মানুষের উপকার করে। বাদুড়ের মল সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
অন্যদিকে বাদুড় নানা ভাইরাসও ছড়ায়। যেমন র‍্যাবিস। এছাড়া ধারনা করা হয় করোনা ভাইরাস এর উৎপত্তি বাদুড় থেকে।

কল্পকথায় বাদুড়

ল্যাটিন আমেরিকায় এক প্রকার বাদুড় আছে যা প্রাণীদের রক্তচুষে খায়। এই রক্তচোষা বাদুড় থেকে অনুপ্রাণীত হয়ে ব্রাম স্টোকার লেখেন তার কালজয়ী হরর উপন্যাস “ড্রাকুলা”। এছাড়াও হলিউডের অনেক চলচ্চিত্রও এই ভ্যাম্পায়ার বাদুড়দের দ্বারা অনুপ্রাণীত।

আজ এই পর্যন্তই। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

3 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No