আমি দেখেছি কালের পরিক্রমায় বাস্তবতার এক দুষ্কর ঘাত।
পড়েছি জীবনের এক বিচিত্র ধারাপাত।
এখানে জীবন ফুটপাতে ঘোরে , বিকিয়ে চলে স্বপ্নের অলিগলি,
এখানেই সব ভালবাসা প্রেম দিয়ে যায় অঞ্জলী।
বড় বিচিত্র এ জীবনের রুপ বদলায় এই বাংলার পথে এসে,
এখানে কেউবা কুড়ায় মমতা তাহাদের ভালবেসে।
বিত্তের ব্যবধানে বেড়েছে কতনা সভ্যতা আর স্বপ্নের কারখানা,
যাহারা ঘুমায় অচেতন হয়ে চেতনা কি তার জানা?
দামি বিছানা ফ্লোর পার্টিশান
দখল করেছে সভ্যতা ঘেরা জীবনের সব মায়া,
দারিদ্রতার হাতছানিতে স্বপ্নের আলো ছায়া।
এই কর্দমা ডোবা নালা ক্ষেত গ্রামীন জীবন কত,
যুগ যুগ ধরে চলিতেছে আজও তাহারাও অবরত।
নগর জীবনে ব্যস্ততা হাজারও ক্লান্তিতে চলে দেহ,
নিদারুন সব জীবনের গতি দেখেনা তো আর কেহ।
ভাবনার অন্তরালে!
দেখেছি সেদিন পুরনো স্মৃতিতে এসে,
কে যেন আমায় ডাকিতেছে ভবে সতেজ প্রকৃতি বেশে।
মৃত্তিকা মায়া বোঝেনা যেজন
দেখেনা তো ঐ সাগরে ছড়ানো ঢেউ,
সে তো দূর্বল প্রতিটি ধাপেতে দূর্বল ঐ জীবনের অংকেও।
থাকিত যদি বা ভোগেতেই সব সুখ?
আসিতোনা তব ত্যাগের মহিমা আমাদের সম্মুখ।
অনাহারি কেহ কাদিলে ক্ষুধায় অন্ন কি তার জোটে!
সমাজের ঐ বিত্তেরা সব খেয়ে নেয় চেটেপুটে।
এইতো আমার বাস্তব ছবি কবিতা হইয়া চলে,
দুঃখের ভেলায় নোঙ্গর টানে সে অঞ্চলে অঞ্চলে।
আজও ওঠে সেই প্রভাতে সূর্য শৈশব করে খেলা,
বিত্তেরা সব নিচেতে তাকিয়া করে যায় অবহেলা।
বিক্ষোভ দেখি রাজপথে শুধু
নিশিথে বিলাসী চন্দ্রটা আজও হাসে!
দুঃখের রাজ্যে নিরলস সেই মানুষটা কেন কাশে!
খাটিতে খাটিতে জীবন করিল পার !
ছিল যে তাহারও মা বাবা আর ভাই বোন নিয়া সুখময় সংসার।
ত্যাগ নাকি বড় মহিমায় ভরা জীবন কি দিল তারে,
অর্ধ বেলায় ক্ষুধা পেটে নিয়া থাকিত সে অনাহারে।
ত্যাগের সাগরে ডুব দিয়া কত শত
স্বপ্ন ছিনিয়া আনিত সে সংসারে,
অবশেষে সেই নির্মমতার পরিহাস আহা
ঘুরাইল দ্বারে দ্বারে।
শরীরে নাইকো শক্তি তাহার কিভাবে খাটিবে আর,
এই বয়সে কি যায় কি নেওয়া জীবনের সেই ভার।
নিরুপাই আজ রক্ত কনিকা শিরা উপশিরা গুলো,
স্বপ্ন তাহার বদলা লইয়া উড়াইল চোখে ধুলো।
বৃথা সংশয় কাটে নাকো ঘোর অস্থির আজ লাগে,
জাতনায় ভরা বাস্তবতায় স্মৃতিগুলো কেন জাগে।
এ ধরনী দিয়েছে যাহারে উজার করিয়া সব,
তাহারেই দেখি করিতা নতুন পন্থাকে উদ্ভব।
মিছে মায়া ভবে রঙিন দুনিয়া আপন কেহই নয়,
তবু কেন দেখি মানুষের মাঝে হারাবার এত ভয়।
করিয়া চাকুরি নিত্য বাজারে সওদা করিয়া ঘরে
ফিরিল সে বাবু হাসিতে হাসিতে কতইনা সমাদরে ।
এই তো নিরেট পৃথিবীর খেলা অগোছালো সব জাল,
ধনীর ঘরেতে মার্সিডিজ আছে গরিবেরা জঞ্জাল।
আহারে গরীব জন্মান্তরে কাদে আজও নিরবতা,
তোমাতে আমাতে বন্দুর পথ মিথ্যা সে সখ্যতা।
নির্মমতার আঘাতে হানিয়া সুখেরা নিত্য হাসে,
দুঃখের জালিকা সর্বদা দেখি গরীবের চোখে ভাসে।
কোথা সে স্বপ্নপূরী
মিথ্যে নাটক রচিয়া তুমিও করিতেছ বাহাদূরী।
আমি আজও বসে থাকি প্রহরীর ন্যয় তোমায় ধরিব বলে,
তুমি তো আজও ঘুরিতেছ কত জনতার অঞ্চলে।
ভাবিয়া আমার নেই কোন কাজ অহেতুক পাগলামি,
এই পৃথিবীতে অর্থটা যেন সবার থেকে দামি।
অর্থের লোভে বাবাকে ফেলিয়া সন্তান গেল ভুলে,
জামানার এই চাকচিক্য আজ রাখিয়াছে মশগুলে।
বৃদ্ধাশ্রমে কাদিতেছে বাবা মুখেতে শেমাই পুরি,
সন্তান তার হয়ে গেছে বড় নেই তাহাদের জুড়ি।
কালের ছোবলে পড়িল সে পিতা কি দোষ তাহার ছিল,
শিল্পের ঘরে কেন আজ তার বিভিষীকা অঙ্কিল?
প্রশ্নটা আজ রেখে যেতে চাই নতুন মুখের কাছে,
ভবিষ্যতে দেখবে তাহারা অধিকার তাদেরও আছে।
জানিনা কেমন হবে সে পৃথিবী কে করিবে কারে হেলা,
নাকি সে বাবারা পড়ে রবে নিয়ে এক বক অবহেলা।